১১:৪৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৩ জুলাই ২০২৫

মুর্শিদাবাদ-কাহিনী (পর্ব-৩১৯)

গঙ্গাগোবিন্দ নবদ্বীপ প্রভৃতি স্থানের পণ্ডিতদিগকে বৃত্তি প্রদান করিয়া উৎসাহিত করিতেন, এবং তাঁহাদিগের গৃহাদির সংস্কার ও ছাত্রগণের আহারপরিচ্ছদের ব্যয়ের জন্য অজস্র অর্থ প্রদান করিতেন। পণ্ডিত প্রতিপালন ব্যতীত দেবসেবায় তাঁহার যথেষ্ট ভক্তি ছিল। তিনি নদীয়ার নিকট রামচন্দ্রপুরে শ্রীগোবিন্দ, গোপীনাথ, কৃষ্ণজী ও মদনমোহনজীর প্রতিষ্ঠা করিয়া, তাঁহাদের সেবার জন্য অনেক দেবোত্তর সম্পত্তি নির্দেশ করিয়া যান।

কান্দীতে তাঁহার ভ্রাতা রাধাকান্ত নিজ নামে রাধাবল্লভমূর্ত্তি প্রতিষ্ঠা করিয়াছিলেন। তাঁহার মৃত্যুর পরে গঙ্গা-গোবিন্দ রাধাবল্লভের সেবায়ত নিযুক্ত হন। গঙ্গাগোবিন্দ রাধাবল্লভের ঘাটা নির্মাণ করিয়া, অভ্যাগতগণের বাসের উত্তম সুবন্দোবস্ত করেন। রাধাবল্লভের নিত্যভোগ অতি সমারোহপূর্ব্বক সম্পন্ন হইয়া থাকে।

যদিও এক্ষণে তাহার কিছু কিছু হ্রাস হইয়াছে, তথাপি কান্দীর রাধাবল্লভের যেরূপ সেবার’ বন্দোবস্ত আছে, মুর্শিদাবাদের কোন দেবভবনে সেরূপ বন্দোবস্ত নাই। রাধাবল্লভের রাসযাত্রা মহাসমারোহে সম্পন্ন হয়।

সেই সময়ে, কান্দীতে উৎসব দেখিবার জন্ম নানাস্থান হইতে বহুলোকের সমাগম হইয়া থাকে। গঙ্গাগোবিন্দ যদিও অসদুপায়ে অর্থোপার্জন করিয়াছিলেন, তথাপি তৎসমুদায় সৎকার্য্যে ব্যয় করিয়া বঙ্গদেশে নিজ নামকে কিয়ৎপরিমাণে প্রশংসনীয় কারয়া গিয়াছেন। তঁহার মৃত্যুর পর প্রাণকৃষ্ণ সম্পত্তির আরও উন্নতিসাধন করেন। রাধাকান্ত অপুত্রক হওয়ায় প্রাণকৃষ্ণকে আপনার উত্তরাধিকারী মনোনীত করিয়া যান।

প্রাণকৃষ্ণ পিতার ও। জ্যেষ্ঠতাত উভয়ের সম্পত্তি প্রাপ্ত হইয়া, অত্যন্ত ধনী হইয়া উঠেন। হেষ্টিংস ও গঙ্গাগোবিন্দের সঙ্গে তিনি কাৰ্য্য হইতে অবসর গ্রহণ করেন নাই। আজিয়াবাদ বন্দোবস্তের সময় তিনি একজন প্রধান কর্মচারীর পদে নিযুক্ত হইয়া, অনেক অর্থ উপার্জন করিয়াছিলেন।’

 

 

 

জনপ্রিয় সংবাদ

মুর্শিদাবাদ-কাহিনী (পর্ব-৩১৯)

১১:০০:০৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫

গঙ্গাগোবিন্দ নবদ্বীপ প্রভৃতি স্থানের পণ্ডিতদিগকে বৃত্তি প্রদান করিয়া উৎসাহিত করিতেন, এবং তাঁহাদিগের গৃহাদির সংস্কার ও ছাত্রগণের আহারপরিচ্ছদের ব্যয়ের জন্য অজস্র অর্থ প্রদান করিতেন। পণ্ডিত প্রতিপালন ব্যতীত দেবসেবায় তাঁহার যথেষ্ট ভক্তি ছিল। তিনি নদীয়ার নিকট রামচন্দ্রপুরে শ্রীগোবিন্দ, গোপীনাথ, কৃষ্ণজী ও মদনমোহনজীর প্রতিষ্ঠা করিয়া, তাঁহাদের সেবার জন্য অনেক দেবোত্তর সম্পত্তি নির্দেশ করিয়া যান।

কান্দীতে তাঁহার ভ্রাতা রাধাকান্ত নিজ নামে রাধাবল্লভমূর্ত্তি প্রতিষ্ঠা করিয়াছিলেন। তাঁহার মৃত্যুর পরে গঙ্গা-গোবিন্দ রাধাবল্লভের সেবায়ত নিযুক্ত হন। গঙ্গাগোবিন্দ রাধাবল্লভের ঘাটা নির্মাণ করিয়া, অভ্যাগতগণের বাসের উত্তম সুবন্দোবস্ত করেন। রাধাবল্লভের নিত্যভোগ অতি সমারোহপূর্ব্বক সম্পন্ন হইয়া থাকে।

যদিও এক্ষণে তাহার কিছু কিছু হ্রাস হইয়াছে, তথাপি কান্দীর রাধাবল্লভের যেরূপ সেবার’ বন্দোবস্ত আছে, মুর্শিদাবাদের কোন দেবভবনে সেরূপ বন্দোবস্ত নাই। রাধাবল্লভের রাসযাত্রা মহাসমারোহে সম্পন্ন হয়।

সেই সময়ে, কান্দীতে উৎসব দেখিবার জন্ম নানাস্থান হইতে বহুলোকের সমাগম হইয়া থাকে। গঙ্গাগোবিন্দ যদিও অসদুপায়ে অর্থোপার্জন করিয়াছিলেন, তথাপি তৎসমুদায় সৎকার্য্যে ব্যয় করিয়া বঙ্গদেশে নিজ নামকে কিয়ৎপরিমাণে প্রশংসনীয় কারয়া গিয়াছেন। তঁহার মৃত্যুর পর প্রাণকৃষ্ণ সম্পত্তির আরও উন্নতিসাধন করেন। রাধাকান্ত অপুত্রক হওয়ায় প্রাণকৃষ্ণকে আপনার উত্তরাধিকারী মনোনীত করিয়া যান।

প্রাণকৃষ্ণ পিতার ও। জ্যেষ্ঠতাত উভয়ের সম্পত্তি প্রাপ্ত হইয়া, অত্যন্ত ধনী হইয়া উঠেন। হেষ্টিংস ও গঙ্গাগোবিন্দের সঙ্গে তিনি কাৰ্য্য হইতে অবসর গ্রহণ করেন নাই। আজিয়াবাদ বন্দোবস্তের সময় তিনি একজন প্রধান কর্মচারীর পদে নিযুক্ত হইয়া, অনেক অর্থ উপার্জন করিয়াছিলেন।’