ষোলো শতাব্দীতে বু-চেন-ইন্ লিখিত ‘বাঁদর’ নামক বিখ্যাত কৌতুকাবহ আখ্যায়িকায় তিনি এক ঐন্দ্রজালিক শক্তিসম্পন্ন সাধু পর্যটকরূপে অঙ্কিত হয়েছেন।
তাঁর জাপানী শ্রমণ শিষ্যরাই জাপানে যোগাচার দর্শনের প্রবর্তন করেন।
সম্রাট থাইচুও তাঁকে একটি মঠের অধ্যক্ষ নিযুক্ত করেছিলেন। এখানে তিনি প্রত্যহ নিয়মিতভাবে চার ঘণ্টা অধ্যাপনা করতেন। তাছাড়া মঠের নিয়মানুবর্তিতা রক্ষা করা আর তাঁর নিজের অনুবাদ কাজ তো ছিলই। সাম্রাজ্যের বহু রাজন্য, মন্ত্রী ও অন্যান্য বিশিষ্ট লোক তাঁর বক্তৃতা ও উপদেশ শুনতে আসতেন।
৬৫৪ খৃস্টাব্দে মধ্যভারতের মহাবোধি সঙ্ঘারাম, সম্ভবতঃ নালন্দার জনকয়েক ভিক্ষু সঙ্ঘারামের পক্ষ থেকে তাঁকে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করতে তাঁর কাছে এসেছিলেন। হিউ এনচাঙ ‘এই সম্মানের জন্যে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন আর অনুরোধ করেন যে তিনি সিন্ধুনদী পার হওয়ার সময়ে যে অনুলিপিগুলি নদীতে নষ্ট হয়েছিল সে অনুলিপি আবার লিখে যেন তাঁকে পাঠানো হয়।
পর্যটনকালে পর্বত অতিক্রম করবার সময়ে তাঁর একটি ব্যাধি হয়। এ ব্যাধি তাঁর কখনো সারে নি, যদিও সম্রাটের প্রেরিত চিকিৎসকদের ঔষধে কিছু কমেছিল।
৬৬৪ খৃস্টাব্দের পৌষ মাসে একদিন মৃত্যু আসন্ন জেনে চক্ষু মুদ্রিত করে তিনি নিশ্চলভাবে শয়ন করলেন। কিছু পরে মৈত্রেয় দেবের নামে একটি স্তব আবৃত্তি করলেন। এর পর থেকে তাঁর অবস্থা ক্রমশঃ খারাপ হতে হতে ত্রয়োদশীর দিন তাঁর মৃত্যু হয়।
হিউএনচাঙ (ও তাঁর ভ্রমণ কাহিনী) চীন দেশে পৌরাণিক উপকথার বস্তু হয়ে গিয়েছেন। ষোলো শতাব্দীতে বু-চেন-ইন্ লিখিত ‘বাঁদর’ নামক বিখ্যাত কৌতুকাবহ আখ্যায়িকায় তিনি এক ঐন্দ্রজালিক শক্তিসম্পন্ন সাধু পর্যটকরূপে অঙ্কিত হয়েছেন।
চীন দেশের অনেক বৌদ্ধ মন্দিরে তাঁর মূর্তি রাখা আছে আর তিনি অহংরূপে পূজিত হন। অরেলস্টাইন মধ্য এশিয়ায় পর্যটন কালে হিউ এনচাঙের মূর্তি সম্বলিত এক প্রাচীন বৌদ্ধ মন্দির দেখেছিলেন।
(চলবে)