০৯:৩৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫
বাংলাদেশ ব্যাংকে অগ্নি নিরাপত্তা জোরদার, ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হবিগঞ্জের মাধবপুরে বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে সংখ্যালঘু পরিবারের জমি দখলের অভিযোগ নতুন ড্রোন মডেলে নিষেধাজ্ঞা আরও কড়াকড়ি যুক্তরাষ্ট্রে, তালিকায় ডিজেআইসহ সব বিদেশি ড্রোন জবি কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচন: নারী-বান্ধব ক্যাম্পাস গড়তে জেসিডির ১৩ দফা ইশতেহার ক্রীড়াপ্রেমী প্রকৌশলী মাসুদ হাসান জামালীর ইন্তেকাল বাংলাদেশ–ভারত সম্পর্কে রাজনীতির ঊর্ধ্বে বাণিজ্যকে গুরুত্ব দিচ্ছে ঢাকা: ড. সালেহউদ্দিন হাতিয়ায় চর দখল নিয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ, প্রাণ গেল পাঁচজনের রমজান সামনে রেখে ভারত ও পাকিস্তান থেকে এক লাখ টন চাল আমদানির অনুমোদন সরকারের শুরুর উত্থান ধরে রাখতে পারল না ডিএসই, চট্টগ্রাম বাজারে ঊর্ধ্বগতি অব্যাহত অনলাইন ভ্যাট সেবায় নতুন পরিচয়, আইভাসের নাম বদলে ইভ্যাট সিস্টেম চালু এনবিআরের

পুরান ঢাকার অতীত দিনের কথা ( কিস্তি- ৫৭)

হাকিম যেসব খাবারের উল্লেখ করেছেন তার একটি বড় অংশ চালু ছিল উনিশ ও বিশ শতকের প্রথম কয়েক দশক পর্যন্ত।

ঢাকাই খাবার

ঢাকা: স্মৃতি বিস্মৃতির নগরীর তিন খণ্ডে ঢাকার খাবার বলে পরিচিত বেশকিছু খাবার সম্পর্কিত ভুক্তি আছে। এ খণ্ডে আমার মনে হচ্ছে পুরো বিষয়টি নিয়ে একটি ভুক্তি থাকা দরকার। যাতে ঢাকার নিজস্ব খাবার কোনটি, কোনটি ফিউশন সে সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যেতে পারে। পূর্বে উল্লেখিত খাবার সম্পর্কিত ভুক্তিগুলি এখানে উল্লেখ করা হয়নি। তবে, কোনো খাবার সম্পর্কিত নতুন তথ্য পেলে সেটি নতুন করে লেখা হয়েছে।

ঢাকাই খাবার হিসেবে বিভিন্ন প্রবন্ধে যেসব খাবারের বর্ণনা করা হয় তার সঙ্গে আমি একমত নই। যা প্রচলিত ঢাকাই খাবার হিসেবে তার উৎপত্তি ঢাকায় নয় এবং শ্রেণিভেদে সেসব খাবার আমজনতার খাবার তাও নয়। ঐ হিসেবে সব খাবারই ফিউশন বা মিশ্রণ। অর্থাৎ বহিরাগতদের খাবারে ক্রমে ক্রমে যুক্ত হয়েছে স্থানীয় উপাদান। তবে, কোনো খাবার যদি অঞ্চলভেদে বৈশিষ্ট্য অর্জন করে, তখন তাকে সে অঞ্চলের খাবার বলে ওহ্নিত করা যেতে পারে। সে পরিপ্রেক্ষিতেই ‘মাতার খাবার’ বিবেচনা করতে হবে।

মালাই কোফতা 

এ চুক্তির ভিত্তি হাকিম হাবিবুর রহমানের ঢাকার খাবার বিষয়ক কয়েকটি প্রবন্ধ। হাকিম যেসব খাবারের উল্লেখ করেছেন তার একটি বড় অংশ চালু ছিল উনিশ ও বিশ শতকের প্রথম কয়েক দশক পর্যন্ত।

প্রচলিত সব প্রবন্ধে যেসব ঢাকাই খাবারের কথা উল্লেখ করা হয় তার অধিকাংশই মুঘল আমল থেকে প্রচলিত। সময়ের কালে তার অনেকগুলো বিলুপ্ত, কিছু এখনও টিকে আছে। মুঘল খাবার যা ছিল মোটামুটি রইসদের, তার প্রধান ভিত্তি ছিল মাস। পোলাও, কাবাব, পরোটা সবইতো বাইরের খাবার। পরবর্তীকালে পর্তুগীজরা ফল এবং সবজির আমদানি করে এবং ইরানিরা কিছু নতুন উপাদান নিয়ে আসে তখন মুঘল খাবারের সঙ্গে তা যুক্ত হয়।

ঢাকাই মাছের কাবাব 

এভাবে মিশ্রণ কিছুটা বৈচিত্রা মানে। মুঘল আমলের যে খাবার এখানে চালু হয় এবং পরবর্তীকালের মিশ্রণে ও তারপর পাচকদের উদ্রবনী মিলে কিছু খাবার নতুনত্ব আনে। এর কিন্তু কিছুকে ঢাকাই খাবার বা পুরনো খাবারে ঢাকাইয়া বৈচিত্রা আছে বলে উল্লেখ করতে পারি।

সব দেশের মুসলমানদের মধ্যে পোলাও এর প্রচলন ছিল। ঢাকার বাইরে যে পোলাওয়ের প্রচলন ছিল তাকে বলা হতো ‘পাশানো পোলাও’। এ পোলাওয়ের রান্নার প্রক্রিয়া ছিল এরকম- প্রথমে চাল গলানো হতো, চাল অর্ধেক গললে বা হাকিমের ভাষায় ‘কম্বি’ থেকে যেত তখন অন্যান্য উপাদান ঢেলে তাতে দম দেয়া হতো। ঢাকার বাবুর্চিরা এ প্রথা গ্রহণ করেননি। তারা গ্রহণ করেন ‘লাপেটা’ প্রক্রিয়া। হাকিমের ভাষায় এ প্রক্রিয়াটি হলো- ‘পোলাও আপন স্বকীয়তার প্রকৃতিতে পোলাও হয়ে যায়’।

(চলবে)

পুরান ঢাকার অতীত দিনের কথা ( কিস্তি- ৫৬)

পুরান ঢাকার অতীত দিনের কথা ( কিস্তি- ৫৬)

 

 

জনপ্রিয় সংবাদ

বাংলাদেশ ব্যাংকে অগ্নি নিরাপত্তা জোরদার, ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর

পুরান ঢাকার অতীত দিনের কথা ( কিস্তি- ৫৭)

০৭:০০:১০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৬ অগাস্ট ২০২৫

হাকিম যেসব খাবারের উল্লেখ করেছেন তার একটি বড় অংশ চালু ছিল উনিশ ও বিশ শতকের প্রথম কয়েক দশক পর্যন্ত।

ঢাকাই খাবার

ঢাকা: স্মৃতি বিস্মৃতির নগরীর তিন খণ্ডে ঢাকার খাবার বলে পরিচিত বেশকিছু খাবার সম্পর্কিত ভুক্তি আছে। এ খণ্ডে আমার মনে হচ্ছে পুরো বিষয়টি নিয়ে একটি ভুক্তি থাকা দরকার। যাতে ঢাকার নিজস্ব খাবার কোনটি, কোনটি ফিউশন সে সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যেতে পারে। পূর্বে উল্লেখিত খাবার সম্পর্কিত ভুক্তিগুলি এখানে উল্লেখ করা হয়নি। তবে, কোনো খাবার সম্পর্কিত নতুন তথ্য পেলে সেটি নতুন করে লেখা হয়েছে।

ঢাকাই খাবার হিসেবে বিভিন্ন প্রবন্ধে যেসব খাবারের বর্ণনা করা হয় তার সঙ্গে আমি একমত নই। যা প্রচলিত ঢাকাই খাবার হিসেবে তার উৎপত্তি ঢাকায় নয় এবং শ্রেণিভেদে সেসব খাবার আমজনতার খাবার তাও নয়। ঐ হিসেবে সব খাবারই ফিউশন বা মিশ্রণ। অর্থাৎ বহিরাগতদের খাবারে ক্রমে ক্রমে যুক্ত হয়েছে স্থানীয় উপাদান। তবে, কোনো খাবার যদি অঞ্চলভেদে বৈশিষ্ট্য অর্জন করে, তখন তাকে সে অঞ্চলের খাবার বলে ওহ্নিত করা যেতে পারে। সে পরিপ্রেক্ষিতেই ‘মাতার খাবার’ বিবেচনা করতে হবে।

মালাই কোফতা 

এ চুক্তির ভিত্তি হাকিম হাবিবুর রহমানের ঢাকার খাবার বিষয়ক কয়েকটি প্রবন্ধ। হাকিম যেসব খাবারের উল্লেখ করেছেন তার একটি বড় অংশ চালু ছিল উনিশ ও বিশ শতকের প্রথম কয়েক দশক পর্যন্ত।

প্রচলিত সব প্রবন্ধে যেসব ঢাকাই খাবারের কথা উল্লেখ করা হয় তার অধিকাংশই মুঘল আমল থেকে প্রচলিত। সময়ের কালে তার অনেকগুলো বিলুপ্ত, কিছু এখনও টিকে আছে। মুঘল খাবার যা ছিল মোটামুটি রইসদের, তার প্রধান ভিত্তি ছিল মাস। পোলাও, কাবাব, পরোটা সবইতো বাইরের খাবার। পরবর্তীকালে পর্তুগীজরা ফল এবং সবজির আমদানি করে এবং ইরানিরা কিছু নতুন উপাদান নিয়ে আসে তখন মুঘল খাবারের সঙ্গে তা যুক্ত হয়।

ঢাকাই মাছের কাবাব 

এভাবে মিশ্রণ কিছুটা বৈচিত্রা মানে। মুঘল আমলের যে খাবার এখানে চালু হয় এবং পরবর্তীকালের মিশ্রণে ও তারপর পাচকদের উদ্রবনী মিলে কিছু খাবার নতুনত্ব আনে। এর কিন্তু কিছুকে ঢাকাই খাবার বা পুরনো খাবারে ঢাকাইয়া বৈচিত্রা আছে বলে উল্লেখ করতে পারি।

সব দেশের মুসলমানদের মধ্যে পোলাও এর প্রচলন ছিল। ঢাকার বাইরে যে পোলাওয়ের প্রচলন ছিল তাকে বলা হতো ‘পাশানো পোলাও’। এ পোলাওয়ের রান্নার প্রক্রিয়া ছিল এরকম- প্রথমে চাল গলানো হতো, চাল অর্ধেক গললে বা হাকিমের ভাষায় ‘কম্বি’ থেকে যেত তখন অন্যান্য উপাদান ঢেলে তাতে দম দেয়া হতো। ঢাকার বাবুর্চিরা এ প্রথা গ্রহণ করেননি। তারা গ্রহণ করেন ‘লাপেটা’ প্রক্রিয়া। হাকিমের ভাষায় এ প্রক্রিয়াটি হলো- ‘পোলাও আপন স্বকীয়তার প্রকৃতিতে পোলাও হয়ে যায়’।

(চলবে)

পুরান ঢাকার অতীত দিনের কথা ( কিস্তি- ৫৬)

পুরান ঢাকার অতীত দিনের কথা ( কিস্তি- ৫৬)