শূন্য এবং ঋণরাশি গুণ করলে শূন্য হয়। শূন্য এবং ধনরাশি গুণ করলে শূন্য হয়। শূন্যকে শূন্য দিয়ে গুণ করলে শূন্য হয়।
বাক্শালীর পাণ্ডুলিপিতে স্থানীয়মান সহ দশমিক পদ্ধতিতে সংখ্যা প্রকাশ করতে দেখা যায়। যেমন
![]()
বরাহমিহিরের সমসাময়িক বিখ্যাত জৈন গণিতবিদ জিন ভদ্রগণি বৃহৎক্ষেত্রসমাসে শূন্য সহ বড় বড় সংখ্যার উল্লেখ করেছেন। যেমন তিনি একজায়গায় ২২৪৪০০০,-০০০,০০০ এবং ৩২০০৪০০০,০০০,০০ সংখ্যাগুলির উল্লেখ করেছেন। তর্থাদিগমসূত্রে বলা হয়েছে পরিধিকে পঁচিশ হাজার দিয়ে গুণ করলে ৭৯০৫৬৭৫০০০ পাওয়া যাবে।
তিন গব্যূতি (gabyuti) কে পঁচিশ সহস্র দিয়ে গুণ করলে ৭৫০০০ হয়।
সপ্তম শতাব্দীর এবং তৎপরবর্তী কালে শূন্য এবং শূক্তের সাহায্যে গাণিতিক প্রকরণের (mathematical operation) জন্য প্রত্যেকটি ভারতীয় গণিতগ্রন্থে একটি করে পরিচ্ছেদ বা অর্থ পরিচ্ছদে রাখা হয়েছিল। সাধারণত এ ব্যাপারে ব্রহ্মগুপ্ত, শ্রীধরাচার্য, মহাবীর, দ্বিতীয় আর্যভট, দ্বিতীয় ভাস্করাচার্য প্রমুখের নাম করতে হয়।
এঁদের গ্রন্থে দেখা যায় নিম্নলিখিত সংখ্যাগুলি-
খচতুষ্টয়রদবেদা-৪৩২০০০০ শূন্যানি সপ্তরদবেদা-৪৩২০০০,০০০০
পাংচাংরবাণি গুণরামপংচসপ্তগরেষবঃ শশিনিঃ ৫৭৭৫৩৩০০০০০
শূক্তের সাহায্যে যোগ এবং বিয়োগ নিয়ে আলোচনা করেছেন ব্রহ্মগুপ্ত। এ’র লেখাকে আধুনিক গণিতের ভাষায় রূপ দিলে এইরকম হয়± α ± = 0 = α , 0 + ± α = ±α, 0±0 = 0 ,0± α= ±α
ব্রহ্মগুপ্ত এ ব্যাপারে সরাসরি বলেছেন (ব্রাহ্মস্ফুট সিদ্ধান্ত, ১৮ অধ্যায়)
ধনয়োর্ধ নয়ণমৃণয়োর্ধনর্ণয়োরস্তরং সমৈক্যং থম্।
ঋণমৈক্যং চ ধনম্নণধনশূন্ডয়োঃ শূন্যয়োঃ শূক্তম্।
অর্থাৎ ধনাত্মক রাশিগুলির যোগ ধনাত্মক, ঋণাত্মক রাশিগুলির যোগ ঋণাত্মক।
ধনাত্মক এবং ঋণাত্মক একই রাশি যোগ করলে শূন্য হবে। ঋনাত্মক রাশির সঙ্গে শূক্ত যোগ করলে ঋণাত্মক হবে। ধনাত্মক রাশির সঙ্গে শূন্য যোগ করলে ধনাত্মক হবে। দুটি শূন্য যোগ করলে শূক্ত হবে ও এছাড়াও ব্রহ্মগুপ্ত বলেছেন 0×(± 0) = 0 (± a) × 0 = 0 0× 0 = 0, 0 = 0 0 ² = 0³=0 =0, √0 = 0 1/3 = 0
তিনি বলেছেন (ব্রাহ্মস্ফুট সিদ্ধান্ত ১৮ অধ্যায়)
শূন্যবিহীনম্নণমৃণং ধনং ধনং ভবতি শূন্যমাকাশম্।
সোধ্যং যদা ধনমৃণাদৃণং ধনাদ্বা তদা ক্ষেপ্যম।
অন্য জায়গায় বলেছেন:
শূন্যর্ণয়োঃ খধনয়োঃ খশূন্যয়োবা বধঃ শূন্যম।
অর্থাৎ শূন্য এবং ঋণরাশি গুণ করলে শূন্য হয়। শূন্য এবং ধনরাশি গুণ করলে শূন্য হয়। শূন্যকে শূন্য দিয়ে গুণ করলে শূন্য হয়।
এই শ্লোকের পরেই ব্রহ্মগুপ্ত বলেছেন
ধনভক্তং ধনম্নণহৃতমৃণং ধনং ভবতি থং খভক্তংগম্
ভক্তযুণেন ধনয়ণং ধনেন হৃতমুণমৃণং ভবতি।
খোদ্ধৃতমৃণং ধনং বা তচ্ছেদং গমুণধনবিভক্তং বা
ঋণধনয়োর্বর্গঃ স্বং ‘গং খস্ত্য পদং কৃতির্যত তত।
অর্থাৎ ধনকে ধন দিয়ে এবং ঋণকে ঋণ দিয়ে ভাগ দিলে ধন হবে। শূন্যকে শূন্য দিয়ে ভাগ দিলে শূন্য হবে। ধন বা ঋণকে শূন্য দিয়ে ভাগ দিলে ধন বা ঋণ শূন্য ছেদ হবে। শূন্যকে ধন বা ঋণ রাশি দিয়ে ভাগ দিলে শূন্য হবে। শূন্যের বর্গ শূন্য, শূন্যের ঘন শূন্য, শূন্যের বর্গমূল শূন্য এবং শূন্যের ঘনমূল শূন্য হবে।
(চলবে)
প্রদীপ কুমার মজুমদার 



















