এক জায়গায় বলা হয়েছে “একটি সংখ্যা আছে তার সমস্তটার সঙ্গে এক সপ্তমাংশ যোগ দিলে উনিশ হয়।
বীজগণিতের উৎপত্তি কোথায়
বর্তমান বীজগণিতের প্রতীক পদ্ধতি বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে এত বেশী পরিচিত হয়ে পড়েছে যে এর অন্তনিহিত চিন্তাধারা অতীতে কেন এত শ্লথ গতিতে বিকাশলাভ করেছিল তা ভাবতেও অবাক লাগে। বীজগণিত বলতে যদি ax²+bx+c=0 সমীকরণটি বা এই ধরণের সমীকরণের সমাধান বোঝায় তাহলে এর ইতিহাস শুরু সপ্তদশ শতাব্দীর প্রারম্ভে। এর চেয়ে কিছু কম সর্ত আরোপ করলে আমরা বলতে পারি-এর ইতিহাস শুরু তৃতীয় শতাব্দীতে।
তবে প্রতীক চিহ্নাদি এবং অন্যান্য কিছু সর্ত এড়িয়ে গিয়ে বলতে পারা যায়, বীজগণিতচর্চার সূচনা হয়েছিল ২২০০ খ্রীষ্টপূর্বাব্দে। অন্ততপক্ষে কয়েকজন পাশ্চাত্য গণিত ঐতিহাসিকদের এই মত। বীজগণিতের ইতিহাসকে মোটামুটি তিনভাগে ভাগ করা যায়। (ক) খ্রীষ্টপূর্ব যুগ, (খ) প্রথম শতাব্দী থেকে ত্রয়োদশ শতাব্দী পর্যন্ত ও (গ) ত্রয়োদশ থেকে বিংশ শতাব্দী পর্যন্ত।
প্রথম যুগে মিশর, ব্যাবিলন, চীন, ভারতবর্ষ ও গ্রীসে বীজগণিতচর্চা শুরু হয়েছিল। তবে এদের মধ্যে কে প্রথম শুরু করেছিল তা বলা কঠিন। দ্বিতীয় যুগে আরব, ভারতবর্ষ চীন প্রভৃতি দেশে বীজগণিত চর্চা হত এবং তৃতীয় যুগে ইউরোপে এর ব্যাপক বিস্তার হয়।
মস্কো পেপিরাস’ এবং রাইও গেপিরাস থেকে জানা যায় যে, আনুমানিক ২২০০ খ্রীষ্টপূর্বে তৃতীয় আমেন-এম হেটের রাজত্বকালে মিশরীয়রা গণিতের উপর একটি গ্রন্থ রচনা করেন। (তখনকার দিনে হয় মাটির’ চাকতির উপর না হয় কোন চামড়া বা বার্চ পাতার উপর লেখা হত এবং এগুলিই গ্রন্থ হিসাবে স্বীকৃতি পেয়েছিল) এটি আবার আ-আসার রে’র রাজত্বকালে (১৬৫০ খ্রীঃ পূঃ) আহমীস নকল করেন। এই রাইও পেপিরাসে বীজগণিতের নানা উদাহরণ দেখতে পাওয়া যায়। যেমন এক জায়গায় বলা হয়েছে “একটি সংখ্যা আছে তার সমস্তটার সঙ্গে এক সপ্তমাংশ যোগ দিলে উনিশ হয়। সংখ্যাটি কত? আধুনিক বীজগণিতের ভাষায় প্রকাশ করলে দাঁড়ায় x+x/7= 19.
(চলবে)
প্রদীপ কুমার মজুমদার 



















