০৪:১৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫
নোভোএয়ারের ডিজিটাল সাফল্য: এক্সেলেন্স ইন বিজনেস ২০২৫ পুরস্কার অর্জন দুবাইয়ে সোনার ঝলক, ইতিহাস গড়ে ২২ ক্যারেট ছুঁল ৫০০ দিরহাম বাংলাদেশের কূটনৈতিক মিশনে হামলা নিয়ে ভারতের কাছে গভীর উদ্বেগ জানাল ঢাকা পদ্মা ব্যাংকের একশ তেত্রিশতম পর্ষদ সভা অনুষ্ঠিত ঘরের মাটিতে যুদ্ধের প্রস্তুতি: ব্রিটেনের প্রতিরক্ষা পুনর্গঠনে ধীরগতি নিয়ে বাড়ছে উদ্বেগ চিপের স্বনির্ভরতার স্বপ্নে আমেরিকার লাল ফিতার বাধা অর্গান সঙ্গীতে ধ্যানের আমন্ত্রণ এলেন আরকব্রো ম্যানহাটনে ফিরছে বামিয়ান বুদ্ধ, ধ্বংসের স্মৃতি থেকে মানবতার নতুন প্রতীক ক্যামেরায় ধরা পড়ল মেরু ভালুকের বিরল দত্তক গল্প, প্রকৃতিতে নজিরবিহীন ঘটনা আগুনের ঘরে একা কুকুর, ধোঁয়া ভেদ করে মানবতার সাহসী উদ্ধার

পুরান ঢাকার অতীত দিনের কথা ( কিস্তি-৬৭)

মিয়া রবিউল্লাহ্ বটে ভগিনী জামাই। দোকানে থাকেন সেই পাবে তার ঠাঁই। চওকের পশ্চিমধারে কেতাব পট্টিতে। ঠিকানা বলিয়া ছিনু সবার খেদমতে।”

আমার পুস্তকালয়ে শিশু-সুপাঠ্য সরল ও বিশদ অর্থপুস্তক সকল বিক্রয়ার্থে প্রস্তুত আছে। বালকগণের যাহাতে অনায়াসে জ্ঞান লাভ হয়, অথচ আহৃত ব্যুৎপত্তির ব্যাঘাত না ঘটে, অর্থপুস্তকে সে বিষয়ের বিশেষ সতর্কতা গ্রহণ করা হইয়াছে, অন্যত্র এমন কতকগুলি অর্থপুস্তক প্রকাশিত হয়, সে সকল গিলিতে যাইয়া বালকদের ব্যুৎপত্তির ও রুচির অন্যথা ঘটিয়া থাকে, তাই বলি সাবধান।

সাবধান! ফলদ্বারা তাহার পরিচয় লইবেন। শতাধিক খণ্ড গ্রহণ করিলে বিশেষরূপে কমিশন দেওয়া যাইবে। অপর যাবতীয় পাঠ্য ও অন্যান্য পুস্তক আমার দোকানে প্রাপ্তব্য।” দ্বারকানাথ পাল রচিত ২৩টি পাঠ্যপুস্তকের খোঁজ পেয়েছি। তাঁর দোকানে বই ছাড়াও তিনি মনোহারি দ্রব্যও বিক্রি করতেন-“আমার পুস্তকালয়ে ইংরেজী বাঙ্গালা স্কুলের পাঠ্যপুস্তক, নাটক, যাত্রাবহি, বটতলার বহি এবং নিম্নলিখিত পুস্তক সকল পাওয়া যায়। স্থানীয় রীত্যানুসারে কমিশন দেওয়া গিয়া থাকে। এতজিন্ন নানা প্রকার মনিহারি জিনিষ সুলভ মূল্যে বিক্রয় হয়। নগদ মূল্য পাইলে বিদেশী গ্রাহকগণের নিকট পাঠাইতে পারি।” (১৮৭৮)

এছাড়া, আরও কয়েকজন মালিক ছিলেন যারা ছিলেন পাঠ্যপুস্তক রচয়িতা। কেতাবপট্টির চরিত্র ছিল আলাদা। পুঁথি ও ধর্মীয় পুস্তক বিক্রয়ের কেন্দ্র ছিল কেতাবপট্টি। অধ্যাপক আবদুল কাইউম এর ওপর বিস্তারিত লিখেছেন। তাঁর মতে, “লক্ষণীয় যে, চকবাজারের কেতাবপট্টি শুধু চকবাজারেই সীমাবদ্ধ ছিল না। আশেপাশের মোগলটুলি, বড় কাটারা, ছোট কাটরা, চম্পাতলি, ইমামগঞ্জ প্রভৃতি স্থানেও বিস্তৃত ছিল।” পুঁথিকারদের মধ্যে হায়দার জান ও মুন্সি আলিমুদ্দিনের দোকান ছিল চকবাজারে, ‘গোলজার’ পুঁথিতে মুন্সী হায়দার জান নিজের দোকানের পরিচয় দিয়েছিলেন-

“এই কেতাবের যার দরকার হইবে। নিজ দোকানে মেরা আসিলে পাইবে। মিয়া রবিউল্লাহ্ বটে ভগিনী জামাই। দোকানে থাকেন সেই পাবে তার ঠাঁই। চওকের পশ্চিমধারে কেতাব পট্টিতে। ঠিকানা বলিয়া ছিনু সবার খেদমতে।”

উনিশ শতকের শেষার্ধে ঢাকা শহরের বইয়ের দোকানের সংখ্যা কত ছিল তা জানা যায়নি। তবে, বিভিন্ন তথ্যের ভিত্তিতে অনুমান করে নিতে পারি এ সংখ্যা ঘাটের বেশি ছিল না এবং এখানকার মতো তখনও অধিকাংশ দোকানের আয়ের প্রধান অংশটি আসতো পাঠ্য ও পাঠ্য সহায়িকা বিক্রি করে।’

(চলবে)

পুরান ঢাকার অতীত দিনের কথা ( কিস্তি-৬৬)

পুরান ঢাকার অতীত দিনের কথা ( কিস্তি-৬৬)

 

 

জনপ্রিয় সংবাদ

নোভোএয়ারের ডিজিটাল সাফল্য: এক্সেলেন্স ইন বিজনেস ২০২৫ পুরস্কার অর্জন

পুরান ঢাকার অতীত দিনের কথা ( কিস্তি-৬৭)

০৭:০০:৪৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৬ অগাস্ট ২০২৫

মিয়া রবিউল্লাহ্ বটে ভগিনী জামাই। দোকানে থাকেন সেই পাবে তার ঠাঁই। চওকের পশ্চিমধারে কেতাব পট্টিতে। ঠিকানা বলিয়া ছিনু সবার খেদমতে।”

আমার পুস্তকালয়ে শিশু-সুপাঠ্য সরল ও বিশদ অর্থপুস্তক সকল বিক্রয়ার্থে প্রস্তুত আছে। বালকগণের যাহাতে অনায়াসে জ্ঞান লাভ হয়, অথচ আহৃত ব্যুৎপত্তির ব্যাঘাত না ঘটে, অর্থপুস্তকে সে বিষয়ের বিশেষ সতর্কতা গ্রহণ করা হইয়াছে, অন্যত্র এমন কতকগুলি অর্থপুস্তক প্রকাশিত হয়, সে সকল গিলিতে যাইয়া বালকদের ব্যুৎপত্তির ও রুচির অন্যথা ঘটিয়া থাকে, তাই বলি সাবধান।

সাবধান! ফলদ্বারা তাহার পরিচয় লইবেন। শতাধিক খণ্ড গ্রহণ করিলে বিশেষরূপে কমিশন দেওয়া যাইবে। অপর যাবতীয় পাঠ্য ও অন্যান্য পুস্তক আমার দোকানে প্রাপ্তব্য।” দ্বারকানাথ পাল রচিত ২৩টি পাঠ্যপুস্তকের খোঁজ পেয়েছি। তাঁর দোকানে বই ছাড়াও তিনি মনোহারি দ্রব্যও বিক্রি করতেন-“আমার পুস্তকালয়ে ইংরেজী বাঙ্গালা স্কুলের পাঠ্যপুস্তক, নাটক, যাত্রাবহি, বটতলার বহি এবং নিম্নলিখিত পুস্তক সকল পাওয়া যায়। স্থানীয় রীত্যানুসারে কমিশন দেওয়া গিয়া থাকে। এতজিন্ন নানা প্রকার মনিহারি জিনিষ সুলভ মূল্যে বিক্রয় হয়। নগদ মূল্য পাইলে বিদেশী গ্রাহকগণের নিকট পাঠাইতে পারি।” (১৮৭৮)

এছাড়া, আরও কয়েকজন মালিক ছিলেন যারা ছিলেন পাঠ্যপুস্তক রচয়িতা। কেতাবপট্টির চরিত্র ছিল আলাদা। পুঁথি ও ধর্মীয় পুস্তক বিক্রয়ের কেন্দ্র ছিল কেতাবপট্টি। অধ্যাপক আবদুল কাইউম এর ওপর বিস্তারিত লিখেছেন। তাঁর মতে, “লক্ষণীয় যে, চকবাজারের কেতাবপট্টি শুধু চকবাজারেই সীমাবদ্ধ ছিল না। আশেপাশের মোগলটুলি, বড় কাটারা, ছোট কাটরা, চম্পাতলি, ইমামগঞ্জ প্রভৃতি স্থানেও বিস্তৃত ছিল।” পুঁথিকারদের মধ্যে হায়দার জান ও মুন্সি আলিমুদ্দিনের দোকান ছিল চকবাজারে, ‘গোলজার’ পুঁথিতে মুন্সী হায়দার জান নিজের দোকানের পরিচয় দিয়েছিলেন-

“এই কেতাবের যার দরকার হইবে। নিজ দোকানে মেরা আসিলে পাইবে। মিয়া রবিউল্লাহ্ বটে ভগিনী জামাই। দোকানে থাকেন সেই পাবে তার ঠাঁই। চওকের পশ্চিমধারে কেতাব পট্টিতে। ঠিকানা বলিয়া ছিনু সবার খেদমতে।”

উনিশ শতকের শেষার্ধে ঢাকা শহরের বইয়ের দোকানের সংখ্যা কত ছিল তা জানা যায়নি। তবে, বিভিন্ন তথ্যের ভিত্তিতে অনুমান করে নিতে পারি এ সংখ্যা ঘাটের বেশি ছিল না এবং এখানকার মতো তখনও অধিকাংশ দোকানের আয়ের প্রধান অংশটি আসতো পাঠ্য ও পাঠ্য সহায়িকা বিক্রি করে।’

(চলবে)

পুরান ঢাকার অতীত দিনের কথা ( কিস্তি-৬৬)

পুরান ঢাকার অতীত দিনের কথা ( কিস্তি-৬৬)