০৮:১৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৭ নভেম্বর ২০২৫
জাহানারা আলমের অভিযোগে তদন্ত কমিটি গঠন করবে বিসিবি সংবিধান সংশোধন অবশ্যই জনগণের মতামতের ভিত্তিতে হতে হবে: ড. কামাল টাইফুন কালমায়েগির ধ্বংসের মাঝেই ব্রাজিলে শুরু হলো কপ৩০ পূর্ব সাগরে উত্তর কোরিয়ার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ, প্রতিবেশীদের উদ্বেগ লক্ষ্মীপুরে আগুনে পুড়ে গেছে ১৫টি দোকান ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় অটোরিকশাচালকসহ দুইজন নিহত আন সি-ইয়ং-এর অসামান্য ব্যাডমিন্টন রেকর্ড, ঐতিহাসিক সিজনে ৯৫% জয় হারানোর লক্ষ্য চট্টগ্রামে দুই পক্ষের গোলাগুলিতে আহত প্রতিবন্ধী অটোরিকশাচালক পাঁচ ইসলামী ব্যাংক একীভূতকরণে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষার সুযোগ নেই: বাংলাদেশ ব্যাংক গলাচিপায় বিএনপি-গণঅধিকার সংঘর্ষে আহত ১৫ জন

পুরান ঢাকার অতীত দিনের কথা ( কিস্তি-৬৭)

মিয়া রবিউল্লাহ্ বটে ভগিনী জামাই। দোকানে থাকেন সেই পাবে তার ঠাঁই। চওকের পশ্চিমধারে কেতাব পট্টিতে। ঠিকানা বলিয়া ছিনু সবার খেদমতে।”

আমার পুস্তকালয়ে শিশু-সুপাঠ্য সরল ও বিশদ অর্থপুস্তক সকল বিক্রয়ার্থে প্রস্তুত আছে। বালকগণের যাহাতে অনায়াসে জ্ঞান লাভ হয়, অথচ আহৃত ব্যুৎপত্তির ব্যাঘাত না ঘটে, অর্থপুস্তকে সে বিষয়ের বিশেষ সতর্কতা গ্রহণ করা হইয়াছে, অন্যত্র এমন কতকগুলি অর্থপুস্তক প্রকাশিত হয়, সে সকল গিলিতে যাইয়া বালকদের ব্যুৎপত্তির ও রুচির অন্যথা ঘটিয়া থাকে, তাই বলি সাবধান।

সাবধান! ফলদ্বারা তাহার পরিচয় লইবেন। শতাধিক খণ্ড গ্রহণ করিলে বিশেষরূপে কমিশন দেওয়া যাইবে। অপর যাবতীয় পাঠ্য ও অন্যান্য পুস্তক আমার দোকানে প্রাপ্তব্য।” দ্বারকানাথ পাল রচিত ২৩টি পাঠ্যপুস্তকের খোঁজ পেয়েছি। তাঁর দোকানে বই ছাড়াও তিনি মনোহারি দ্রব্যও বিক্রি করতেন-“আমার পুস্তকালয়ে ইংরেজী বাঙ্গালা স্কুলের পাঠ্যপুস্তক, নাটক, যাত্রাবহি, বটতলার বহি এবং নিম্নলিখিত পুস্তক সকল পাওয়া যায়। স্থানীয় রীত্যানুসারে কমিশন দেওয়া গিয়া থাকে। এতজিন্ন নানা প্রকার মনিহারি জিনিষ সুলভ মূল্যে বিক্রয় হয়। নগদ মূল্য পাইলে বিদেশী গ্রাহকগণের নিকট পাঠাইতে পারি।” (১৮৭৮)

এছাড়া, আরও কয়েকজন মালিক ছিলেন যারা ছিলেন পাঠ্যপুস্তক রচয়িতা। কেতাবপট্টির চরিত্র ছিল আলাদা। পুঁথি ও ধর্মীয় পুস্তক বিক্রয়ের কেন্দ্র ছিল কেতাবপট্টি। অধ্যাপক আবদুল কাইউম এর ওপর বিস্তারিত লিখেছেন। তাঁর মতে, “লক্ষণীয় যে, চকবাজারের কেতাবপট্টি শুধু চকবাজারেই সীমাবদ্ধ ছিল না। আশেপাশের মোগলটুলি, বড় কাটারা, ছোট কাটরা, চম্পাতলি, ইমামগঞ্জ প্রভৃতি স্থানেও বিস্তৃত ছিল।” পুঁথিকারদের মধ্যে হায়দার জান ও মুন্সি আলিমুদ্দিনের দোকান ছিল চকবাজারে, ‘গোলজার’ পুঁথিতে মুন্সী হায়দার জান নিজের দোকানের পরিচয় দিয়েছিলেন-

“এই কেতাবের যার দরকার হইবে। নিজ দোকানে মেরা আসিলে পাইবে। মিয়া রবিউল্লাহ্ বটে ভগিনী জামাই। দোকানে থাকেন সেই পাবে তার ঠাঁই। চওকের পশ্চিমধারে কেতাব পট্টিতে। ঠিকানা বলিয়া ছিনু সবার খেদমতে।”

উনিশ শতকের শেষার্ধে ঢাকা শহরের বইয়ের দোকানের সংখ্যা কত ছিল তা জানা যায়নি। তবে, বিভিন্ন তথ্যের ভিত্তিতে অনুমান করে নিতে পারি এ সংখ্যা ঘাটের বেশি ছিল না এবং এখানকার মতো তখনও অধিকাংশ দোকানের আয়ের প্রধান অংশটি আসতো পাঠ্য ও পাঠ্য সহায়িকা বিক্রি করে।’

(চলবে)

পুরান ঢাকার অতীত দিনের কথা ( কিস্তি-৬৬)

পুরান ঢাকার অতীত দিনের কথা ( কিস্তি-৬৬)

 

 

জনপ্রিয় সংবাদ

জাহানারা আলমের অভিযোগে তদন্ত কমিটি গঠন করবে বিসিবি

পুরান ঢাকার অতীত দিনের কথা ( কিস্তি-৬৭)

০৭:০০:৪৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৬ অগাস্ট ২০২৫

মিয়া রবিউল্লাহ্ বটে ভগিনী জামাই। দোকানে থাকেন সেই পাবে তার ঠাঁই। চওকের পশ্চিমধারে কেতাব পট্টিতে। ঠিকানা বলিয়া ছিনু সবার খেদমতে।”

আমার পুস্তকালয়ে শিশু-সুপাঠ্য সরল ও বিশদ অর্থপুস্তক সকল বিক্রয়ার্থে প্রস্তুত আছে। বালকগণের যাহাতে অনায়াসে জ্ঞান লাভ হয়, অথচ আহৃত ব্যুৎপত্তির ব্যাঘাত না ঘটে, অর্থপুস্তকে সে বিষয়ের বিশেষ সতর্কতা গ্রহণ করা হইয়াছে, অন্যত্র এমন কতকগুলি অর্থপুস্তক প্রকাশিত হয়, সে সকল গিলিতে যাইয়া বালকদের ব্যুৎপত্তির ও রুচির অন্যথা ঘটিয়া থাকে, তাই বলি সাবধান।

সাবধান! ফলদ্বারা তাহার পরিচয় লইবেন। শতাধিক খণ্ড গ্রহণ করিলে বিশেষরূপে কমিশন দেওয়া যাইবে। অপর যাবতীয় পাঠ্য ও অন্যান্য পুস্তক আমার দোকানে প্রাপ্তব্য।” দ্বারকানাথ পাল রচিত ২৩টি পাঠ্যপুস্তকের খোঁজ পেয়েছি। তাঁর দোকানে বই ছাড়াও তিনি মনোহারি দ্রব্যও বিক্রি করতেন-“আমার পুস্তকালয়ে ইংরেজী বাঙ্গালা স্কুলের পাঠ্যপুস্তক, নাটক, যাত্রাবহি, বটতলার বহি এবং নিম্নলিখিত পুস্তক সকল পাওয়া যায়। স্থানীয় রীত্যানুসারে কমিশন দেওয়া গিয়া থাকে। এতজিন্ন নানা প্রকার মনিহারি জিনিষ সুলভ মূল্যে বিক্রয় হয়। নগদ মূল্য পাইলে বিদেশী গ্রাহকগণের নিকট পাঠাইতে পারি।” (১৮৭৮)

এছাড়া, আরও কয়েকজন মালিক ছিলেন যারা ছিলেন পাঠ্যপুস্তক রচয়িতা। কেতাবপট্টির চরিত্র ছিল আলাদা। পুঁথি ও ধর্মীয় পুস্তক বিক্রয়ের কেন্দ্র ছিল কেতাবপট্টি। অধ্যাপক আবদুল কাইউম এর ওপর বিস্তারিত লিখেছেন। তাঁর মতে, “লক্ষণীয় যে, চকবাজারের কেতাবপট্টি শুধু চকবাজারেই সীমাবদ্ধ ছিল না। আশেপাশের মোগলটুলি, বড় কাটারা, ছোট কাটরা, চম্পাতলি, ইমামগঞ্জ প্রভৃতি স্থানেও বিস্তৃত ছিল।” পুঁথিকারদের মধ্যে হায়দার জান ও মুন্সি আলিমুদ্দিনের দোকান ছিল চকবাজারে, ‘গোলজার’ পুঁথিতে মুন্সী হায়দার জান নিজের দোকানের পরিচয় দিয়েছিলেন-

“এই কেতাবের যার দরকার হইবে। নিজ দোকানে মেরা আসিলে পাইবে। মিয়া রবিউল্লাহ্ বটে ভগিনী জামাই। দোকানে থাকেন সেই পাবে তার ঠাঁই। চওকের পশ্চিমধারে কেতাব পট্টিতে। ঠিকানা বলিয়া ছিনু সবার খেদমতে।”

উনিশ শতকের শেষার্ধে ঢাকা শহরের বইয়ের দোকানের সংখ্যা কত ছিল তা জানা যায়নি। তবে, বিভিন্ন তথ্যের ভিত্তিতে অনুমান করে নিতে পারি এ সংখ্যা ঘাটের বেশি ছিল না এবং এখানকার মতো তখনও অধিকাংশ দোকানের আয়ের প্রধান অংশটি আসতো পাঠ্য ও পাঠ্য সহায়িকা বিক্রি করে।’

(চলবে)

পুরান ঢাকার অতীত দিনের কথা ( কিস্তি-৬৬)

পুরান ঢাকার অতীত দিনের কথা ( কিস্তি-৬৬)