০৪:৩৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৫
মাদারল্যান্ড কখনো ভোলে না’ বীরকে —তাইওয়ানে গোপন মিশনে শহীদ উউ শিকে স্মরণ করছে চীন বার্নার্ড জুলিয়ানের করুণ জীবন— যার উত্থান ও পতন সমান নাটকীয় ১৯২৯—যে বছরে ভেঙে পড়েছিল আমেরিকার স্বপ্ন নগদহীন পেমেন্ট ভালো—কিন্তু সেটি ব্যর্থ হলে সমস্যা মুর্শিদাবাদ-কাহিনী (পর্ব-৩৫৭) হংকং বাজারে সানি হেভি ইন্ডাস্ট্রির শেয়ার বিক্রি শুরু বাংলাদেশ-থাইল্যান্ড বাণিজ্য সহযোগিতা জোরদারে বিএফটিআই ও আইটিডি’র মধ্যে সমঝোতা স্মারক রাজনৈতিক বিভাজন নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ: গণভোটের সিদ্ধান্ত নেবেন প্রধান উপদেষ্টা- আসিফ নজরুল সৎপুত্রের হাতে আহত নারী ঢাকায় মারা গেলেন ঝিনাইদহে নবগঙ্গা নদীতে দুই শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যু

আমেরিকাবিরোধী ভাবমূর্তি দেখলে ভিসা প্রত্যাখ্যান করতে পারে যুক্তরাষ্ট্র

নতুন নীতির ঘোষণা
যুক্তরাষ্ট্রে ভিসা আবেদনকারীদের ক্ষেত্রে নতুন এক কঠোর নীতি কার্যকর করতে যাচ্ছে ইউএস সিটিজেনশিপ অ্যান্ড ইমিগ্রেশন সার্ভিসেস (ইউএসসিআইএস)। ঘোষণায় বলা হয়েছে, কেউ যদি আমেরিকাবিরোধী মতাদর্শ সমর্থন বা প্রচার করে থাকেন, তা ভিসা অনুমোদনে বড় নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। এই নীতি শিক্ষার্থী ভিসা, কর্ম ভিসা, গ্রিন কার্ড কিংবা নাগরিকত্বের সব ধরনের আবেদনের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য হবে।

নীতির মূল বক্তব্য
ইউএসসিআইএস মুখপাত্র ম্যাথিউ ট্রেজার এক বিবৃতিতে বলেন,
“যারা আমেরিকাকে ঘৃণা করে এবং আমেরিকাবিরোধী আদর্শ প্রচার করে, তারা যেন কখনোই এ দেশের সুবিধা না পায়। অভিবাসন একটি সুযোগ, এটি কারও জন্মগত অধিকার নয়। আমরা কঠোরভাবে এমন নীতি কার্যকর করব যাতে আমেরিকাবিরোধী চিন্তাধারার লোকদের শনাক্ত ও প্রতিরোধ করা যায়।”

নীতিতে বলা হয়েছে, কর্মকর্তারা আবেদনকারীদের পূর্ববর্তী কর্মকাণ্ড পরীক্ষা করবেন — তারা সন্ত্রাসী সংগঠন বা আমেরিকাবিরোধী, ইহুদিবিরোধী আদর্শের প্রতি সমর্থন, প্রচার বা সংশ্লিষ্টতা দেখিয়েছেন কি না।

ট্রাম্প প্রশাসনের সাম্প্রতিক পদক্ষেপগুলো
এটি ট্রাম্প প্রশাসনের ধারাবাহিক নীতিরই একটি অংশ।

এ বছরের এপ্রিলে ইউএসসিআইএস ঘোষণা দেয় যে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী ও গ্রিন কার্ড আবেদনকারীদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম পর্যবেক্ষণ করা হবে। ইহুদিবিরোধী বক্তব্য বা কার্যকলাপ পাওয়া গেলে তাদের ভিসা প্রত্যাখ্যান করা হবে।

জুনের মধ্যভাগে জানানো হয়, এফ-ভিসা ও এম-ভিসা (আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী) এবং জে-ভিসা (এক্সচেঞ্জ ভিজিটর) সাক্ষাৎকার আবার শুরু হবে, তবে শর্ত রাখা হয় যে আবেদনকারীদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম অ্যাকাউন্ট অবশ্যই উন্মুক্ত থাকতে হবে।

সম্প্রতি নাগরিকত্ব পাওয়ার ক্ষেত্রে ‘গুড মোরাল ক্যারেক্টার’-এর সংজ্ঞাও পরিবর্তন করেছে ইউএসসিআইএস। এখন কর্মকর্তারা আবেদনকারীর সামগ্রিক আচরণ দেখবেন — যেমন অপরাধ, মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালানো বা বকেয়া ট্যাক্সের মতো নেতিবাচক দিকের পাশাপাশি শিক্ষা ও চাকরির ইতিহাসও বিবেচনা করবেন।

আইনজীবীদের উদ্বেগ
অভিবাসন আইনজীবীরা বলছেন, ভিসা, গ্রিন কার্ড ও নাগরিকত্ব এখন ক্রমশ ব্যক্তিগত কর্মকর্তার বিবেচনার ওপর নির্ভরশীল হয়ে যাচ্ছে।

নিউইয়র্কভিত্তিক অভিবাসন আইনজীবী সাইরাস ডি. মেহতা প্রশ্ন তুলেছেন — ইউএসসিআইএস কীভাবে ‘আমেরিকাবিরোধী’ শব্দটি সংজ্ঞায়িত করবে? তিনি বলেন,
“কোনো প্রশাসনকে সমালোচনা করা কখনোই আমেরিকাবিরোধী নয়। বরং সমালোচনা ও মতভেদই গণতন্ত্রের শক্তি, যা দেশকে আত্মসমালোচনার সুযোগ দেয় এবং এগিয়ে যেতে সহায়তা করে।”

আরেকজন আইনজীবী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিদ্রুপ করে লেখেন,
“জাতীয় সঙ্গীত চলাকালে যদি যথেষ্ট জোরে হাততালি না দেন, তবে গ্রিন কার্ড বাতিল হতে পারে! এখন থেকে অভিবাসীদের র‍্যাঞ্চ ড্রেসিং পছন্দ করার ভান করাও বাধ্যতামূলক।”

উপসংহার
নতুন নীতির ফলে যুক্তরাষ্ট্রে ভিসা ও নাগরিকত্ব প্রক্রিয়া আরও জটিল ও অনিশ্চিত হয়ে উঠতে পারে। সমালোচকরা মনে করছেন, এটি মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে সীমিত করবে এবং কর্মকর্তাদের ব্যক্তিগত দৃষ্টিভঙ্গির কারণে অভিবাসন প্রক্রিয়া আরও অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়বে।

জনপ্রিয় সংবাদ

মাদারল্যান্ড কখনো ভোলে না’ বীরকে —তাইওয়ানে গোপন মিশনে শহীদ উউ শিকে স্মরণ করছে চীন

আমেরিকাবিরোধী ভাবমূর্তি দেখলে ভিসা প্রত্যাখ্যান করতে পারে যুক্তরাষ্ট্র

০৩:১৯:৪৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ অগাস্ট ২০২৫

নতুন নীতির ঘোষণা
যুক্তরাষ্ট্রে ভিসা আবেদনকারীদের ক্ষেত্রে নতুন এক কঠোর নীতি কার্যকর করতে যাচ্ছে ইউএস সিটিজেনশিপ অ্যান্ড ইমিগ্রেশন সার্ভিসেস (ইউএসসিআইএস)। ঘোষণায় বলা হয়েছে, কেউ যদি আমেরিকাবিরোধী মতাদর্শ সমর্থন বা প্রচার করে থাকেন, তা ভিসা অনুমোদনে বড় নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। এই নীতি শিক্ষার্থী ভিসা, কর্ম ভিসা, গ্রিন কার্ড কিংবা নাগরিকত্বের সব ধরনের আবেদনের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য হবে।

নীতির মূল বক্তব্য
ইউএসসিআইএস মুখপাত্র ম্যাথিউ ট্রেজার এক বিবৃতিতে বলেন,
“যারা আমেরিকাকে ঘৃণা করে এবং আমেরিকাবিরোধী আদর্শ প্রচার করে, তারা যেন কখনোই এ দেশের সুবিধা না পায়। অভিবাসন একটি সুযোগ, এটি কারও জন্মগত অধিকার নয়। আমরা কঠোরভাবে এমন নীতি কার্যকর করব যাতে আমেরিকাবিরোধী চিন্তাধারার লোকদের শনাক্ত ও প্রতিরোধ করা যায়।”

নীতিতে বলা হয়েছে, কর্মকর্তারা আবেদনকারীদের পূর্ববর্তী কর্মকাণ্ড পরীক্ষা করবেন — তারা সন্ত্রাসী সংগঠন বা আমেরিকাবিরোধী, ইহুদিবিরোধী আদর্শের প্রতি সমর্থন, প্রচার বা সংশ্লিষ্টতা দেখিয়েছেন কি না।

ট্রাম্প প্রশাসনের সাম্প্রতিক পদক্ষেপগুলো
এটি ট্রাম্প প্রশাসনের ধারাবাহিক নীতিরই একটি অংশ।

এ বছরের এপ্রিলে ইউএসসিআইএস ঘোষণা দেয় যে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী ও গ্রিন কার্ড আবেদনকারীদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম পর্যবেক্ষণ করা হবে। ইহুদিবিরোধী বক্তব্য বা কার্যকলাপ পাওয়া গেলে তাদের ভিসা প্রত্যাখ্যান করা হবে।

জুনের মধ্যভাগে জানানো হয়, এফ-ভিসা ও এম-ভিসা (আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী) এবং জে-ভিসা (এক্সচেঞ্জ ভিজিটর) সাক্ষাৎকার আবার শুরু হবে, তবে শর্ত রাখা হয় যে আবেদনকারীদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম অ্যাকাউন্ট অবশ্যই উন্মুক্ত থাকতে হবে।

সম্প্রতি নাগরিকত্ব পাওয়ার ক্ষেত্রে ‘গুড মোরাল ক্যারেক্টার’-এর সংজ্ঞাও পরিবর্তন করেছে ইউএসসিআইএস। এখন কর্মকর্তারা আবেদনকারীর সামগ্রিক আচরণ দেখবেন — যেমন অপরাধ, মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালানো বা বকেয়া ট্যাক্সের মতো নেতিবাচক দিকের পাশাপাশি শিক্ষা ও চাকরির ইতিহাসও বিবেচনা করবেন।

আইনজীবীদের উদ্বেগ
অভিবাসন আইনজীবীরা বলছেন, ভিসা, গ্রিন কার্ড ও নাগরিকত্ব এখন ক্রমশ ব্যক্তিগত কর্মকর্তার বিবেচনার ওপর নির্ভরশীল হয়ে যাচ্ছে।

নিউইয়র্কভিত্তিক অভিবাসন আইনজীবী সাইরাস ডি. মেহতা প্রশ্ন তুলেছেন — ইউএসসিআইএস কীভাবে ‘আমেরিকাবিরোধী’ শব্দটি সংজ্ঞায়িত করবে? তিনি বলেন,
“কোনো প্রশাসনকে সমালোচনা করা কখনোই আমেরিকাবিরোধী নয়। বরং সমালোচনা ও মতভেদই গণতন্ত্রের শক্তি, যা দেশকে আত্মসমালোচনার সুযোগ দেয় এবং এগিয়ে যেতে সহায়তা করে।”

আরেকজন আইনজীবী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিদ্রুপ করে লেখেন,
“জাতীয় সঙ্গীত চলাকালে যদি যথেষ্ট জোরে হাততালি না দেন, তবে গ্রিন কার্ড বাতিল হতে পারে! এখন থেকে অভিবাসীদের র‍্যাঞ্চ ড্রেসিং পছন্দ করার ভান করাও বাধ্যতামূলক।”

উপসংহার
নতুন নীতির ফলে যুক্তরাষ্ট্রে ভিসা ও নাগরিকত্ব প্রক্রিয়া আরও জটিল ও অনিশ্চিত হয়ে উঠতে পারে। সমালোচকরা মনে করছেন, এটি মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে সীমিত করবে এবং কর্মকর্তাদের ব্যক্তিগত দৃষ্টিভঙ্গির কারণে অভিবাসন প্রক্রিয়া আরও অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়বে।