দ্বিতীয় ভাস্করাচার্য আরও বলেছেন “ধ্যক্তমব্যক্তবীজং” অর্থাৎ ব্যক্তগণিতের বীজ অব্যক্ত গণিত।
ভারতীয় বীজগণিতে সংজ্ঞা, পরিভাষা ইত্যাদি
ইংরাজীতে যাকে আলজাত্রা বলা হয় ভারতীয় গণিতশাস্ত্রে সেটি বীজগণিত নামে অভিহিত হয়ে থাকে। অবশ্য পণ্ডিতেরা অনুমান করেন বীজগণিত নামটি প্রথম ব্যবহার করেন পৃথুদ্রকস্বামী। ব্রহ্মগুপ্ত বীজগণিতের নাম দেন কুট্টক গণিত বা কুট্টক। এ নামকরণের উৎস ছিল “কুট্টন” শব্দটি যার অর্থ চূর্ণন বা বিশ্লেষণ।
অবশ্য পরবর্তীকালে বীজগণিতকে অব্যক্ত গণিত বলা হয়েছে। মনে হয় এই নামটি সম্পর্কে ভারতীয়দের স্বচ্ছ ও সমাক ধারণার ফলেই উদ্ভুত হয়েছে। কারণ, সঠিক মান জানা নেই এমন রাশি নিয়ে কাজ করাই বীজগণিতের প্রধান বৈশিষ্ট্য। এখন প্রশ্ন হচ্ছে ভারতীয় গণিতশাস্ত্রে পরিষ্কারভাবে বীজগণিতের সংজ্ঞা দেওয়া আছে কি? হ্যাঁ নিশ্চয়ই আছে। এ সম্পর্কে দ্বিতীয় ভাস্করাচার্য বলেছেন-
বীজং মতবিবিধবর্ণ সহায়িনী হি
মন্দাববোধবিধয়ে বিবুধৈনিজান্তৈঃ
বিস্তারিতা গণকতামরসাংশুমন্তিয়া সৈব বীজগণিতাতাহ্বযতামুপেতা।
এখানে শ্লোক দুটির অর্থ হছে “বিবিধবর্ণ সাহায্যকারিণী বুদ্ধিই বীজগণিত। অল্পবুদ্ধিদের (মন্দবুদ্ধিদের) জন্ম পূর্বাচার্যগণ বলেছেন।………”
অবশ্য বীজগণিতের সংজ্ঞা এখানে অতটা পরিষ্কারভাবে না উল্লেখ থাকলেও দ্বিতীয় ভাস্করাচার্য পাটীগণিতের সঙ্গে পার্থক্য বোঝাতে গিয়ে এ সম্পর্কে ভালভাবে এবং স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছেন।
তিনি বলেছেন-
দ্বিবিধগণিতমুক্তং ব্যক্তমব্যক্তসংজ্ঞং
ব্যক্তং পাটীগণিতং অব্যক্তং বীজগণিতং।
অর্থাৎ গণিত দুই প্রকার ব্যক্ত এবং অব্যক্ত। পাটীগণিত ব্যক্ত গণিত এবং বীজগণিত অব্যক্ত গণিত। দ্বিতীয় ভাস্করাচার্য আরও বলেছেন “ধ্যক্তমব্যক্তবীজং” অর্থাৎ ব্যক্তগণিতের বীজ অব্যক্ত গণিত।
(চলবে)
প্রদীপ কুমার মজুমদার 



















