০৫:২৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫
উইন্ডসরের প্রাসাদে মেলানিয়া ট্রাম্পের রহস্যময় সাজ আফগান বিশ্ববিদ্যালয়ে নারীদের লেখা বই নিষিদ্ধ করল তালেবান জাপানের আনন্দময় “সাকে ট্রেন”-এ এক যাত্রা সফটব্যাংক ভিশন ফান্ডে বড় ধরনের ছাঁটাই। লক্ষ্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সৌদি- পাকিস্তান সামরিক প্যাক্ট ও দক্ষিণ এশিয়ায় প্রভাব এশিয়ার বিলিয়ন-ডলারের মুনকেক বাজারে নতুন ধারা: দুবাই চকলেট ও পিস্তাচিওর ছোঁয়া শিম্পাঞ্জিদের খাদ্যে অ্যালকোহলের উপস্থিতি ১৯৮৮ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের উত্তরাধিকার আজও মিয়ানমার পেরুর মরুভূমি থেকে আবিষ্কৃত নতুন নগরী: আমেরিকার ইতিহাস নতুনভাবে লেখা হচ্ছে চীনকে সমর্থন ও যুক্তরাষ্ট্রকে বার্তা দিল দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া

শিশুদের জন্য এক ঘন্টা ও বড়দের জন্য ২ ঘন্টার বেশি ইউ টিউব দেখা উচিত নয়

ডিজিটাল যুগে ইউটিউব অনেকের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশে পরিণত হয়েছে। বিনোদন, শিক্ষা, খবর, কিংবা নানা তথ্য জানতে মানুষ ঘন্টার পর ঘন্টা ইউটিউব ভিডিও দেখে। তবে বিশেষজ্ঞরা বারবার সতর্ক করেছেন যে দীর্ঘ সময় ইউটিউব বা যেকোনো স্ক্রিন দেখার অভ্যাস মানুষের মস্তিষ্ক, চোখ এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।

মস্তিষ্কের উপর প্রভাব

অনবরত ইউটিউব দেখা মানুষের মস্তিষ্কে একধরনের ডোপামিন আসক্তি তৈরি করে। প্রতিবার নতুন ভিডিওতে ক্লিক করলে মস্তিষ্ক আনন্দ অনুভব করে, ফলে বারবার ভিডিও দেখতে ইচ্ছে হয়। এভাবে দীর্ঘ সময় ধরে ইউটিউব দেখলে:

  • • মনোযোগের ক্ষমতা কমে যায়
  • • স্মৃতিশক্তি দুর্বল হয়
  • • মানসিক চাপ, উদ্বেগ ও অনিদ্রার সমস্যা বাড়ে
  • • শিশু ও কিশোরদের মধ্যে শিখনক্ষমতা ও সৃজনশীলতা হ্রাস পায়

চোখের উপর প্রভাব

স্ক্রিনের দিকে নিরবচ্ছিন্ন তাকিয়ে থাকার ফলে চোখে ডিজিটাল আই স্ট্রেন বা চক্ষু ক্লান্তি দেখা দেয়। এর ফলে:

  • • চোখ শুষ্ক হয়ে যায়
  • • মাথাব্যথা হয়
  • • চোখ লাল হওয়া ও ঝাপসা দেখার সমস্যা বাড়ে
  • • দীর্ঘমেয়াদে দৃষ্টিশক্তি দুর্বল হতে পারে

কতক্ষণ ইউটিউব দেখা নিরাপদ?

চিকিৎসকদের মতে, শিশু ও কিশোরদের জন্য দিনে সর্বোচ্চ ১ ঘণ্টা থেকে দেড় ঘণ্টা স্ক্রিন টাইম যথাযথ। প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে ২ থেকে ৩ ঘণ্টার বেশি নয়। তবে ধারাবাহিকভাবে না দেখে বিরতি নিয়ে ইউটিউব বা অন্যান্য ভিডিও কনটেন্ট দেখাই উত্তম।

কীভাবে প্রাকৃতিকভাবে দৃষ্টিশক্তি উন্নত করা যায় তা জানুন

চোখের সুরক্ষার জন্য প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা

১. ২০-২০-২০ নিয়ম: প্রতি ২০ মিনিট স্ক্রিন দেখার পর অন্তত ২০ সেকেন্ডের জন্য ২০ ফুট দূরের কোনো বস্তুর দিকে তাকানো উচিত।
২. অ্যান্টি-রিফ্লেক্টিভ (AR) বা ব্লু লাইট প্রটেকশন গ্লাস: এই ধরনের চশমা চোখে ক্ষতিকর নীল আলো কম প্রবেশ করতে দেয়, ফলে চোখের চাপ হ্রাস পায়।
৩. শিশু থেকে প্রবীণ সবার জন্য উপযোগী: বাজারে এখন শিশুদের জন্য বিশেষ ব্লু লাইট ব্লকার চশমা পাওয়া যায়। একইভাবে প্রাপ্তবয়স্ক ও বৃদ্ধদের জন্যও চশমা রয়েছে যা দৃষ্টি সুরক্ষা দেয়।
৪. পর্যাপ্ত আলোতে ভিডিও দেখা উচিত, অন্ধকার ঘরে স্ক্রিন ব্যবহার চোখের জন্য ক্ষতিকর।
৫. পর্যাপ্ত পানি পান এবং ভিটামিন এ-সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া চোখের স্বাস্থ্যের জন্য জরুরি।

ইউটিউব আমাদের তথ্য ও বিনোদনের অন্যতম প্রধান উৎস হলেও এর ব্যবহারকে নিয়ন্ত্রিত রাখা জরুরি। দীর্ঘ সময় ইউটিউব দেখলে মস্তিষ্ক ও চোখ উভয়ের উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে, যা শিশু থেকে প্রবীণ সবার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। তাই নিয়মিত বিরতি, সঠিক সময়সীমা, এবং ব্লু লাইট প্রটেকশন গ্লাস ব্যবহারের মাধ্যমে ইউটিউব ব্যবহারকে নিরাপদ রাখা সম্ভব।

বিশেষজ্ঞ মতামত

চিকিৎসকের দৃষ্টিভঙ্গি

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডা. মেহেদী হাসান বলেন, “দীর্ঘ সময় স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকলে চোখ শুকিয়ে যায় এবং অনেক সময় কর্নিয়ার ক্ষতি হতে পারে। ব্লু লাইট প্রটেকশন গ্লাস ব্যবহারে চোখ কিছুটা সুরক্ষিত থাকে, তবে সবচেয়ে জরুরি হলো স্ক্রিন ব্যবহারের সময়সীমা নিয়ন্ত্রণ করা।”

শিশু মনোবিজ্ঞানীর মতামত

শিশু মনোবিজ্ঞানী ডা. রুবিনা আক্তার বলেন, “শিশুদের দিনে এক ঘণ্টার বেশি স্ক্রিন টাইম অনুমোদন করা উচিত নয়। অতিরিক্ত ইউটিউব দেখা তাদের একাগ্রতা কমিয়ে দেয় এবং বাস্তব জীবনের সামাজিক যোগাযোগে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।”

প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞের মন্তব্য

আইটি বিশেষজ্ঞ মো. আরিফ হোসেন মনে করেন, “আজকের দিনে ইউটিউব জ্ঞানের ভাণ্ডার হলেও এটি ব্যবহারের ক্ষেত্রে পরিবার ও বিদ্যালয়কে সচেতন হতে হবে। প্রযুক্তি ব্যবহার নিয়ন্ত্রিত না হলে শিশু থেকে প্রবীণ—সবাই দীর্ঘমেয়াদে স্বাস্থ্যঝুঁকির মধ্যে পড়বে।”

সমাধানভিত্তিক পদক্ষেপ

পরিবারের ভূমিকা

  • • অভিভাবকদের উচিত শিশুদের স্ক্রিন টাইমের উপর নজরদারি করা।
  • • পরিবারে একসঙ্গে বসে টিভি বা ইউটিউব দেখার পরিবর্তে শিশুদের খেলাধুলা বা বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তোলা।

The Impact of Screen Time on Children's Education and Well-Being | Teaching Channel

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব

  • • বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের অতিরিক্ত স্ক্রিন ব্যবহার নিয়ে সচেতনতা ক্লাস চালু করা যেতে পারে।
  • • প্রযুক্তি শিক্ষাকে শুধু পাঠ্যক্রমে সীমাবদ্ধ না রেখে ব্যবহারবিধি শেখানো প্রয়োজন।

ব্যক্তিগত অভ্যাস পরিবর্তন

  • • ঘুমানোর আগে অন্তত ১ ঘণ্টা কোনো স্ক্রিন না দেখা।
  • • বাইরে সময় কাটানো, খেলাধুলা করা এবং শারীরিক কার্যকলাপ বাড়ানো।
  • • ইউটিউব দেখার সময় নির্দিষ্ট করে রাখা এবং অতিরিক্ত ভিডিও এড়িয়ে চলা।

উইন্ডসরের প্রাসাদে মেলানিয়া ট্রাম্পের রহস্যময় সাজ

শিশুদের জন্য এক ঘন্টা ও বড়দের জন্য ২ ঘন্টার বেশি ইউ টিউব দেখা উচিত নয়

০৫:৩৩:০৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ অগাস্ট ২০২৫

ডিজিটাল যুগে ইউটিউব অনেকের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশে পরিণত হয়েছে। বিনোদন, শিক্ষা, খবর, কিংবা নানা তথ্য জানতে মানুষ ঘন্টার পর ঘন্টা ইউটিউব ভিডিও দেখে। তবে বিশেষজ্ঞরা বারবার সতর্ক করেছেন যে দীর্ঘ সময় ইউটিউব বা যেকোনো স্ক্রিন দেখার অভ্যাস মানুষের মস্তিষ্ক, চোখ এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।

মস্তিষ্কের উপর প্রভাব

অনবরত ইউটিউব দেখা মানুষের মস্তিষ্কে একধরনের ডোপামিন আসক্তি তৈরি করে। প্রতিবার নতুন ভিডিওতে ক্লিক করলে মস্তিষ্ক আনন্দ অনুভব করে, ফলে বারবার ভিডিও দেখতে ইচ্ছে হয়। এভাবে দীর্ঘ সময় ধরে ইউটিউব দেখলে:

  • • মনোযোগের ক্ষমতা কমে যায়
  • • স্মৃতিশক্তি দুর্বল হয়
  • • মানসিক চাপ, উদ্বেগ ও অনিদ্রার সমস্যা বাড়ে
  • • শিশু ও কিশোরদের মধ্যে শিখনক্ষমতা ও সৃজনশীলতা হ্রাস পায়

চোখের উপর প্রভাব

স্ক্রিনের দিকে নিরবচ্ছিন্ন তাকিয়ে থাকার ফলে চোখে ডিজিটাল আই স্ট্রেন বা চক্ষু ক্লান্তি দেখা দেয়। এর ফলে:

  • • চোখ শুষ্ক হয়ে যায়
  • • মাথাব্যথা হয়
  • • চোখ লাল হওয়া ও ঝাপসা দেখার সমস্যা বাড়ে
  • • দীর্ঘমেয়াদে দৃষ্টিশক্তি দুর্বল হতে পারে

কতক্ষণ ইউটিউব দেখা নিরাপদ?

চিকিৎসকদের মতে, শিশু ও কিশোরদের জন্য দিনে সর্বোচ্চ ১ ঘণ্টা থেকে দেড় ঘণ্টা স্ক্রিন টাইম যথাযথ। প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে ২ থেকে ৩ ঘণ্টার বেশি নয়। তবে ধারাবাহিকভাবে না দেখে বিরতি নিয়ে ইউটিউব বা অন্যান্য ভিডিও কনটেন্ট দেখাই উত্তম।

কীভাবে প্রাকৃতিকভাবে দৃষ্টিশক্তি উন্নত করা যায় তা জানুন

চোখের সুরক্ষার জন্য প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা

১. ২০-২০-২০ নিয়ম: প্রতি ২০ মিনিট স্ক্রিন দেখার পর অন্তত ২০ সেকেন্ডের জন্য ২০ ফুট দূরের কোনো বস্তুর দিকে তাকানো উচিত।
২. অ্যান্টি-রিফ্লেক্টিভ (AR) বা ব্লু লাইট প্রটেকশন গ্লাস: এই ধরনের চশমা চোখে ক্ষতিকর নীল আলো কম প্রবেশ করতে দেয়, ফলে চোখের চাপ হ্রাস পায়।
৩. শিশু থেকে প্রবীণ সবার জন্য উপযোগী: বাজারে এখন শিশুদের জন্য বিশেষ ব্লু লাইট ব্লকার চশমা পাওয়া যায়। একইভাবে প্রাপ্তবয়স্ক ও বৃদ্ধদের জন্যও চশমা রয়েছে যা দৃষ্টি সুরক্ষা দেয়।
৪. পর্যাপ্ত আলোতে ভিডিও দেখা উচিত, অন্ধকার ঘরে স্ক্রিন ব্যবহার চোখের জন্য ক্ষতিকর।
৫. পর্যাপ্ত পানি পান এবং ভিটামিন এ-সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া চোখের স্বাস্থ্যের জন্য জরুরি।

ইউটিউব আমাদের তথ্য ও বিনোদনের অন্যতম প্রধান উৎস হলেও এর ব্যবহারকে নিয়ন্ত্রিত রাখা জরুরি। দীর্ঘ সময় ইউটিউব দেখলে মস্তিষ্ক ও চোখ উভয়ের উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে, যা শিশু থেকে প্রবীণ সবার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। তাই নিয়মিত বিরতি, সঠিক সময়সীমা, এবং ব্লু লাইট প্রটেকশন গ্লাস ব্যবহারের মাধ্যমে ইউটিউব ব্যবহারকে নিরাপদ রাখা সম্ভব।

বিশেষজ্ঞ মতামত

চিকিৎসকের দৃষ্টিভঙ্গি

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডা. মেহেদী হাসান বলেন, “দীর্ঘ সময় স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকলে চোখ শুকিয়ে যায় এবং অনেক সময় কর্নিয়ার ক্ষতি হতে পারে। ব্লু লাইট প্রটেকশন গ্লাস ব্যবহারে চোখ কিছুটা সুরক্ষিত থাকে, তবে সবচেয়ে জরুরি হলো স্ক্রিন ব্যবহারের সময়সীমা নিয়ন্ত্রণ করা।”

শিশু মনোবিজ্ঞানীর মতামত

শিশু মনোবিজ্ঞানী ডা. রুবিনা আক্তার বলেন, “শিশুদের দিনে এক ঘণ্টার বেশি স্ক্রিন টাইম অনুমোদন করা উচিত নয়। অতিরিক্ত ইউটিউব দেখা তাদের একাগ্রতা কমিয়ে দেয় এবং বাস্তব জীবনের সামাজিক যোগাযোগে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।”

প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞের মন্তব্য

আইটি বিশেষজ্ঞ মো. আরিফ হোসেন মনে করেন, “আজকের দিনে ইউটিউব জ্ঞানের ভাণ্ডার হলেও এটি ব্যবহারের ক্ষেত্রে পরিবার ও বিদ্যালয়কে সচেতন হতে হবে। প্রযুক্তি ব্যবহার নিয়ন্ত্রিত না হলে শিশু থেকে প্রবীণ—সবাই দীর্ঘমেয়াদে স্বাস্থ্যঝুঁকির মধ্যে পড়বে।”

সমাধানভিত্তিক পদক্ষেপ

পরিবারের ভূমিকা

  • • অভিভাবকদের উচিত শিশুদের স্ক্রিন টাইমের উপর নজরদারি করা।
  • • পরিবারে একসঙ্গে বসে টিভি বা ইউটিউব দেখার পরিবর্তে শিশুদের খেলাধুলা বা বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তোলা।

The Impact of Screen Time on Children's Education and Well-Being | Teaching Channel

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব

  • • বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের অতিরিক্ত স্ক্রিন ব্যবহার নিয়ে সচেতনতা ক্লাস চালু করা যেতে পারে।
  • • প্রযুক্তি শিক্ষাকে শুধু পাঠ্যক্রমে সীমাবদ্ধ না রেখে ব্যবহারবিধি শেখানো প্রয়োজন।

ব্যক্তিগত অভ্যাস পরিবর্তন

  • • ঘুমানোর আগে অন্তত ১ ঘণ্টা কোনো স্ক্রিন না দেখা।
  • • বাইরে সময় কাটানো, খেলাধুলা করা এবং শারীরিক কার্যকলাপ বাড়ানো।
  • • ইউটিউব দেখার সময় নির্দিষ্ট করে রাখা এবং অতিরিক্ত ভিডিও এড়িয়ে চলা।