০৪:৩৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৫
ঈশ্বরদীতে ৮টি কুকুরছানা পানিতে ডুবিয়ে হত্যা, প্রাণিজ কল্যাণ আইনে গ্রেপ্তার ১ জয়পুরহাটে বাড়িতে ঢুকে নারীকে কুপিয়ে হত্যা, আহত ভাতিজি ঢাকা–সিলেট মহাসড়কে ট্রাক–পিকআপ সংঘর্ষে নিহত ২ ঢাকা–ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়েতে বাস–ট্রাক সংঘর্ষে নিহত ৩ গাজীপুরের শ্রীপুরে অটোরিকশা গ্যারেজে আগুন, পুড়েছে ১৫ যানবাহন “‘অ্যাভাটার: ফায়ার অ্যান্ড অ্যাশ’-এ ‘টাইটানিক’–ধরনের হৃদয়ভাঙা, বলছেন সমালোচকেরা” “আরও গভীর পরিসংখ্যান নিয়ে ফিরলো অ্যাপল মিউজিক ‘রিপ্লে ২০২৫’” “মিইয়ে যাওয়া জিডিপি সংখ্যার আড়ালে অস্ট্রেলিয়ার চাহিদা এখনো ‘গরম’” “নতুন নোভা এআই মডেল উন্মোচনে করপোরেট গ্রাহকদের মন জয়ে ঝুঁকল এডব্লিউএস” “মারাত্মক অগ্নিকাণ্ডের আঘাতে বিধ্বস্ত হংকং, তবু সামনে ‘দেশপ্রেমিকদের’ নির্বাচন”

আপনারা কি আমাদের কিছু অর্থ ধার দেবেন?

  • জেইন স্মল
  • ০৮:০০:৫৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৩ অগাস্ট ২০২৫
  • 130

প্রেক্ষাপট

নিউজিল্যান্ডের অর্থমন্ত্রী নিকোলা উইলিস বলেছেন, বছরের শেষ নাগাদ সরকারের ঋণের পরিমাণ ৩০০ বিলিয়ন নিউজিল্যান্ড ডলারে পৌঁছাতে পারে—তবুও আন্তর্জাতিক বাজারে নিউজিল্যান্ডকে ভালো ঋণগ্রহীতা হিসেবে দেখা হচ্ছে। লন্ডন ও নিউইয়র্ক সফর শেষে তিনি জানান, যুক্তরাষ্ট্র থেকে ১৫ শতাংশের চেয়ে কম শুল্কহার পাওয়ার সম্ভাবনা নেই। তবে বিদেশি ব্যাংক ও বিনিয়োগ তহবিলগুলোর কাছ থেকে তিনি আশ্বাস পেয়েছেন যে ঋণের বোঝা বাড়লেও নিউজিল্যান্ডকে অর্থ ধার দেওয়ার জন্য নিরাপদ গন্তব্য হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।

বিনিয়োগকারী ও রেটিং সংস্থার আস্থা

“আমি লন্ডন ও নিউইয়র্কে এমন সব বিনিয়োগকারীর সঙ্গে দেখা করেছি যারা নিউজিল্যান্ডের ইস্যু করা ঋণপত্র কেনেন এবং সেই সঙ্গে ক্রেডিট রেটিং সংস্থাগুলোর সঙ্গেও কথা বলেছি,” সংবাদমাধ্যমকে বলেন উইলিস। এসব রেটিং সংস্থার একটি, ফিচ, নিউজিল্যান্ডকে AA+ মর্যাদা দিয়েছে—বিশ্বের মাত্র ১২টি দেশের একটি। তাদের মূল্যায়নে বলা হয়েছে, “রাজস্ব ঘাটতি কমানোর প্রতিশ্রুতি দৃঢ়,” এবং ঋণ ধীরে ধীরে নিম্নমুখী পথে যেতে পারে। উইলিস ব্যাখ্যা করেন, “আমরা বিশ্বকে বলি, ‘আমাদের কিছু টাকা ধার দেবেন? এতে আমরা আমাদের শিক্ষক, নার্স এবং সড়কসহ প্রয়োজনীয় খাতে ব্যয় চালিয়ে যেতে পারি।’ তারপর তারা যাচাই করে দেখে, ‘আমরা কি ভালো ঋণগ্রহীতা? আমরা কি সময়মতো এবং ভালো হারে অর্থ পরিশোধ করব?’—আর আমার বৈঠকগুলোতে তারা নিশ্চিত করেছেন, নিউজিল্যান্ডকে তারা ঋণ দেওয়ার জন্য উপযুক্ত দেশ মনে করেন।”

সতর্কবার্তা ও ঋণের চাপ

ফিচ লেবার ও ন্যাশনাল—উভয় দলকেই “রাজস্ব শৃঙ্খলার সংস্কৃতি” বজায় রাখার পরামর্শ দিয়েছে। উইলিস নিজের হিসাব-নিকাশ ও ব্যয়ের নিয়ন্ত্রণের কৃতিত্ব দেখালেও সরকারের ঋণ বেড়েই চলেছে। ট্যাক্সপেয়ার্স’ ইউনিয়নের হিসাবে, ২০২৫ সালের শেষ নাগাদ সরকারের মোট ঋণ ৩০০ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাতে পারে। সংগঠনটির টরি রেলফ বলেন, “সরকার প্রতিদিন ৭৫ মিলিয়ন ডলার করে ঋণ নিচ্ছে—এটা সাবেক অর্থমন্ত্রী গ্রান্ট রবার্টসনের সময়কার যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি, এবং ক্রমেই বাড়ছে। আমরা আংশিকভাবে ‘লাইট জ্বালিয়ে রাখতে’ এখনই ঋণ নিচ্ছি।” উইলিসও তা অস্বীকার করেননি: “জনসেবা টিকিয়ে রাখতে আমরা ঋণ নিচ্ছি,” তিনি বলেন।

সুদের বিলের ভার

সংসদে বক্তব্য দিতে গিয়ে উইলিস জানান, “চলতি অর্থবছরে সরকারের সুদের বিল ৯.৫ বিলিয়ন ডলার হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে; ২০১০-এর দশকে গড় বার্ষিক সুদের বিল ছিল প্রায় ৩.৫ বিলিয়ন ডলার।” তিনি আরও বলেন, “আমরা যে পরিমাণ সুদ প্রতি বছর পরিশোধ করি, তা আনুমানিকভাবে প্রতিরক্ষা বাহিনী, পুলিশ, সংশোধনাগার অধিদপ্তর, ন্যায়বিচার মন্ত্রণালয় এবং কাস্টমস—এইসব সংস্থার বার্ষিক পরিচালন ব্যয়ের সমান।”

দায় কার?

সরকার বলছে, আগের লেবার প্রশাসনের সময় থেকেই ঋণের বোঝা বাড়তে শুরু করেছে; ট্রেজারির হিসাবে, কোভিড-১৯ মোকাবিলায় ব্যয় হয়েছিল ৬৬ বিলিয়ন ডলার। উইলিসের ভাষায়, “নিউজিল্যান্ডের রেটিং—অর্থাৎ আমাদের ঋণ পরিষেবার খরচ—সবচেয়ে বড় ঝুঁকিতে পড়বে যদি আমরা বহু দিন ধরে গড়ে ওঠা রাজস্ব শৃঙ্খলার সংস্কৃতি থেকে সরে যাই। আর আমার কাছে পরিষ্কার, ক্রিস হিপকিনস সে দিকেই ইঙ্গিত দিচ্ছেন।” হিপকিনস এই মন্তব্যকে “অযৌক্তিক” বলে অভিহিত করেন।

হিপকিনসের পাল্টা যুক্তি

হিপকিনস বলেন, “ঋণ নিয়ে আলোচনাকে আলাদাভাবে দেখতে হবে। দীর্ঘমেয়াদি সম্পদের জন্য কোনো না কোনোভাবে অর্থের ব্যবস্থা করতে হয়। সরকার অবকাঠামো নিয়ে বড় বড় কথা বলছে, অথচ তারা মনে করে কম খরচ করে বেশি অবকাঠামো নির্মাণ করা যাবে।”

গ্রিন পার্টির সমালোচনা

গ্রিন দলের সহ-নেতা ক্লোয়ি সোয়ারব্রিকের মতে, সরকার ব্যয়ে বেপরোয়া আচরণ করেছে। তার ভাষায়, “এই সরকার ক্ষমতায় এসে এমন কর ছাড়ের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যা সামর্থ্যের বাইরে ছিল, আর সেই কর ছাড়ের জোগান দিতে ঋণ নিয়েছে।”

জীবনযাত্রার ব্যয় ও বিদ্যুৎবাজারে প্রস্তাব

কর ছাড় নেওয়ার উদ্দেশ্য ছিল জীবনযাত্রার ব্যয় সামাল দেওয়ায় সহায়তা করা। কিন্তু বিদ্যুতের দাম গত বছরের তুলনায় ১০ শতাংশ বেড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে সরকার ইলেকট্রিসিটি অথরিটির এক নতুন প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছে। প্রস্তাবটি অনুযায়ী, দেশের চারটি বড় “জেন্টেইলার”—অর্থাৎ যেসব প্রতিষ্ঠান বিদ্যুৎ উৎপাদন ও খুচরা বিক্রি উভয়ই করে—তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী কোম্পানিগুলোকেও একই দামে বিদ্যুৎ বিক্রি করতে বাধ্য করা হবে। সরকার এটিকে প্রতিযোগিতা বাড়ানো ও ভোক্তাদের খরচ কমানোর একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখছে।

জনপ্রিয় সংবাদ

ঈশ্বরদীতে ৮টি কুকুরছানা পানিতে ডুবিয়ে হত্যা, প্রাণিজ কল্যাণ আইনে গ্রেপ্তার ১

আপনারা কি আমাদের কিছু অর্থ ধার দেবেন?

০৮:০০:৫৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৩ অগাস্ট ২০২৫

প্রেক্ষাপট

নিউজিল্যান্ডের অর্থমন্ত্রী নিকোলা উইলিস বলেছেন, বছরের শেষ নাগাদ সরকারের ঋণের পরিমাণ ৩০০ বিলিয়ন নিউজিল্যান্ড ডলারে পৌঁছাতে পারে—তবুও আন্তর্জাতিক বাজারে নিউজিল্যান্ডকে ভালো ঋণগ্রহীতা হিসেবে দেখা হচ্ছে। লন্ডন ও নিউইয়র্ক সফর শেষে তিনি জানান, যুক্তরাষ্ট্র থেকে ১৫ শতাংশের চেয়ে কম শুল্কহার পাওয়ার সম্ভাবনা নেই। তবে বিদেশি ব্যাংক ও বিনিয়োগ তহবিলগুলোর কাছ থেকে তিনি আশ্বাস পেয়েছেন যে ঋণের বোঝা বাড়লেও নিউজিল্যান্ডকে অর্থ ধার দেওয়ার জন্য নিরাপদ গন্তব্য হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।

বিনিয়োগকারী ও রেটিং সংস্থার আস্থা

“আমি লন্ডন ও নিউইয়র্কে এমন সব বিনিয়োগকারীর সঙ্গে দেখা করেছি যারা নিউজিল্যান্ডের ইস্যু করা ঋণপত্র কেনেন এবং সেই সঙ্গে ক্রেডিট রেটিং সংস্থাগুলোর সঙ্গেও কথা বলেছি,” সংবাদমাধ্যমকে বলেন উইলিস। এসব রেটিং সংস্থার একটি, ফিচ, নিউজিল্যান্ডকে AA+ মর্যাদা দিয়েছে—বিশ্বের মাত্র ১২টি দেশের একটি। তাদের মূল্যায়নে বলা হয়েছে, “রাজস্ব ঘাটতি কমানোর প্রতিশ্রুতি দৃঢ়,” এবং ঋণ ধীরে ধীরে নিম্নমুখী পথে যেতে পারে। উইলিস ব্যাখ্যা করেন, “আমরা বিশ্বকে বলি, ‘আমাদের কিছু টাকা ধার দেবেন? এতে আমরা আমাদের শিক্ষক, নার্স এবং সড়কসহ প্রয়োজনীয় খাতে ব্যয় চালিয়ে যেতে পারি।’ তারপর তারা যাচাই করে দেখে, ‘আমরা কি ভালো ঋণগ্রহীতা? আমরা কি সময়মতো এবং ভালো হারে অর্থ পরিশোধ করব?’—আর আমার বৈঠকগুলোতে তারা নিশ্চিত করেছেন, নিউজিল্যান্ডকে তারা ঋণ দেওয়ার জন্য উপযুক্ত দেশ মনে করেন।”

সতর্কবার্তা ও ঋণের চাপ

ফিচ লেবার ও ন্যাশনাল—উভয় দলকেই “রাজস্ব শৃঙ্খলার সংস্কৃতি” বজায় রাখার পরামর্শ দিয়েছে। উইলিস নিজের হিসাব-নিকাশ ও ব্যয়ের নিয়ন্ত্রণের কৃতিত্ব দেখালেও সরকারের ঋণ বেড়েই চলেছে। ট্যাক্সপেয়ার্স’ ইউনিয়নের হিসাবে, ২০২৫ সালের শেষ নাগাদ সরকারের মোট ঋণ ৩০০ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাতে পারে। সংগঠনটির টরি রেলফ বলেন, “সরকার প্রতিদিন ৭৫ মিলিয়ন ডলার করে ঋণ নিচ্ছে—এটা সাবেক অর্থমন্ত্রী গ্রান্ট রবার্টসনের সময়কার যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি, এবং ক্রমেই বাড়ছে। আমরা আংশিকভাবে ‘লাইট জ্বালিয়ে রাখতে’ এখনই ঋণ নিচ্ছি।” উইলিসও তা অস্বীকার করেননি: “জনসেবা টিকিয়ে রাখতে আমরা ঋণ নিচ্ছি,” তিনি বলেন।

সুদের বিলের ভার

সংসদে বক্তব্য দিতে গিয়ে উইলিস জানান, “চলতি অর্থবছরে সরকারের সুদের বিল ৯.৫ বিলিয়ন ডলার হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে; ২০১০-এর দশকে গড় বার্ষিক সুদের বিল ছিল প্রায় ৩.৫ বিলিয়ন ডলার।” তিনি আরও বলেন, “আমরা যে পরিমাণ সুদ প্রতি বছর পরিশোধ করি, তা আনুমানিকভাবে প্রতিরক্ষা বাহিনী, পুলিশ, সংশোধনাগার অধিদপ্তর, ন্যায়বিচার মন্ত্রণালয় এবং কাস্টমস—এইসব সংস্থার বার্ষিক পরিচালন ব্যয়ের সমান।”

দায় কার?

সরকার বলছে, আগের লেবার প্রশাসনের সময় থেকেই ঋণের বোঝা বাড়তে শুরু করেছে; ট্রেজারির হিসাবে, কোভিড-১৯ মোকাবিলায় ব্যয় হয়েছিল ৬৬ বিলিয়ন ডলার। উইলিসের ভাষায়, “নিউজিল্যান্ডের রেটিং—অর্থাৎ আমাদের ঋণ পরিষেবার খরচ—সবচেয়ে বড় ঝুঁকিতে পড়বে যদি আমরা বহু দিন ধরে গড়ে ওঠা রাজস্ব শৃঙ্খলার সংস্কৃতি থেকে সরে যাই। আর আমার কাছে পরিষ্কার, ক্রিস হিপকিনস সে দিকেই ইঙ্গিত দিচ্ছেন।” হিপকিনস এই মন্তব্যকে “অযৌক্তিক” বলে অভিহিত করেন।

হিপকিনসের পাল্টা যুক্তি

হিপকিনস বলেন, “ঋণ নিয়ে আলোচনাকে আলাদাভাবে দেখতে হবে। দীর্ঘমেয়াদি সম্পদের জন্য কোনো না কোনোভাবে অর্থের ব্যবস্থা করতে হয়। সরকার অবকাঠামো নিয়ে বড় বড় কথা বলছে, অথচ তারা মনে করে কম খরচ করে বেশি অবকাঠামো নির্মাণ করা যাবে।”

গ্রিন পার্টির সমালোচনা

গ্রিন দলের সহ-নেতা ক্লোয়ি সোয়ারব্রিকের মতে, সরকার ব্যয়ে বেপরোয়া আচরণ করেছে। তার ভাষায়, “এই সরকার ক্ষমতায় এসে এমন কর ছাড়ের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যা সামর্থ্যের বাইরে ছিল, আর সেই কর ছাড়ের জোগান দিতে ঋণ নিয়েছে।”

জীবনযাত্রার ব্যয় ও বিদ্যুৎবাজারে প্রস্তাব

কর ছাড় নেওয়ার উদ্দেশ্য ছিল জীবনযাত্রার ব্যয় সামাল দেওয়ায় সহায়তা করা। কিন্তু বিদ্যুতের দাম গত বছরের তুলনায় ১০ শতাংশ বেড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে সরকার ইলেকট্রিসিটি অথরিটির এক নতুন প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছে। প্রস্তাবটি অনুযায়ী, দেশের চারটি বড় “জেন্টেইলার”—অর্থাৎ যেসব প্রতিষ্ঠান বিদ্যুৎ উৎপাদন ও খুচরা বিক্রি উভয়ই করে—তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী কোম্পানিগুলোকেও একই দামে বিদ্যুৎ বিক্রি করতে বাধ্য করা হবে। সরকার এটিকে প্রতিযোগিতা বাড়ানো ও ভোক্তাদের খরচ কমানোর একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখছে।