০৯:০০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫
সৌদিতে বিরল তুষারপাতের পর প্রশ্ন: সংযুক্ত আরব আমিরাতেও কি আবার তুষারপাত সম্ভব? যে রিকশায় গুলিবিদ্ধ হন হাদি, সেই চালকের আদালতে জবানবন্দি তারেক রহমানের নেতৃত্বে নির্বাচনে আমরা জয়ী হবো: মির্জা ফখরুল পারমাণবিক সাবমেরিন থেকে কে-৪ ক্ষেপণাস্ত্রের সফল পরীক্ষা ভারতের তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তনে বহুদলীয় গণতন্ত্র আরও শক্তিশালী হবে: নাহিদ ঢাকা-১৫ আসনে জামায়াত আমিরের পক্ষে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ মগবাজারে ককটেল বিস্ফোরণে শ্রমিক নিহত, অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে মামলা নির্বাচনপ্রত্যাশীদের জন্য অনলাইনে কর রিটার্ন দাখিলে বিশেষ ব্যবস্থা এনবিআরের মাকে দেখতে এভারকেয়ার হাসপাতালে তারেক রহমান মিয়ানমারের অসম্পূর্ণ সাধারণ নির্বাচন: জানা দরকার পাঁচটি বিষয়

ইসরায়েল হুতিদের বিরুদ্ধে ইয়েমেনে বিমান হামলা চালাল: নতুন ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারে মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা চরমে

২৪ আগস্ট ২০২৫ তারিখে মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরা ইসরায়েলের দিকে প্রথমবারের মতো নতুন ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করার পরপরই ইসরায়েল প্রতিরোধমূলক হামলা চালায়। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর বিবৃতিতে জানানো হয়, রাজধানী সান‘আ’-এর প্রেসিডেন্সিয়াল প্যালেস সংলগ্ন সামরিক কম্পাউন্ড, আসার ও হিজাজ বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং একটি গুরুত্বপূর্ণ জ্বালানি সংগ্রহস্থলকে লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালানো হয়।

হুতি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাতে জানা গেছে, এই হামলায় অন্তত ৬ জন নিহত হয়েছেন এবং ৮৬ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক। বেসামরিক মানুষের প্রাণহানির ঘটনায় ইয়েমেনজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বলছে, এই হামলা তাদের উপর হুতিদের ধারাবাহিক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার প্রতিক্রিয়ায় চালানো হয়েছে। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে হুতিরা একাধিকবার ইসরায়েলের আকাশসীমায় ড্রোন পাঠিয়েছে এবং নতুন ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে আক্রমণ চালিয়েছে।

নতুন ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র
হুতিদের ব্যবহৃত ক্ষেপণাস্ত্র এবার বিশেষ আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। ইসরায়েলি বিমান বাহিনীর এক কর্মকর্তা জানান, এটি ছিল প্রথমবারের মতো এমন একটি ক্ষেপণাস্ত্র, যাতে “সাব-মিউনিশন” সংযুক্ত ছিল। অর্থাৎ, ক্ষেপণাস্ত্রটি ভূপাতিত হওয়ার সময় একাধিক ছোট ছোট বিস্ফোরক অংশ ছড়িয়ে পড়ে এবং একই সঙ্গে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ ঘটায়।

শুক্রবার প্রথমবার এই ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের দিকে ছোড়া হলে সেটি প্রতিরোধ করা সম্ভব হলেও ইসরায়েলি সেনাদের মধ্যে নতুন আশঙ্কা তৈরি হয়। কারণ, সাব-মিউনিশন ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করা কঠিন এবং এটি কৌশলগতভাবে আরও ক্ষতিকর হতে পারে।

রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া
ইসরায়েলের প্রতিক্রিয়া
প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ হুতি বিদ্রোহীদের উদ্দেশে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “তারা যত ক্ষেপণাস্ত্রই পাঠাক না কেন, তার জন্য তাদের অনেক বড় মূল্য দিতে হবে। আজ আমরা তাদের অন্ধকারে নিমজ্জিত করেছি, বিদ্যুৎ সরবরাহ বিচ্ছিন্ন করেছি। সামনে আরও কঠিন মূল্য দিতে হবে।”

অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রী বেনজামিন নেতানিয়াহু বলেন, “আমাদের সামরিক পদক্ষেপ ইসরায়েলের শক্তি ও সংকল্পের প্রতিফলন। হুতিদের মনে রাখতে হবে, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আগ্রাসনের প্রতিটি পদক্ষেপের জন্য মূল্য দিতে হবে।”

হুতিদের প্রতিক্রিয়া
ইসরায়েলের বিমান হামলার পরপরই হুতিরা নিজেদের অবস্থান আরও জোরালোভাবে তুলে ধরে। সিনিয়র হুতি নেতা মুহাম্মদ আল-মুর্তাদা বলেন, “আমরা গাজার ভাইদের পাশে আছি। যতক্ষণ না ইসরায়েল আগ্রাসন বন্ধ করে, অবরোধ তুলে নেয় এবং গাজার মানুষের ক্ষুধা শেষ হয়, ততক্ষণ আমরা পিছিয়ে আসব না।”

ইরানের প্রতিক্রিয়া
হুতিদের অন্যতম প্রধান মিত্র ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনিই এক টুইটে হুতিদের প্রশংসা করে লিখেছেন, “আজ ইয়েমেনের সাহসী মানুষ যে কাজ করছে, সেটিই সঠিক পথ।” এই সমর্থন ইঙ্গিত দেয়, সংঘর্ষ আরও বহুমুখী রূপ নিতে পারে।

সামগ্রিক প্রেক্ষাপট
ইসরায়েল-হুতি সংঘর্ষ নতুন নয়। তবে সাম্প্রতিক গাজা যুদ্ধের পর থেকে এই উত্তেজনা দ্রুত বেড়েছে। হুতিরা ইসরায়েলের দিকে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করছে এবং রেড সাগর দিয়ে যাওয়া আন্তর্জাতিক জাহাজগুলোতেও হামলা চালাচ্ছে। এতে ইসরায়েল কেবল সামরিক নয়, অর্থনৈতিকভাবেও চাপের মুখে পড়েছে।

মে ২০২৫ থেকে ইসরায়েল ইয়েমেনে নিয়মিত বিমান হামলা চালাচ্ছে। হুদেইদা বন্দর, সান‘আ’ বিমানবন্দরসহ বহু অবকাঠামো ধ্বংস হয়েছে। এতে ইয়েমেনের বেসামরিক জনগণ মারাত্মক ভোগান্তিতে পড়েছে। বিদ্যুৎ সরবরাহ, খাদ্য ও জ্বালানি সংকট প্রকট হয়ে উঠছে।

সবচেয়ে উদ্বেগজনক বিষয় হলো হুতিদের নতুন ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র এবং ক্লাস্টার মুনিশন ব্যবহার। এটি প্রথমবারের মতো এই সংঘর্ষে যুক্ত হলো এবং অঞ্চলজুড়ে আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপক আশঙ্কা তৈরি করেছে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলোও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যে, এ ধরনের অস্ত্র সাধারণ জনগণের ওপর ভয়াবহ প্রভাব ফেলতে পারে।

সারসংক্ষেপ
ঘটনা: ২৪ আগস্ট ২০২৫ তারিখে হুতি বিদ্রোহীরা নতুন ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের দিকে নিক্ষেপ করলে, ইসরায়েল ইয়েমেনের গুরুত্বপূর্ণ সামরিক ও অবকাঠামোগত স্থাপনায় বিমান হামলা চালায়।

প্রধান লক্ষ্যবস্তু: সান‘আ’ প্রেসিডেন্সিয়াল প্যালেস সংলগ্ন সামরিক ঘাঁটি, আসার ও হিজাজ বিদ্যুৎকেন্দ্র, জ্বালানি সংগ্রহস্থল।

ক্ষয়ক্ষতি: অন্তত ৬ জন নিহত, ৮৬ জন আহত।

ইসরায়েলের বার্তা: আগ্রাসন বন্ধ না করলে আরও কঠিন মূল্য দিতে হবে।

হুতিদের অবস্থান: গাজার মানুষের প্রতি সমর্থন অব্যাহত থাকবে।

আন্তর্জাতিক উদ্বেগ: সাব-মিউনিশন ও ক্লাস্টার মুনিশন ব্যবহারে সংঘর্ষ আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করছে।


এই ঘটনা শুধু ইসরায়েল-হুতি সংঘর্ষকেই তীব্র করেনি, বরং পুরো মধ্যপ্রাচ্যকে নতুন করে অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিয়েছে। ইরানের প্রকাশ্য সমর্থন ইঙ্গিত দেয়, ভবিষ্যতে সংঘর্ষের ভৌগোলিক পরিসর আরও বড় হতে পারে।

বর্তমানে গাজা যুদ্ধ, রেড সাগরে হুতিদের হামলা, ইয়েমেনে ধারাবাহিক বিমান হামলা—সব মিলিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে এক অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। প্রতিটি পক্ষ নিজেদের শক্তি প্রদর্শন করছে, কিন্তু এই সংঘর্ষে বেসামরিক জনগণের দুর্ভোগই সবচেয়ে বেশি। বিদ্যুৎ, খাদ্য ও স্বাস্থ্যসেবার ঘাটতি ইয়েমেনের সাধারণ মানুষের জীবনে এক ভয়াবহ মানবিক সংকট তৈরি করেছে।

এখন প্রশ্ন হলো, এই সংঘর্ষ কতদূর গড়াবে? ইসরায়েল কি তাদের বিমান হামলা বাড়াবে, নাকি কূটনৈতিক চাপে সীমিত রাখবে? হুতিরা কি নতুন ধরনের আরও উন্নত অস্ত্র ব্যবহার করবে? আর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কি এই সংঘাত ঠেকাতে কার্যকর উদ্যোগ নেবে, নাকি তারা শুধু উদ্বেগ প্রকাশেই সীমাবদ্ধ থাকবে?

জনপ্রিয় সংবাদ

সৌদিতে বিরল তুষারপাতের পর প্রশ্ন: সংযুক্ত আরব আমিরাতেও কি আবার তুষারপাত সম্ভব?

ইসরায়েল হুতিদের বিরুদ্ধে ইয়েমেনে বিমান হামলা চালাল: নতুন ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারে মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা চরমে

০১:০১:২৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ অগাস্ট ২০২৫

২৪ আগস্ট ২০২৫ তারিখে মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরা ইসরায়েলের দিকে প্রথমবারের মতো নতুন ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করার পরপরই ইসরায়েল প্রতিরোধমূলক হামলা চালায়। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর বিবৃতিতে জানানো হয়, রাজধানী সান‘আ’-এর প্রেসিডেন্সিয়াল প্যালেস সংলগ্ন সামরিক কম্পাউন্ড, আসার ও হিজাজ বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং একটি গুরুত্বপূর্ণ জ্বালানি সংগ্রহস্থলকে লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালানো হয়।

হুতি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাতে জানা গেছে, এই হামলায় অন্তত ৬ জন নিহত হয়েছেন এবং ৮৬ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক। বেসামরিক মানুষের প্রাণহানির ঘটনায় ইয়েমেনজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বলছে, এই হামলা তাদের উপর হুতিদের ধারাবাহিক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার প্রতিক্রিয়ায় চালানো হয়েছে। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে হুতিরা একাধিকবার ইসরায়েলের আকাশসীমায় ড্রোন পাঠিয়েছে এবং নতুন ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে আক্রমণ চালিয়েছে।

নতুন ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র
হুতিদের ব্যবহৃত ক্ষেপণাস্ত্র এবার বিশেষ আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। ইসরায়েলি বিমান বাহিনীর এক কর্মকর্তা জানান, এটি ছিল প্রথমবারের মতো এমন একটি ক্ষেপণাস্ত্র, যাতে “সাব-মিউনিশন” সংযুক্ত ছিল। অর্থাৎ, ক্ষেপণাস্ত্রটি ভূপাতিত হওয়ার সময় একাধিক ছোট ছোট বিস্ফোরক অংশ ছড়িয়ে পড়ে এবং একই সঙ্গে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ ঘটায়।

শুক্রবার প্রথমবার এই ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের দিকে ছোড়া হলে সেটি প্রতিরোধ করা সম্ভব হলেও ইসরায়েলি সেনাদের মধ্যে নতুন আশঙ্কা তৈরি হয়। কারণ, সাব-মিউনিশন ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করা কঠিন এবং এটি কৌশলগতভাবে আরও ক্ষতিকর হতে পারে।

রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া
ইসরায়েলের প্রতিক্রিয়া
প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ হুতি বিদ্রোহীদের উদ্দেশে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “তারা যত ক্ষেপণাস্ত্রই পাঠাক না কেন, তার জন্য তাদের অনেক বড় মূল্য দিতে হবে। আজ আমরা তাদের অন্ধকারে নিমজ্জিত করেছি, বিদ্যুৎ সরবরাহ বিচ্ছিন্ন করেছি। সামনে আরও কঠিন মূল্য দিতে হবে।”

অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রী বেনজামিন নেতানিয়াহু বলেন, “আমাদের সামরিক পদক্ষেপ ইসরায়েলের শক্তি ও সংকল্পের প্রতিফলন। হুতিদের মনে রাখতে হবে, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আগ্রাসনের প্রতিটি পদক্ষেপের জন্য মূল্য দিতে হবে।”

হুতিদের প্রতিক্রিয়া
ইসরায়েলের বিমান হামলার পরপরই হুতিরা নিজেদের অবস্থান আরও জোরালোভাবে তুলে ধরে। সিনিয়র হুতি নেতা মুহাম্মদ আল-মুর্তাদা বলেন, “আমরা গাজার ভাইদের পাশে আছি। যতক্ষণ না ইসরায়েল আগ্রাসন বন্ধ করে, অবরোধ তুলে নেয় এবং গাজার মানুষের ক্ষুধা শেষ হয়, ততক্ষণ আমরা পিছিয়ে আসব না।”

ইরানের প্রতিক্রিয়া
হুতিদের অন্যতম প্রধান মিত্র ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনিই এক টুইটে হুতিদের প্রশংসা করে লিখেছেন, “আজ ইয়েমেনের সাহসী মানুষ যে কাজ করছে, সেটিই সঠিক পথ।” এই সমর্থন ইঙ্গিত দেয়, সংঘর্ষ আরও বহুমুখী রূপ নিতে পারে।

সামগ্রিক প্রেক্ষাপট
ইসরায়েল-হুতি সংঘর্ষ নতুন নয়। তবে সাম্প্রতিক গাজা যুদ্ধের পর থেকে এই উত্তেজনা দ্রুত বেড়েছে। হুতিরা ইসরায়েলের দিকে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করছে এবং রেড সাগর দিয়ে যাওয়া আন্তর্জাতিক জাহাজগুলোতেও হামলা চালাচ্ছে। এতে ইসরায়েল কেবল সামরিক নয়, অর্থনৈতিকভাবেও চাপের মুখে পড়েছে।

মে ২০২৫ থেকে ইসরায়েল ইয়েমেনে নিয়মিত বিমান হামলা চালাচ্ছে। হুদেইদা বন্দর, সান‘আ’ বিমানবন্দরসহ বহু অবকাঠামো ধ্বংস হয়েছে। এতে ইয়েমেনের বেসামরিক জনগণ মারাত্মক ভোগান্তিতে পড়েছে। বিদ্যুৎ সরবরাহ, খাদ্য ও জ্বালানি সংকট প্রকট হয়ে উঠছে।

সবচেয়ে উদ্বেগজনক বিষয় হলো হুতিদের নতুন ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র এবং ক্লাস্টার মুনিশন ব্যবহার। এটি প্রথমবারের মতো এই সংঘর্ষে যুক্ত হলো এবং অঞ্চলজুড়ে আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপক আশঙ্কা তৈরি করেছে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলোও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যে, এ ধরনের অস্ত্র সাধারণ জনগণের ওপর ভয়াবহ প্রভাব ফেলতে পারে।

সারসংক্ষেপ
ঘটনা: ২৪ আগস্ট ২০২৫ তারিখে হুতি বিদ্রোহীরা নতুন ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের দিকে নিক্ষেপ করলে, ইসরায়েল ইয়েমেনের গুরুত্বপূর্ণ সামরিক ও অবকাঠামোগত স্থাপনায় বিমান হামলা চালায়।

প্রধান লক্ষ্যবস্তু: সান‘আ’ প্রেসিডেন্সিয়াল প্যালেস সংলগ্ন সামরিক ঘাঁটি, আসার ও হিজাজ বিদ্যুৎকেন্দ্র, জ্বালানি সংগ্রহস্থল।

ক্ষয়ক্ষতি: অন্তত ৬ জন নিহত, ৮৬ জন আহত।

ইসরায়েলের বার্তা: আগ্রাসন বন্ধ না করলে আরও কঠিন মূল্য দিতে হবে।

হুতিদের অবস্থান: গাজার মানুষের প্রতি সমর্থন অব্যাহত থাকবে।

আন্তর্জাতিক উদ্বেগ: সাব-মিউনিশন ও ক্লাস্টার মুনিশন ব্যবহারে সংঘর্ষ আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করছে।


এই ঘটনা শুধু ইসরায়েল-হুতি সংঘর্ষকেই তীব্র করেনি, বরং পুরো মধ্যপ্রাচ্যকে নতুন করে অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিয়েছে। ইরানের প্রকাশ্য সমর্থন ইঙ্গিত দেয়, ভবিষ্যতে সংঘর্ষের ভৌগোলিক পরিসর আরও বড় হতে পারে।

বর্তমানে গাজা যুদ্ধ, রেড সাগরে হুতিদের হামলা, ইয়েমেনে ধারাবাহিক বিমান হামলা—সব মিলিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে এক অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। প্রতিটি পক্ষ নিজেদের শক্তি প্রদর্শন করছে, কিন্তু এই সংঘর্ষে বেসামরিক জনগণের দুর্ভোগই সবচেয়ে বেশি। বিদ্যুৎ, খাদ্য ও স্বাস্থ্যসেবার ঘাটতি ইয়েমেনের সাধারণ মানুষের জীবনে এক ভয়াবহ মানবিক সংকট তৈরি করেছে।

এখন প্রশ্ন হলো, এই সংঘর্ষ কতদূর গড়াবে? ইসরায়েল কি তাদের বিমান হামলা বাড়াবে, নাকি কূটনৈতিক চাপে সীমিত রাখবে? হুতিরা কি নতুন ধরনের আরও উন্নত অস্ত্র ব্যবহার করবে? আর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কি এই সংঘাত ঠেকাতে কার্যকর উদ্যোগ নেবে, নাকি তারা শুধু উদ্বেগ প্রকাশেই সীমাবদ্ধ থাকবে?