প্রথম প্রান্তিকে জিডিপি প্রবৃদ্ধি প্রত্যাশার চেয়ে বেশি
ভারতের প্রধান অর্থনৈতিক উপদেষ্টা (সিইএ) অনন্ত নাগেশ্বরন জানিয়েছেন, ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য দেশের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস ৬.৩ থেকে ৬.৮ শতাংশের মধ্যে অপরিবর্তিত রয়েছে। শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য দেন।
এপ্রিল-জুন প্রান্তিকে ভারতের জিডিপি প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ৭.৮ শতাংশে, যা ব্লুমবার্গ পর্যবেক্ষণে বিশ্লেষকদের অনুমিত ৬.৭ শতাংশের চেয়ে বেশি। এটি ছিল গত পাঁচ প্রান্তিকের মধ্যে সর্বোচ্চ প্রবৃদ্ধি।
শুল্কের প্রভাব দ্বিতীয় প্রান্তিকে বেশি পড়বে
নাগেশ্বরন বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত উচ্চ আমদানি শুল্কের প্রভাব সাময়িক হবে। এই প্রভাব মূলত জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে বেশি দেখা যাবে। তার মতে, অর্থনৈতিক গতি দ্বিতীয় প্রান্তিকেও অব্যাহত থাকবে, যদিও পূর্ণ বছরের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৬.৩–৬.৮ শতাংশের মধ্যেই সীমিত থাকবে।
ভোগব্যয় বাড়ার সম্ভাবনা
সিইএ জানান, সামগ্রিকভাবে অভ্যন্তরীণ চাহিদা শক্তিশালী থাকবে এবং সেপ্টেম্বর মাসে ভোগব্যয় বাড়তে পারে। শুল্কের সুনির্দিষ্ট প্রভাব নির্ধারণ কঠিন হলেও তিনি মনে করেন এটি দীর্ঘস্থায়ী হবে না।
২৭ আগস্ট থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ভারতীয় রপ্তানির ওপর সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। তবে তিনি আশা প্রকাশ করেন যে এ শুল্ক-বিরোধ দ্রুত সমাধান হবে।
শিল্পক্ষেত্রে সামঞ্জস্য আনার চেষ্টা
নাগেশ্বরন জানান, ভারতীয় শিল্পখাত ইতোমধ্যে শুল্কের বোঝা সামলাতে পদক্ষেপ নিয়েছে। কোম্পানিগুলো খরচের একটি অংশ রপ্তানি শৃঙ্খলে বণ্টন করছে, কিছু খরচ নিজেরা বহন করছে এবং বিকল্প বাজার খুঁজছে যাতে নির্ভরশীলতা কমে। তিনি মনে করেন শুল্কের প্রভাব কিছু নির্দিষ্ট উৎপাদন খাতে সীমিত থাকবে।
তিনি স্বীকার করেন যে কিছু ঝুঁকি রয়েছে, তবে প্রভাব আশঙ্কার চেয়ে কম হতে পারে। ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে আলোচনা চলছে এবং অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক সাময়িক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। শক্তিশালী ভোগব্যয় আংশিকভাবে এ প্রভাবকে কাটিয়ে উঠতে সহায়তা করবে।
আর্থিক শৃঙ্খলার প্রতিশ্রুতি
সিইএ বলেন, সরকার ২০২৬ অর্থবছরে আর্থিক শৃঙ্খলা বজায় রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এ বক্তব্য গুরুত্বপূর্ণ, কারণ সেপ্টেম্বরে জিএসটি কাউন্সিলে কর স্ল্যাব হ্রাস নিয়ে সিদ্ধান্ত হওয়ার কথা।
প্রস্তাব অনুযায়ী, ১২ শতাংশ ও ২৮ শতাংশ কর-স্ল্যাব বাতিল হতে পারে এবং অধিকাংশ পণ্য ও সেবাকে ৫ শতাংশ ও ১৮ শতাংশ কর-স্ল্যাবের আওতায় আনা হবে। এই প্রস্তাব নিয়ে ৩-৪ সেপ্টেম্বর দিল্লিতে বৈঠক করবে জিএসটি কাউন্সিল।
নাগেশ্বরন উল্লেখ করেন, প্রতিকূল পরিস্থিতি সত্ত্বেও সরকার রাজস্ব ঘাটতি কমিয়েছে। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কর-সুবিধা অর্থনীতিতে চাহিদা বাড়াবে এবং বহিঃবিশ্বের অনিশ্চয়তা মোকাবেলায় সহায়তা করবে।
শুল্কের প্রভাব সাময়িক, পূর্ণ বছরের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৬.৩–৬.৮%-এ অপরিবর্তিত: সিইএ
-
সারাক্ষণ রিপোর্ট
- ১২:৩৬:১৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩০ অগাস্ট ২০২৫
- 57
জনপ্রিয় সংবাদ