যুদ্ধে লিপ্ত থাকায় সোভিয়েত ইউনিয়নকে পূর্বাঞ্চলের সীমান্ত সংরক্ষণে এক্সট্রা-অর্ডিনারি ব্যবস্থা নিতে হয় না।
অপরদিকে, চীন-জাপান বিচ্ছিন্ন যুদ্ধ-পর্ব তুঙ্গে উঠে এবং ১৯৩৭ সালের সাত জুলাই বেজিং-য়ের নিকটে অবস্থিত “মার্কো পোলো ব্রিজ ইনসিডেন্ট” নামে পরিচিত ‘ঘটনার’ মাধ্যমে জাপান চীনের বিরুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। শুরু হয় দ্বিতীয় “চীন-জাপান” যুদ্ধ: সঙ্গে বিচ্ছিন্ন যুদ্ধও অব্যাহত থাকে। চিয়াং কাই শেকের চীন জাপানি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সাহায্যের আবেদন করেন।
কিন্তু একমাত্র সোভিয়েত ইউনিয়নই সেই আবেদনে সাড়া দেয় এবং ১৯৩৭ সালের আগস্ট মাসে একটি চুক্তি সই হয়। “দ্বিতীয় ইউনাইটেড ফ্রন্টের” মাধ্যমে কুমিনটং ও কমিউনিস্ট পার্টি জাপানের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে সক্ষম বলে সোভিয়েত ইউনিয়নের চুক্তি সই করা সহজ হয়। আরেকটি সুবিধা হয় যে সোভিয়েত ইউনিয়নের সাহায্য পাওয়াতে চীন জাপানের বিরুদ্ধে যথার্থভাবে যুদ্ধে লিপ্ত থাকায় সোভিয়েত ইউনিয়নকে পূর্বাঞ্চলের সীমান্ত সংরক্ষণে এক্সট্রা-অর্ডিনারি ব্যবস্থা নিতে হয় না। এই চুক্তি অনুযায়ি সোভিয়েত ইউনিয়ন অজস্র অফুরন্ত পরিমাণের অস্ত্রশস্ত্র, গোলাবারুদ, ট্রেনিং ও অন্যান্য সাপ্লাই সরবরাহ করে।
এই “মার্কো পোলো ব্রিজ ইনসিডেন্ট” (যুদ্ধ না বলে ‘ইনসিডেন্ট’ বলার কারণ হলো যে যুদ্ধরত দুই পার্টির কেউই আনুষ্ঠানিকভাবে যুদ্ধ ঘোষণা করেনি) তথা যুদ্ধে জাপানি বাহিনী খু-উ-ব ভালো করতে থাকে। ১৯৩৭ সালে বেজিং, শাংহাইসহ রাজধানী নানজিং জাপানের দখলে চলে যায়। (এই নানজিনেই “রেইপ অব নানজিং” ঘটে)। নানজিং থেকে রাজধানী সরিয়ে চীনের অভ্যন্তরে “চংকিং” (চুংকিং)-য়ে নিয়ে আসা হয়।
চিয়াং কাই শেকের লিডারশিপে চীনের কমিউনিস্ট পার্টির সেনাবাহিনী “তাইইয়ুআন” (Battle of Taiyuan) যুদ্ধে ও “উহান যুদ্ধে” অংশ নেয়। কিন্তু জাপানিদের দুর্ধর্ষ আক্রমণের চাপে ‘সম্মিলিত বাহিনী’ পরাজিত হয়। চীনাদের জন্য “মার্কো পোলো ব্রিজ ইনসিডেন্ট” যুদ্ধ ছিল “প্রতিরোধ যুদ্ধ”। কিন্তু এই প্রতিরোধ যুদ্ধে চিয়াং কাই শেকের বাহিনী ও কমিউনিস্ট বাহিনীর মধ্যে বাস্তব সমন্বয়সাধন হয়নি বলা চলে। চিয়াং কাই শেকের বাহিনী মূলত বড়ো বড়ো শহরাঞ্চলে ‘কনভেনশনাল’ যুদ্ধ করে এবং জাপানি বাহিনী সেগুলো দখল করে নেয়; অপরদিকে কমিউনিস্ট বাহিনী বড়ো শহরাঞ্চলের বাইরে “অন্তর্ঘাত” ও “গেরিলা” যুদ্ধকৌশল অবলম্বন করে।
(চলবে)
নাঈম হক 



















