০৫:১২ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ডলার দুর্বল, ফেডের সুদের হার কমানো ঘিরে অনিশ্চয়তা

সংক্ষিপ্ত চিত্র

  • • মুদ্রাস্ফীতির তথ্য প্রত্যাশিত থাকলেও বাজারের দৃষ্টিভঙ্গি অপরিবর্তিত
  • • আগস্ট মাসের চাকরির তথ্য প্রকাশ হবে আগামী সপ্তাহে
  • • ট্রাম্প ও ফেড গভর্নর লিসা কুককে ঘিরে আইনি দ্বন্দ্ব বাজারে প্রভাব ফেলছে
  • • ফেডের স্বাধীনতা নিয়ে বিনিয়োগকারীদের শঙ্কা

ডলারের পতন

শুক্রবার নিউইয়র্কে ডলার ইউরো ও সুইস ফ্রাঁর বিপরীতে দুর্বল হয়েছে। আগস্ট মাসে বিভিন্ন মুদ্রার বিপরীতে ডলার প্রায় ২ শতাংশ কমেছে। বাজারজুড়ে ধারণা, আগামী সেপ্টেম্বর মাসে ফেডারেল রিজার্ভ সুদের হার কমাবে।

শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য দপ্তর জানায়, জুলাই মাসে ব্যক্তিগত ভোগব্যয় মূল্যসূচক (PCE) বেড়েছে ০.২ শতাংশ, জুনে যা ছিল ০.৩ শতাংশ। এই তথ্য সুদের হার কমানোর প্রত্যাশাকে আরও জোরদার করেছে। সিএমই ফেডওয়াচ টুল অনুসারে, সেপ্টেম্বর ১৬-১৭ তারিখের বৈঠকে হার কমার সম্ভাবনা এখন ৮৭ শতাংশে দাঁড়িয়েছে, যা এক মাস আগে ছিল ৬৩ শতাংশ।

ডলার সূচক ০.০৯ শতাংশ কমে ৯৭.৮০৩ এ দাঁড়ায়। সিটি ব্যাংকের ড্যান টোবন বলেন, “বিনিয়োগকারীরা আগামী ৫ সেপ্টেম্বরের শ্রমবাজারের তথ্যের অপেক্ষায় আছেন।”

বাজারের মানসিক চাপ

মেসিরো কারেন্সি ম্যানেজমেন্টের সিনিয়র বিনিয়োগ কৌশলবিদ উটো শিনোহারা জানান, ভোক্তা আস্থার দুর্বলতা বাজারে চাপ তৈরি করছে। আগস্টজুড়ে শেয়ারবাজারে উত্থানের পর মাসশেষে বিনিয়োগকারীরা পুনর্বিন্যাস ও হেজিংয়ে ব্যস্ত।

এদিকে, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ফেড নীতিতে হস্তক্ষেপের প্রচেষ্টা ডলারকে চাপে ফেলেছে। ফেড গভর্নর লিসা কুককে বরখাস্ত করার চেষ্টা ঘিরে ট্রাম্প আইনি লড়াইয়ে জড়িয়েছেন। এক ফেডারেল বিচারক শুক্রবার জানান, কুককে সাময়িকভাবে অপসারণ ঠেকাতে দ্রুত শুনানির সূচি নির্ধারণ করা হবে।

ফেডকে ঘিরে রাজনৈতিক চাপ

ট্রাম্প ফেডকে পুনর্গঠনের চেষ্টা করছেন এবং তিনি প্রায়ই চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েলকে সমালোচনা করেছেন। ফেড গভর্নর ক্রিস্টোফার ওয়ালার, যাকে ট্রাম্প পরবর্তী ফেড চেয়ারম্যান হিসেবে বিবেচনা করছেন, বৃহস্পতিবার বলেছেন তিনি আগামী মাস থেকে সুদের হার কমানো শুরু করতে চান এবং আরও কাটছাঁট আশা করছেন।

সিটির টোবনের মতে, নীতিগত ঘোষণায় ফরেক্স বাজারে প্রতিক্রিয়া তুলনামূলকভাবে সীমিত, সম্ভবত গ্রীষ্মকালীন লেনদেন কম থাকার কারণে। তবে তিনি মনে করেন আসল গুরুত্ব থাকবে আসন্ন অর্থনৈতিক তথ্যের ওপর।

ইউরোপের মুদ্রাস্ফীতি

ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সমীক্ষায় দেখা গেছে, ইউরোজোন ভোক্তারা জুলাই মাসে মুদ্রাস্ফীতির প্রত্যাশা মূলত ২ শতাংশের কাছাকাছি ধরে রেখেছেন। শুক্রবার প্রকাশিত তথ্যে দেখা যায়, ফ্রান্সের ভোক্তা মূল্য সামান্য কম বেড়েছে, আর স্পেনের ইইউ-সমন্বিত বার্ষিক হার স্থির থেকেছে ২.৭ শতাংশে।

ইউরো ০.১১ শতাংশ বেড়ে দাঁড়ায় ১.১৬৯৬ ডলারে, আর পাউন্ড প্রায় অপরিবর্তিত থেকে ১.৩৫০২ ডলার। তবে মাসজুড়ে উভয়ই ২ শতাংশের বেশি বেড়েছে। ইয়েনের বিপরীতে ডলার সামান্য বেড়ে ১৪৬.৯৮৫ হলেও পুরো মাসে তা ২.৫ শতাংশ কমেছে। সুইস ফ্রাঁর বিপরীতে ডলার ০.২৬ শতাংশ কমে দাঁড়ায় ০.৭৯৯৭, যা মাসজুড়ে ১.৩ শতাংশ নিম্নমুখী।

অন্যান্য মুদ্রা

নিউজিল্যান্ডের ডলার কিছুটা শক্তিশালী হয়েছে। দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের চেয়ারম্যান নিল কুইগলি পদত্যাগ করেছেন, যা পূর্ববর্তী গভর্নরের আকস্মিক সরে দাঁড়ানোর প্রভাব ঘিরে বিতর্ক তৈরি করেছিল।

চীনের ইউয়ান ডলারের বিপরীতে ১০ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে, কারণ স্থিতিশীল কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতি এবং স্থানীয় শেয়ারবাজারের উত্থান মুদ্রাটিকে সহায়তা করেছে। অন্যদিকে, ভারতের রুপি রেকর্ড নিম্নস্তরে নেমেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চ শুল্ক আরোপের কারণে অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে এই শঙ্কায় রুপি চাপে পড়েছে।

ডলার দুর্বল, ফেডের সুদের হার কমানো ঘিরে অনিশ্চয়তা

০৪:৪৪:৪০ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩১ অগাস্ট ২০২৫

সংক্ষিপ্ত চিত্র

  • • মুদ্রাস্ফীতির তথ্য প্রত্যাশিত থাকলেও বাজারের দৃষ্টিভঙ্গি অপরিবর্তিত
  • • আগস্ট মাসের চাকরির তথ্য প্রকাশ হবে আগামী সপ্তাহে
  • • ট্রাম্প ও ফেড গভর্নর লিসা কুককে ঘিরে আইনি দ্বন্দ্ব বাজারে প্রভাব ফেলছে
  • • ফেডের স্বাধীনতা নিয়ে বিনিয়োগকারীদের শঙ্কা

ডলারের পতন

শুক্রবার নিউইয়র্কে ডলার ইউরো ও সুইস ফ্রাঁর বিপরীতে দুর্বল হয়েছে। আগস্ট মাসে বিভিন্ন মুদ্রার বিপরীতে ডলার প্রায় ২ শতাংশ কমেছে। বাজারজুড়ে ধারণা, আগামী সেপ্টেম্বর মাসে ফেডারেল রিজার্ভ সুদের হার কমাবে।

শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য দপ্তর জানায়, জুলাই মাসে ব্যক্তিগত ভোগব্যয় মূল্যসূচক (PCE) বেড়েছে ০.২ শতাংশ, জুনে যা ছিল ০.৩ শতাংশ। এই তথ্য সুদের হার কমানোর প্রত্যাশাকে আরও জোরদার করেছে। সিএমই ফেডওয়াচ টুল অনুসারে, সেপ্টেম্বর ১৬-১৭ তারিখের বৈঠকে হার কমার সম্ভাবনা এখন ৮৭ শতাংশে দাঁড়িয়েছে, যা এক মাস আগে ছিল ৬৩ শতাংশ।

ডলার সূচক ০.০৯ শতাংশ কমে ৯৭.৮০৩ এ দাঁড়ায়। সিটি ব্যাংকের ড্যান টোবন বলেন, “বিনিয়োগকারীরা আগামী ৫ সেপ্টেম্বরের শ্রমবাজারের তথ্যের অপেক্ষায় আছেন।”

বাজারের মানসিক চাপ

মেসিরো কারেন্সি ম্যানেজমেন্টের সিনিয়র বিনিয়োগ কৌশলবিদ উটো শিনোহারা জানান, ভোক্তা আস্থার দুর্বলতা বাজারে চাপ তৈরি করছে। আগস্টজুড়ে শেয়ারবাজারে উত্থানের পর মাসশেষে বিনিয়োগকারীরা পুনর্বিন্যাস ও হেজিংয়ে ব্যস্ত।

এদিকে, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ফেড নীতিতে হস্তক্ষেপের প্রচেষ্টা ডলারকে চাপে ফেলেছে। ফেড গভর্নর লিসা কুককে বরখাস্ত করার চেষ্টা ঘিরে ট্রাম্প আইনি লড়াইয়ে জড়িয়েছেন। এক ফেডারেল বিচারক শুক্রবার জানান, কুককে সাময়িকভাবে অপসারণ ঠেকাতে দ্রুত শুনানির সূচি নির্ধারণ করা হবে।

ফেডকে ঘিরে রাজনৈতিক চাপ

ট্রাম্প ফেডকে পুনর্গঠনের চেষ্টা করছেন এবং তিনি প্রায়ই চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েলকে সমালোচনা করেছেন। ফেড গভর্নর ক্রিস্টোফার ওয়ালার, যাকে ট্রাম্প পরবর্তী ফেড চেয়ারম্যান হিসেবে বিবেচনা করছেন, বৃহস্পতিবার বলেছেন তিনি আগামী মাস থেকে সুদের হার কমানো শুরু করতে চান এবং আরও কাটছাঁট আশা করছেন।

সিটির টোবনের মতে, নীতিগত ঘোষণায় ফরেক্স বাজারে প্রতিক্রিয়া তুলনামূলকভাবে সীমিত, সম্ভবত গ্রীষ্মকালীন লেনদেন কম থাকার কারণে। তবে তিনি মনে করেন আসল গুরুত্ব থাকবে আসন্ন অর্থনৈতিক তথ্যের ওপর।

ইউরোপের মুদ্রাস্ফীতি

ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সমীক্ষায় দেখা গেছে, ইউরোজোন ভোক্তারা জুলাই মাসে মুদ্রাস্ফীতির প্রত্যাশা মূলত ২ শতাংশের কাছাকাছি ধরে রেখেছেন। শুক্রবার প্রকাশিত তথ্যে দেখা যায়, ফ্রান্সের ভোক্তা মূল্য সামান্য কম বেড়েছে, আর স্পেনের ইইউ-সমন্বিত বার্ষিক হার স্থির থেকেছে ২.৭ শতাংশে।

ইউরো ০.১১ শতাংশ বেড়ে দাঁড়ায় ১.১৬৯৬ ডলারে, আর পাউন্ড প্রায় অপরিবর্তিত থেকে ১.৩৫০২ ডলার। তবে মাসজুড়ে উভয়ই ২ শতাংশের বেশি বেড়েছে। ইয়েনের বিপরীতে ডলার সামান্য বেড়ে ১৪৬.৯৮৫ হলেও পুরো মাসে তা ২.৫ শতাংশ কমেছে। সুইস ফ্রাঁর বিপরীতে ডলার ০.২৬ শতাংশ কমে দাঁড়ায় ০.৭৯৯৭, যা মাসজুড়ে ১.৩ শতাংশ নিম্নমুখী।

অন্যান্য মুদ্রা

নিউজিল্যান্ডের ডলার কিছুটা শক্তিশালী হয়েছে। দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের চেয়ারম্যান নিল কুইগলি পদত্যাগ করেছেন, যা পূর্ববর্তী গভর্নরের আকস্মিক সরে দাঁড়ানোর প্রভাব ঘিরে বিতর্ক তৈরি করেছিল।

চীনের ইউয়ান ডলারের বিপরীতে ১০ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে, কারণ স্থিতিশীল কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতি এবং স্থানীয় শেয়ারবাজারের উত্থান মুদ্রাটিকে সহায়তা করেছে। অন্যদিকে, ভারতের রুপি রেকর্ড নিম্নস্তরে নেমেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চ শুল্ক আরোপের কারণে অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে এই শঙ্কায় রুপি চাপে পড়েছে।