০৯:৩৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ঢাকা (পর্ব-৭৮) রাশিয়া, চীন ও ইরানের মাঝের অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যাবর্তন দেশবাসীকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানালেন তারেক রহমান নরওয়ের বড়দিনে বিতর্কিত খাবার লুটেফিস্কের প্রত্যাবর্তন, ঐতিহ্যেই ফিরছে স্বাদ প্রাচীন ভারতে গণিতচর্চা (পর্ব-৩৪৫) নিউজিল্যান্ডে গ্যাং প্রতীক নিষিদ্ধ: রাস্তায় শান্তি, কিন্তু অপরাধ কি সত্যিই কমল সৌদিতে বিরল তুষারপাতের পর প্রশ্ন: সংযুক্ত আরব আমিরাতেও কি আবার তুষারপাত সম্ভব? যে রিকশায় গুলিবিদ্ধ হন হাদি, সেই চালকের আদালতে জবানবন্দি তারেক রহমানের নেতৃত্বে নির্বাচনে আমরা জয়ী হবো: মির্জা ফখরুল পারমাণবিক সাবমেরিন থেকে কে-৪ ক্ষেপণাস্ত্রের সফল পরীক্ষা ভারতের

নেসলে হঠাৎ সিইও ফ্রেইক্সেকে অপসারণ করল অধস্তন কর্মীর সঙ্গে গোপন সম্পর্কের কারণে

হঠাৎ সিদ্ধান্ত

সুইস খাদ্যপণ্য প্রস্তুতকারী জায়ান্ট নেসলে তাদের সিইও লরেন্ট ফ্রেইক্সেকে হঠাৎ করেই অপসারণ করেছে। অভিযোগ, তিনি অধস্তন এক কর্মীর সঙ্গে রোমান্টিক সম্পর্ক গোপন করেছিলেন। সোমবার কোম্পানি এই তথ্য জানায়। উল্লেখযোগ্যভাবে, এই সিদ্ধান্ত আসে ঠিক এক বছর পর যখন তিনি সিইও পদে আসীন হয়েছিলেন।

নতুন সিইও নিয়োগ

নেসলে জানিয়েছে, ফ্রেইক্সের স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন কোম্পানির অভিজ্ঞ নির্বাহী ফিলিপ নাভরাটিল। তিনি আগে নেসপ্রেসো ইউনিটের প্রধান ছিলেন এবং তাৎক্ষণিকভাবে দায়িত্ব নিয়েছেন।

তদন্তে অনিয়ম ধরা পড়ে

চেয়ারম্যান পল বুলকে এবং লিড স্বাধীন পরিচালক পাবলো ইসলা তদন্তের দায়িত্বে ছিলেন। তারা জানান, ফ্রেইক্সে কোম্পানির আচরণবিধি ভঙ্গ করেছেন। প্রাথমিকভাবে তিনি সম্পর্ক থাকার বিষয়টি অস্বীকার করলেও দ্বিতীয় দফা তদন্তে বিষয়টি প্রমাণিত হয়।

একজন মুখপাত্র জানান, গত বসন্তে কোম্পানির অভ্যন্তরীণ হটলাইনে অভিযোগ ওঠার পর প্রথম তদন্ত শুরু হয়, যা অস্পষ্ট থেকে যায়। পরে দ্বিতীয় দফা তদন্তে বাইরের একটি প্রতিষ্ঠানের সহায়তায় সম্পর্কের সত্যতা নিশ্চিত করা হয়।

কোনো আর্থিক সুবিধা পাচ্ছেন না

নেসলে স্পষ্ট করেছে, ফ্রেইক্সে বরখাস্ত হওয়ার পর কোনো এক্সিট প্যাকেজ বা আর্থিক সুবিধা পাবেন না।

শেয়ারবাজার ও ব্যবসায়িক প্রভাব

এই ঘটনায় নেসলের শেয়ার ইতোমধ্যেই চাপের মধ্যে রয়েছে। গত এক বছরে কোম্পানির শেয়ারমূল্য ১৭% কমেছে, যা প্রতিদ্বন্দ্বী ও বাজারের গড় প্রবৃদ্ধির চেয়ে পিছিয়ে। এ পরিস্থিতি মার্কিন বাণিজ্য শুল্ক ও ভোক্তা বাজারের অস্থিরতার মধ্যে কোম্পানিকে আরও ঝুঁকিতে ফেলছে।

 

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই হঠাৎ পরিবর্তন কোম্পানির মাঝারি মেয়াদের কৌশলগত দিক নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি করবে, যদিও নেসলে জানিয়েছে তাদের লক্ষ্যমাত্রা ও কৌশল অপরিবর্তিত থাকবে।

বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট

শুধু নেসলে নয়, চলতি বছর ইউনিলিভার, ডায়াজিও এবং হার্শির মতো বড় খাদ্য ও ভোক্তাপণ্য কোম্পানিগুলোও শীর্ষ পর্যায়ের ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তনের মুখোমুখি হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রে শীর্ষ নির্বাহীদের ব্যক্তিগত আচরণ বিশেষভাবে আলোচনায় এসেছে। মে মাসে কোলস তাদের সিইও অ্যাশলি বুশানানকে অপসারণ করে, কারণ তিনি এক সরবরাহকারীর সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্ক গোপন রেখে ব্যবসায়িক চুক্তি এগিয়ে নিয়েছিলেন। জুলাইয়ে অ্যাস্ট্রোনোমার এর সিইও অ্যান্ডি বায়রনও এক কনসার্টে কর্মীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ মুহূর্তে ধরা পড়ার পর পদত্যাগ করেন।

ফিলিপ নাভরাটিলের ক্যারিয়ার

নাভরাটিল ২০০১ সালে নেসলে-তে অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষক হিসেবে যোগ দেন। পরে মধ্য আমেরিকায় বিভিন্ন পদে কাজ করেন এবং ২০০৯ সালে হন্ডুরাসে দেশীয় প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেন।
২০১৩ সালে মেক্সিকোতে কফি ও পানীয় ব্যবসার নেতৃত্ব দেন। ২০২০ সালে কোম্পানির কফি কৌশলগত ইউনিটে যোগ দেন। ২০২৪ সালের জুলাইয়ে তিনি নেসপ্রেসোর দায়িত্বে আসেন এবং এ বছরের শুরুতে নির্বাহী বোর্ডে যোগ দেন।

এক বছরের মধ্যে নেসলে-তে টানা দুই সিইও অপসারণ বড় ধরনের প্রশ্ন তুলছে কোম্পানির স্থিতিশীলতা ও নেতৃত্ব ব্যবস্থাপনা নিয়ে। ভোক্তা পরিবেশের চাপ, মার্কিন শুল্ক এবং শেয়ারমূল্যের পতনের মধ্যে নতুন নেতৃত্ব কোম্পানিকে কোথায় নিয়ে যেতে পারে, সেটিই এখন মূল আলোচ্য।

জনপ্রিয় সংবাদ

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ঢাকা (পর্ব-৭৮)

নেসলে হঠাৎ সিইও ফ্রেইক্সেকে অপসারণ করল অধস্তন কর্মীর সঙ্গে গোপন সম্পর্কের কারণে

১১:৫৯:২৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ সেপ্টেম্বর ২০২৫

হঠাৎ সিদ্ধান্ত

সুইস খাদ্যপণ্য প্রস্তুতকারী জায়ান্ট নেসলে তাদের সিইও লরেন্ট ফ্রেইক্সেকে হঠাৎ করেই অপসারণ করেছে। অভিযোগ, তিনি অধস্তন এক কর্মীর সঙ্গে রোমান্টিক সম্পর্ক গোপন করেছিলেন। সোমবার কোম্পানি এই তথ্য জানায়। উল্লেখযোগ্যভাবে, এই সিদ্ধান্ত আসে ঠিক এক বছর পর যখন তিনি সিইও পদে আসীন হয়েছিলেন।

নতুন সিইও নিয়োগ

নেসলে জানিয়েছে, ফ্রেইক্সের স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন কোম্পানির অভিজ্ঞ নির্বাহী ফিলিপ নাভরাটিল। তিনি আগে নেসপ্রেসো ইউনিটের প্রধান ছিলেন এবং তাৎক্ষণিকভাবে দায়িত্ব নিয়েছেন।

তদন্তে অনিয়ম ধরা পড়ে

চেয়ারম্যান পল বুলকে এবং লিড স্বাধীন পরিচালক পাবলো ইসলা তদন্তের দায়িত্বে ছিলেন। তারা জানান, ফ্রেইক্সে কোম্পানির আচরণবিধি ভঙ্গ করেছেন। প্রাথমিকভাবে তিনি সম্পর্ক থাকার বিষয়টি অস্বীকার করলেও দ্বিতীয় দফা তদন্তে বিষয়টি প্রমাণিত হয়।

একজন মুখপাত্র জানান, গত বসন্তে কোম্পানির অভ্যন্তরীণ হটলাইনে অভিযোগ ওঠার পর প্রথম তদন্ত শুরু হয়, যা অস্পষ্ট থেকে যায়। পরে দ্বিতীয় দফা তদন্তে বাইরের একটি প্রতিষ্ঠানের সহায়তায় সম্পর্কের সত্যতা নিশ্চিত করা হয়।

কোনো আর্থিক সুবিধা পাচ্ছেন না

নেসলে স্পষ্ট করেছে, ফ্রেইক্সে বরখাস্ত হওয়ার পর কোনো এক্সিট প্যাকেজ বা আর্থিক সুবিধা পাবেন না।

শেয়ারবাজার ও ব্যবসায়িক প্রভাব

এই ঘটনায় নেসলের শেয়ার ইতোমধ্যেই চাপের মধ্যে রয়েছে। গত এক বছরে কোম্পানির শেয়ারমূল্য ১৭% কমেছে, যা প্রতিদ্বন্দ্বী ও বাজারের গড় প্রবৃদ্ধির চেয়ে পিছিয়ে। এ পরিস্থিতি মার্কিন বাণিজ্য শুল্ক ও ভোক্তা বাজারের অস্থিরতার মধ্যে কোম্পানিকে আরও ঝুঁকিতে ফেলছে।

 

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই হঠাৎ পরিবর্তন কোম্পানির মাঝারি মেয়াদের কৌশলগত দিক নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি করবে, যদিও নেসলে জানিয়েছে তাদের লক্ষ্যমাত্রা ও কৌশল অপরিবর্তিত থাকবে।

বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট

শুধু নেসলে নয়, চলতি বছর ইউনিলিভার, ডায়াজিও এবং হার্শির মতো বড় খাদ্য ও ভোক্তাপণ্য কোম্পানিগুলোও শীর্ষ পর্যায়ের ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তনের মুখোমুখি হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রে শীর্ষ নির্বাহীদের ব্যক্তিগত আচরণ বিশেষভাবে আলোচনায় এসেছে। মে মাসে কোলস তাদের সিইও অ্যাশলি বুশানানকে অপসারণ করে, কারণ তিনি এক সরবরাহকারীর সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্ক গোপন রেখে ব্যবসায়িক চুক্তি এগিয়ে নিয়েছিলেন। জুলাইয়ে অ্যাস্ট্রোনোমার এর সিইও অ্যান্ডি বায়রনও এক কনসার্টে কর্মীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ মুহূর্তে ধরা পড়ার পর পদত্যাগ করেন।

ফিলিপ নাভরাটিলের ক্যারিয়ার

নাভরাটিল ২০০১ সালে নেসলে-তে অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষক হিসেবে যোগ দেন। পরে মধ্য আমেরিকায় বিভিন্ন পদে কাজ করেন এবং ২০০৯ সালে হন্ডুরাসে দেশীয় প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেন।
২০১৩ সালে মেক্সিকোতে কফি ও পানীয় ব্যবসার নেতৃত্ব দেন। ২০২০ সালে কোম্পানির কফি কৌশলগত ইউনিটে যোগ দেন। ২০২৪ সালের জুলাইয়ে তিনি নেসপ্রেসোর দায়িত্বে আসেন এবং এ বছরের শুরুতে নির্বাহী বোর্ডে যোগ দেন।

এক বছরের মধ্যে নেসলে-তে টানা দুই সিইও অপসারণ বড় ধরনের প্রশ্ন তুলছে কোম্পানির স্থিতিশীলতা ও নেতৃত্ব ব্যবস্থাপনা নিয়ে। ভোক্তা পরিবেশের চাপ, মার্কিন শুল্ক এবং শেয়ারমূল্যের পতনের মধ্যে নতুন নেতৃত্ব কোম্পানিকে কোথায় নিয়ে যেতে পারে, সেটিই এখন মূল আলোচ্য।