০৯:৩৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ঢাকা (পর্ব-৭৮) রাশিয়া, চীন ও ইরানের মাঝের অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যাবর্তন দেশবাসীকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানালেন তারেক রহমান নরওয়ের বড়দিনে বিতর্কিত খাবার লুটেফিস্কের প্রত্যাবর্তন, ঐতিহ্যেই ফিরছে স্বাদ প্রাচীন ভারতে গণিতচর্চা (পর্ব-৩৪৫) নিউজিল্যান্ডে গ্যাং প্রতীক নিষিদ্ধ: রাস্তায় শান্তি, কিন্তু অপরাধ কি সত্যিই কমল সৌদিতে বিরল তুষারপাতের পর প্রশ্ন: সংযুক্ত আরব আমিরাতেও কি আবার তুষারপাত সম্ভব? যে রিকশায় গুলিবিদ্ধ হন হাদি, সেই চালকের আদালতে জবানবন্দি তারেক রহমানের নেতৃত্বে নির্বাচনে আমরা জয়ী হবো: মির্জা ফখরুল পারমাণবিক সাবমেরিন থেকে কে-৪ ক্ষেপণাস্ত্রের সফল পরীক্ষা ভারতের

আগস্টে এশিয়ায় পরিশোধিত তেলের আমদানী বেড়েছে

আগস্ট মাসে এশিয়ার অপরিশোধিত তেল আমদানি আবারও বেড়েছে। প্রধান আমদানিকারক দেশ চীন ও ভারত মধ্যপ্রাচ্যের শীর্ষ রপ্তানিকারক দেশগুলো থেকে বেশি তেল কিনেছে।

আগস্টে আমদানি বৃদ্ধি

এলএসইজি অয়েল রিসার্চের তথ্য অনুযায়ী, আগস্টে এশিয়ার দৈনিক আমদানি হয়েছে ২৭.১৮ মিলিয়ন ব্যারেল। জুলাইয়ের তুলনায় এটি বেশি (২৪.৯১ মিলিয়ন ব্যারেল প্রতিদিন) এবং ২০২৪ সালের আগস্টের তুলনায়ও (২৬.৩৯ মিলিয়ন ব্যারেল প্রতিদিন) বেশি। তবে জুন মাসের তুলনায় আগস্টের আমদানি কিছুটা কম ছিল, যখন আমদানি হয়েছিল ২৭.৯৮ মিলিয়ন ব্যারেল প্রতিদিন।

এই বাড়তি আমদানিকে ঘিরে প্রশ্ন উঠছে—এটি কি এশিয়ায় চাহিদা বৃদ্ধির ইঙ্গিত, না কি মূলত দামের ওঠানামার কারণে এ ঘটনা ঘটেছে।

সামগ্রিক প্রবণতা

জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত এশিয়ার গড় আমদানি দাঁড়িয়েছে ২৭.০২ মিলিয়ন ব্যারেল প্রতিদিন। ২০২৪ সালের পূর্ণ বছরের তুলনায় (২৬.৫১ মিলিয়ন ব্যারেল প্রতিদিন) এটি প্রায় ৫.১ লাখ ব্যারেল বেশি। তবে এটি ওপেকের (তেল রপ্তানিকারক দেশগুলোর সংগঠন) চাহিদা বৃদ্ধির পূর্বাভাসের তুলনায় কম।

ওপেকের আগস্ট প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, ২০২৫ সালে এশিয়ায় দৈনিক তেল চাহিদা গড়ে ৭.১ লাখ ব্যারেল বাড়বে। এর মধ্যে চীনে ২ লাখ ব্যারেল এবং ভারতে ২.২ লাখ ব্যারেল বৃদ্ধির আশা করা হয়েছিল।

দামের ভূমিকা

চীন ও ভারত উভয়ই দামের প্রতি সংবেদনশীল ক্রেতা। দাম কমলে তারা বেশি কিনে, আবার দাম বাড়লে কম আমদানি করে। আগস্টে যে তেল আমদানি হয়েছে, সেগুলোর বেশিরভাগই মে থেকে জুনের মধ্যভাগের মধ্যে কেনা হয়েছিল। এ সময় বিশ্ববাজারে দাম ছিল তুলনামূলক নিচু স্তরে।

৫ মে ব্রেন্ট তেলের দাম নেমে গিয়েছিল ব্যারেল প্রতি ৫৮.৫০ ডলারে, যা চার বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। পরে জুনের মধ্যভাগে দাম বেড়ে ৬০ ডলারের মাঝামাঝি স্তরে স্থিতিশীল হয়েছিল। এই দাম চীন ও ভারতের রিফাইনারিগুলোকে বেশি আমদানিতে উৎসাহিত করেছিল, বিশেষত রিফাইনারি মেরামতের মৌসুম শেষ হওয়ার পর।

তবে জুনের শেষের দিকে ইসরায়েল-ইরান সংঘাত এবং যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপের ফলে দাম আবার বেড়ে যায়। ২৩ জুন ব্রেন্ট তেলের দাম পৌঁছে যায় ছয় মাসের সর্বোচ্চ ৮১.৪০ ডলারে। বর্তমানে দাম কিছুটা কমে এশিয়ার বাজারে ব্যারেল প্রতি প্রায় ৬৮.৪০ ডলারে রয়েছে। জুনের তীব্র মূল্যবৃদ্ধির কারণে সেপ্টেম্বরে চীন ও ভারতের আমদানি কিছুটা কমতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে।

ওপেক+ উৎপাদন কমানোর প্রভাব

আগস্টে আমদানি বৃদ্ধির পেছনে আরেকটি কারণ হলো ওপেক+ জোটের আটটি দেশের স্বেচ্ছায় উৎপাদন কমানোর সিদ্ধান্ত থেকে ধীরে ধীরে সরে আসা। এর মধ্যে সৌদি আরব ও রাশিয়া ছিল প্রধান।

আগস্টে সৌদি আরব থেকে এশিয়ার আমদানি বেড়ে হয়েছে দৈনিক ৫.২০ মিলিয়ন ব্যারেল, যা জুলাইয়ের ৪.৭৭ মিলিয়ন ব্যারেলের তুলনায় বেশি এবং মার্চের পর সর্বোচ্চ। রাশিয়া থেকেও আমদানি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩.৪৮ মিলিয়ন ব্যারেল প্রতিদিন।

এছাড়া সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইরাক ও ওমান থেকেও আগস্টে আমদানি বেড়েছে।

সার্বিক চিত্র

মোটের ওপর এশিয়ার অপরিশোধিত তেল আমদানি ২০২৫ সালে সামান্য বেড়েছে, তবে এখনও ওপেকের পূর্বাভাসের নিচে রয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, মূলত দামের ওঠানামাই চীন ও ভারতের আমদানির গতি নির্ধারণ করছে। একই সঙ্গে ওপেক+ দেশগুলোর উৎপাদন কমানোর প্রভাবও ধীরে ধীরে হ্রাস পাচ্ছে।

জনপ্রিয় সংবাদ

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ঢাকা (পর্ব-৭৮)

আগস্টে এশিয়ায় পরিশোধিত তেলের আমদানী বেড়েছে

০৪:০৯:২০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ সেপ্টেম্বর ২০২৫

আগস্ট মাসে এশিয়ার অপরিশোধিত তেল আমদানি আবারও বেড়েছে। প্রধান আমদানিকারক দেশ চীন ও ভারত মধ্যপ্রাচ্যের শীর্ষ রপ্তানিকারক দেশগুলো থেকে বেশি তেল কিনেছে।

আগস্টে আমদানি বৃদ্ধি

এলএসইজি অয়েল রিসার্চের তথ্য অনুযায়ী, আগস্টে এশিয়ার দৈনিক আমদানি হয়েছে ২৭.১৮ মিলিয়ন ব্যারেল। জুলাইয়ের তুলনায় এটি বেশি (২৪.৯১ মিলিয়ন ব্যারেল প্রতিদিন) এবং ২০২৪ সালের আগস্টের তুলনায়ও (২৬.৩৯ মিলিয়ন ব্যারেল প্রতিদিন) বেশি। তবে জুন মাসের তুলনায় আগস্টের আমদানি কিছুটা কম ছিল, যখন আমদানি হয়েছিল ২৭.৯৮ মিলিয়ন ব্যারেল প্রতিদিন।

এই বাড়তি আমদানিকে ঘিরে প্রশ্ন উঠছে—এটি কি এশিয়ায় চাহিদা বৃদ্ধির ইঙ্গিত, না কি মূলত দামের ওঠানামার কারণে এ ঘটনা ঘটেছে।

সামগ্রিক প্রবণতা

জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত এশিয়ার গড় আমদানি দাঁড়িয়েছে ২৭.০২ মিলিয়ন ব্যারেল প্রতিদিন। ২০২৪ সালের পূর্ণ বছরের তুলনায় (২৬.৫১ মিলিয়ন ব্যারেল প্রতিদিন) এটি প্রায় ৫.১ লাখ ব্যারেল বেশি। তবে এটি ওপেকের (তেল রপ্তানিকারক দেশগুলোর সংগঠন) চাহিদা বৃদ্ধির পূর্বাভাসের তুলনায় কম।

ওপেকের আগস্ট প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, ২০২৫ সালে এশিয়ায় দৈনিক তেল চাহিদা গড়ে ৭.১ লাখ ব্যারেল বাড়বে। এর মধ্যে চীনে ২ লাখ ব্যারেল এবং ভারতে ২.২ লাখ ব্যারেল বৃদ্ধির আশা করা হয়েছিল।

দামের ভূমিকা

চীন ও ভারত উভয়ই দামের প্রতি সংবেদনশীল ক্রেতা। দাম কমলে তারা বেশি কিনে, আবার দাম বাড়লে কম আমদানি করে। আগস্টে যে তেল আমদানি হয়েছে, সেগুলোর বেশিরভাগই মে থেকে জুনের মধ্যভাগের মধ্যে কেনা হয়েছিল। এ সময় বিশ্ববাজারে দাম ছিল তুলনামূলক নিচু স্তরে।

৫ মে ব্রেন্ট তেলের দাম নেমে গিয়েছিল ব্যারেল প্রতি ৫৮.৫০ ডলারে, যা চার বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। পরে জুনের মধ্যভাগে দাম বেড়ে ৬০ ডলারের মাঝামাঝি স্তরে স্থিতিশীল হয়েছিল। এই দাম চীন ও ভারতের রিফাইনারিগুলোকে বেশি আমদানিতে উৎসাহিত করেছিল, বিশেষত রিফাইনারি মেরামতের মৌসুম শেষ হওয়ার পর।

তবে জুনের শেষের দিকে ইসরায়েল-ইরান সংঘাত এবং যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপের ফলে দাম আবার বেড়ে যায়। ২৩ জুন ব্রেন্ট তেলের দাম পৌঁছে যায় ছয় মাসের সর্বোচ্চ ৮১.৪০ ডলারে। বর্তমানে দাম কিছুটা কমে এশিয়ার বাজারে ব্যারেল প্রতি প্রায় ৬৮.৪০ ডলারে রয়েছে। জুনের তীব্র মূল্যবৃদ্ধির কারণে সেপ্টেম্বরে চীন ও ভারতের আমদানি কিছুটা কমতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে।

ওপেক+ উৎপাদন কমানোর প্রভাব

আগস্টে আমদানি বৃদ্ধির পেছনে আরেকটি কারণ হলো ওপেক+ জোটের আটটি দেশের স্বেচ্ছায় উৎপাদন কমানোর সিদ্ধান্ত থেকে ধীরে ধীরে সরে আসা। এর মধ্যে সৌদি আরব ও রাশিয়া ছিল প্রধান।

আগস্টে সৌদি আরব থেকে এশিয়ার আমদানি বেড়ে হয়েছে দৈনিক ৫.২০ মিলিয়ন ব্যারেল, যা জুলাইয়ের ৪.৭৭ মিলিয়ন ব্যারেলের তুলনায় বেশি এবং মার্চের পর সর্বোচ্চ। রাশিয়া থেকেও আমদানি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩.৪৮ মিলিয়ন ব্যারেল প্রতিদিন।

এছাড়া সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইরাক ও ওমান থেকেও আগস্টে আমদানি বেড়েছে।

সার্বিক চিত্র

মোটের ওপর এশিয়ার অপরিশোধিত তেল আমদানি ২০২৫ সালে সামান্য বেড়েছে, তবে এখনও ওপেকের পূর্বাভাসের নিচে রয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, মূলত দামের ওঠানামাই চীন ও ভারতের আমদানির গতি নির্ধারণ করছে। একই সঙ্গে ওপেক+ দেশগুলোর উৎপাদন কমানোর প্রভাবও ধীরে ধীরে হ্রাস পাচ্ছে।