০৯:৩৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৮ নভেম্বর ২০২৫
মংলায় নৌকাডুবিতে নিখোঁজ প্রবাসী নারী পর্যটক ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আরও ৮৩৪ জন পাকিস্তানের দুর্ভিক্ষের বছর? প্রতিবন্ধী চাকরিপ্রত্যাশীদের আমরণ অনশন ৬৫ ঘণ্টা অতিক্রম, সরকারের নীরবতা অব্যাহত গণভোটের কোনো সাংবিধানিক ভিত্তি নেই: বিএনপি নেতা আমীর খসরু শাহবাগে শিক্ষকদের সমাবেশ ছত্রভঙ্গে পুলিশের পদক্ষেপের পক্ষে ডিএমপি গণভোটের জন্যে সাত দিনের আলটিমেটাম অগ্রহণযোগ্য: সরকারের সমালোচনায় সালাহউদ্দিন শাহবাগে শিক্ষক-পুলিশ সংঘর্ষে আহত ১২০ জন প্রবল বৃষ্টিতে গাবা ম্যাচ বাতিল, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টি২০ সিরিজ জিতল ভারত চট্টগ্রাম বন্দরে নোঙর করেছে পাকিস্তানি নৌযান ‘পিএনএস সাইফ’

রণক্ষেত্রে (পর্ব-১০৫)

দশম পরিচ্ছেদ

অন্ধকার ঘরটায় হঠাৎ-হঠাৎ এক-এক ঝলক আলো চমকিয়ে দিয়ে বন্দীর দৃষ্টি আকর্ষণ করব, এই ছিল আমার আশা। আর, দেখা গেল, সত্যিই আমার চেষ্টা সফল হয়েছে। এক সময় আমার ওই সন্ধানী আলোর মধ্যে জানলাটায় একজন লোকের আবছা ছায়া দেখা গেল। মনে হল, ঘরের মধ্যে কেউ এসে দাঁড়িয়েছে জানলাটায়।

আলোটা ঠিক কোথেকে আসছে চুবুক যাতে তা বুঝতে পারেন সেই উদ্দেশ্যে আরও কয়েকবার একইভাবে আলো ফেললুম আর বন্ধ করলুম। তারপর আয়নাটা পাশে নামিয়ে রেখে আমি সি’ড়ির ওপর খাড়া হয়ে দাঁড়ালুম, আর আড়মোড়া ভাঙার ভঙ্গিতে হাতদুটোও ওপরে তুললুম। আমি জানতুম, ফৌজী সংকেতের ভাষা অনুযায়ী এর অর্থ ছিল: ‘খেয়াল কর! তৈরি হও!’

ধুলোমাখা টুপি-মাথায়, পিঠে আড়াআড়িভাবে ঝোলানো রাইফেন্দ্রে, কেতাদুরস্ত দু-জন কাদেত গাড়িবারান্দাটার নিচে এসে ক্যাপ্টেনের খোঁজ করল। খবর পেয়ে বাহিনীর কম্যান্ডারের সহকারী একজন নিচু পদের অফিসার বেরিয়ে এল। কাদেত দু-জন অফিসারটিকে স্যালুট করে ওর হাতে একটা প্যাকেট তুলে দিল। বলল:

‘কর্নেল জিখারেভের কাছ থেকে আসছি।’

আমি যেখানে বসেছিলুম সেখান থেকে টেলিফোনের ঝনঝনানি শুনতে পাচ্ছিলুম। সহকারী অফিসারটি টেলিফোনে রেজিমেন্টাল সদরদপ্তরকে ডাকছিল বারবার। বিভিন্ন কোম্পানি থেকে বার্তাবহ হিসেবে জনা চারেক সিপাই স্থানীয় সদরঘাঁটির বাড়িটা থেকে ছুটে বেরিয়ে গ্রামের চারদিকের প্রান্তে দৌড়ে চলে গেল। এর কয়েক মিনিটের মধ্যে গ্রামের প্রান্তের গেটগুলো দেয়া হল খুলে আর দশজন কালো চেহারার কসাক ঘোড়া ছুটিয়ে গ্রাম থেকে বেরিয়ে গেল। যেরকম চটপট, দক্ষতার সঙ্গে স্থানীয় দপ্তরের হুকুম সিপাইরা তামিল করল তা দেখে যেমন অবাক হলুম তেমনি আবার খারাপও লাগল আমার।

নানা ধরনের সিপাই নিয়ে তৈরি শ্বেতরক্ষীদের ওই বাহিনীর সুশৃঙ্খল কাদেত আর সুশিক্ষিত কসাকদের দেখে কেমন ঈর্ষা হচ্ছিল। আমাদের সাহসী কিন্তু বাক্যবাগীশ আর এদের চেয়ে অনেক কম শৃঙ্খলাপরায়ণ সৈনিকদের থেকে এরা ছিল কত আলাদা।

 

 

জনপ্রিয় সংবাদ

মংলায় নৌকাডুবিতে নিখোঁজ প্রবাসী নারী পর্যটক

রণক্ষেত্রে (পর্ব-১০৫)

০৮:০০:১০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫

দশম পরিচ্ছেদ

অন্ধকার ঘরটায় হঠাৎ-হঠাৎ এক-এক ঝলক আলো চমকিয়ে দিয়ে বন্দীর দৃষ্টি আকর্ষণ করব, এই ছিল আমার আশা। আর, দেখা গেল, সত্যিই আমার চেষ্টা সফল হয়েছে। এক সময় আমার ওই সন্ধানী আলোর মধ্যে জানলাটায় একজন লোকের আবছা ছায়া দেখা গেল। মনে হল, ঘরের মধ্যে কেউ এসে দাঁড়িয়েছে জানলাটায়।

আলোটা ঠিক কোথেকে আসছে চুবুক যাতে তা বুঝতে পারেন সেই উদ্দেশ্যে আরও কয়েকবার একইভাবে আলো ফেললুম আর বন্ধ করলুম। তারপর আয়নাটা পাশে নামিয়ে রেখে আমি সি’ড়ির ওপর খাড়া হয়ে দাঁড়ালুম, আর আড়মোড়া ভাঙার ভঙ্গিতে হাতদুটোও ওপরে তুললুম। আমি জানতুম, ফৌজী সংকেতের ভাষা অনুযায়ী এর অর্থ ছিল: ‘খেয়াল কর! তৈরি হও!’

ধুলোমাখা টুপি-মাথায়, পিঠে আড়াআড়িভাবে ঝোলানো রাইফেন্দ্রে, কেতাদুরস্ত দু-জন কাদেত গাড়িবারান্দাটার নিচে এসে ক্যাপ্টেনের খোঁজ করল। খবর পেয়ে বাহিনীর কম্যান্ডারের সহকারী একজন নিচু পদের অফিসার বেরিয়ে এল। কাদেত দু-জন অফিসারটিকে স্যালুট করে ওর হাতে একটা প্যাকেট তুলে দিল। বলল:

‘কর্নেল জিখারেভের কাছ থেকে আসছি।’

আমি যেখানে বসেছিলুম সেখান থেকে টেলিফোনের ঝনঝনানি শুনতে পাচ্ছিলুম। সহকারী অফিসারটি টেলিফোনে রেজিমেন্টাল সদরদপ্তরকে ডাকছিল বারবার। বিভিন্ন কোম্পানি থেকে বার্তাবহ হিসেবে জনা চারেক সিপাই স্থানীয় সদরঘাঁটির বাড়িটা থেকে ছুটে বেরিয়ে গ্রামের চারদিকের প্রান্তে দৌড়ে চলে গেল। এর কয়েক মিনিটের মধ্যে গ্রামের প্রান্তের গেটগুলো দেয়া হল খুলে আর দশজন কালো চেহারার কসাক ঘোড়া ছুটিয়ে গ্রাম থেকে বেরিয়ে গেল। যেরকম চটপট, দক্ষতার সঙ্গে স্থানীয় দপ্তরের হুকুম সিপাইরা তামিল করল তা দেখে যেমন অবাক হলুম তেমনি আবার খারাপও লাগল আমার।

নানা ধরনের সিপাই নিয়ে তৈরি শ্বেতরক্ষীদের ওই বাহিনীর সুশৃঙ্খল কাদেত আর সুশিক্ষিত কসাকদের দেখে কেমন ঈর্ষা হচ্ছিল। আমাদের সাহসী কিন্তু বাক্যবাগীশ আর এদের চেয়ে অনেক কম শৃঙ্খলাপরায়ণ সৈনিকদের থেকে এরা ছিল কত আলাদা।