বর্মঢাকা ট্রেনে করে বেইজিং পৌঁছেছেন উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন—দুর্লভ বিদেশ সফরের এই পদক্ষেপ নিজেই একটি শক্তিশালী সংকেত। নিরাপত্তা–কড়াকড়ি, আনুষ্ঠানিক স্বাগত ও প্রোটোকলের ঘনত্ব সবকিছুই দেখায় যে বেইজিং–পিয়ংইয়ং সম্পর্ক নতুন ক্যালেন্ডারে প্রবেশ করছে। সম্ভাব্য বৈঠকে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা, ড্রোন ও আর্টিলারি সরবরাহ, এবং খাদ্য–জ্বালানি সহায়তার বিষয় উঠতে পারে। কিমের ট্রেন–কূটনীতি শাসনব্যবস্থার নিরাপত্তা মনস্তত্ত্ব দেখায়—গতির চেয়ে নিশ্চিততা অগ্রাধিকার।
এমন সফরে আলোচ্যসূচির কেন্দ্রে থাকে নিষেধাজ্ঞা–বেষ্টিত অর্থনীতি ও প্রযুক্তি বিনিময়। পিয়ংইয়ং তার ক্ষেপণাস্ত্র ও স্যাটেলাইট কর্মসূচিতে সহায়ক কম্পোনেন্ট, জ্বালানি ও মেশিনারি চাইতে পারে; বিনিময়ে শ্রম বা খনিজ নিয়ে গুঞ্জন থাকে। বেইজিং আনুষ্ঠানিকভাবে স্থিতিশীলতা জোর দেয়, কিন্তু সীমান্ত বাণিজ্য ও অবকাঠামো সংযোগ বাড়ানোয় আগ্রহী—এটি উত্তর–পূর্ব প্রদেশগুলোর অর্থনীতির জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। মানবিক ত্রাণ ও কৃষি প্রযুক্তি সহায়তাও আলোচনায় থাকতে পারে, কারণ খাদ্য ঘাটতি উত্তর কোরিয়ার স্থায়ী দুর্বলতা।
মুহূর্তে রাশিয়ার সঙ্গে উত্তর কোরিয়ার ঘনিষ্ঠতা আলোচনায় রয়েছে। ইউক্রেন যুদ্ধের পটভূমিতে আর্টিলারি শেল ও মিসাইল ট্রান্সফারের খবর পশ্চিমে উদ্বেগ তৈরি করেছে। চীনের সাথে এই প্রদর্শিত নৈকট্য বার্তা দেয়—পিয়ংইয়ং একাধিক শক্তির সাথে লেনদেন–সক্ষম, ফলে চাপ দিয়ে নীতির পরিবর্তন করানো কঠিন হবে। দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানও মিসাইল–ডিফেন্স ও জোট–সমন্বয় জোরদার করছে। ওয়াশিংটন দেখছে; নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়ন ও কার্গো যাচাইয়ে নতুন চাপ আসতে পারে। এখন।
অস্ত্রশস্ত্র ও ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা বেড়ে গেলে এশিয়া–প্রশান্ত মহাসাগরীয় বাণিজ্য রুটে ঝুঁকি বাড়ে, বীমা–ফ্রেইট খরচ বেড়ে আমদানির চাপ আসে। অন্যদিকে, চীন–উত্তর কোরিয়া সীমান্তে বাণিজ্য জোরদার হলে কাঁচামাল ও সার বাজারে দোলাচল দেখা দিতে পারে। বাংলাদেশে ভোক্তা–বাজারে এর প্রতিফলন হতে পারে, বিশেষত সার, স্টিল ও ইলেকট্রনিক্স কম্পোনেন্টের দামে ওঠানামা আকারে। সুতরাং এই সফরকে কেবল প্রোটোকল নয়, সরবরাহ শৃঙ্খলা ও কূটনীতির দৃষ্টিতেও পড়া দরকার।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















