গুণ করিলে অথবা ভাগ করিলে এবং ভগ্নাংশের দ্বারা যোগ করিলে অথবা বিয়োগ করিলে প্রদত্ত রাশি ধরিয়া লওয়া রাশি দ্বারা গুণ করিলে এবং তাহা দ্বারা ভাগ করিলে নির্ণেয় রাশি বাহির হইবে।
একমাত্রার সরল সমীকরণ
একমাত্রার সরল সমীকরণ নিয়ে প্রাচীন ভারতবর্ষে রীতিমত চর্চা হয়েছিল। এর প্রথম সঠিক নিদর্শন পাওয়া যায় শুভ্র সূত্রে। কিছু কিছু নিদর্শন গ্রীষ্টপূর্বে রচিত স্থানাঙ্গ সূত্রেও পাওয়া যায়। পরবর্তীকালে প্রথম আর্যভট, ব্রহ্মগুপ্ত, শ্রীপতি, দ্বিতীয় ভাস্করাচার্য প্রমুখেরা এ নিয়ে ব্যাপক অথচ পদ্ধতিগতভাবে আলোচনা করেছেন। একমাত্রার সরল সমীকরণ প্রধানতঃ তিনভাগে ভাগ করা যায়। যথা- (ক) একটি অজ্ঞাত রাশিবিশিষ্ট এক মাত্রার সরল সমীকরণ, (খ) দুটি অজ্ঞাতরাশি বিশিষ্ট একমাত্রার সরল সমীকরণ ও (গ) অনেকগুলি অজ্ঞাতরাশি বিশিষ্ট একমাত্রার সরল সমীকরণ।
(ক) দ্বিতীয় ভাস্করাচার্য একটি অজ্ঞাত রাশিবিশিষ্ট একমাত্রার সরল সমীকরণ সমাধানের জন্য অনেক পদ্ধতির উল্লেখ করেছেন। ইষ্টকর্ম পদ্ধতি হচ্ছে এগুলির মধ্যে একটি। তিনি লীলাবতীতে প্রথমে ‘ইষ্টকর্ম’ পদ্ধতির সংজ্ঞা দেন, তারপর উদাহরণ সহযোগে এটি আরও সহজ করে তোলেন।
তিনি বলেন’,
“অথেষ্ট কর্মস্থ করণ সূত্রং বৃত্তম্। উদ্দেশকালাপবদিষ্ট রাশিঃ ক্ষুরো হৃতোহংশৌ রহিতো যুতো বা। ইষ্টাহতং দৃষ্টমনেন ভক্তং রাশির্ভবেদ প্রোক্তমিতীষ্ট কৰ্ম্ম। অনুবাদ-যে কোন রাশি ইচ্ছানুরূপ ধরিয়া লইলেই চলিবে। তাহাকে গুণ করিলে অথবা ভাগ করিলে এবং ভগ্নাংশের দ্বারা যোগ করিলে অথবা বিয়োগ করিলে প্রদত্ত রাশি ধরিয়া লওয়া রাশি দ্বারা গুণ করিলে এবং তাহা দ্বারা ভাগ করিলে নির্ণেয় রাশি বাহির হইবে। ইহাকেই ইষ্টকর্ম বলা হয়।
অত্রোন্দেশকঃ। পঞ্চম স্বত্রিভাগোনো দশভক্তঃ সমন্বিতঃ।
রাশ্যিশদ্ধপদৈঃ শ্যাৎ কো রাশিছন সপ্ততিঃ।
অনুবাদ-উদাহরণ: এমন কোন সংখ্যা আছে, যাহাকে পাঁচ দ্বারা গুণ করিয়া গুণফলের সহিত মূল সংখ্যার উ, ই, অংশ যোগ করিলে দুই কম সত্তর পাওয়া যায়।
(চলবে)
প্রাচীন ভারতে গণিতচর্চা (পর্ব-২৮৫)
প্রদীপ কুমার মজুমদার 



















