বার্মামুখি অগ্রসর হতে থাকে এবং ১৯৪২ সালের জানুয়ারি মাসে বার্মায় প্রবেশ করে ও বার্মা দখল করে।
স্বয়ং প্রেসিডেন্ট রুজভেল্ট তাঁর “ফায়ারসাইড চ্যাট ১৯” (নয় ডিসেম্বর ১৯৪১ সাল)-য়ে জাতিকে অবহিত করে বলেন যে বর্তমানে চীন অত্যন্ত নাজুক। অবস্থার মধ্যে রয়েছে; “জাপানিরা অচিরেই হয়তো বার্মা-রোডও বন্ধ করে দেবে, কিন্তু আমি চীনের দুঃসাহসিক জনগণকে বলতে চাই যে জাপানিদের।
অগ্রগতি যতো ভয়ঙ্কর রকমের শ্বাসরুদ্ধকরই হোক না কেনো- চানের সেনাবাহিনীকে বিমান ও অস্ত্রশস্ত্র, গোলাবারুদ সরবরাহের পন্থা আমরা অবশ্যই বের করে নেব।” এই একই সাল তারিখে চিয়াং কাই শেক অ্যাংলো-আমেরিকান মৈত্রীজোটে যোগদান করেন। চীন-জাপান যুদ্ধ বৃহত্তর প্রশান্ত মহাসাগরীয় থিয়েটারের অংশে পরিণত হয়। ১৯৪২ সালে মৈত্রীজোটের অংশিদার হিসেবে জেনেরালিসিমৌ চিয়াং কাই শেক চীনা-থিয়েটারের “অ্যালায়েড কমান্ডার-ইন-চিফ” হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তাঁর বিশাল সেনাবাহিনী চীনের রণক্ষেত্রগুলোতে ‘বুটস অন দি গ্রাউন্ডস’ যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়।
ইত্যবসরে একই সালের ডিসেম্বর মাসে জাপান বিনাযুদ্ধে থাইল্যান্ড দখলের পরে, বার্মামুখি অগ্রসর হতে থাকে এবং ১৯৪২ সালের জানুয়ারি মাসে বার্মায় প্রবেশ করে ও বার্মা দখল করে। অনিবার্যভাবেই জাপানিরা উপ-প্রায়োরিটির ‘হোমওয়ার্ক’ হিসেবে “বার্মা-রোড”-কে সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে দেয়। সাপ্লাই প্রাপ্তির শেষ ভরসাটি চীনের জন্য রুদ্ধ হয়ে যায়। ব্রিটিশ বাহিনীর এই ব্যর্থতা মৈত্রীজোটের প্রাথমিক স্ট্র্যাটেজিকে তথা জাপানের বিরুদ্ধে চীনা প্রতিরোধকে অক্ষুন্ন রাখতে লজিস্টিক ও বিমান সাপোর্টকে বিষম ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় নিয়ে আসে।
বার্মা কিন্তু তখন দস্তুরমতো ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের উপনিবেশ। ১৮২৫, ১৮৫২ ও ১৮৮৫ সালে- বার্মাকে বশে আনতে ব্রিটিশরা সাকুল্যে তিনটি যুদ্ধ করে এবং ১৮৮৫ সালে শেষ বর্মী রাজা সম্রাট থিবো মিন’কে পরাজিত করে ও “ব্রিটিশ ভারতের মহারাষ্ট্রের রত্নগিরিতে স্ত্রী রানী সুপালতসহ সম্রাটকে যাবজ্জীবন নির্বাসনে পাঠিয়ে দেয়া হয়”। বার্মা দখলের পরে, প্রথমে বার্মাকে ব্রিটিশ ভারতের ‘প্রদেশ’ হিসেবে সংযুক্ত করা হয়। ১৯৩৮ সালে ব্রিটিশ ভারত থেকে বার্মাকে পৃথক করা হয় এবং সরাসরি ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের উপনিবেশে পরিণত করা হয়।
(চলবে)
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ঢাকা (পর্ব-১৩)
নাঈম হক 



















