দুই ব্যক্তির সঙ্গে জ্ঞাত পরিমাণ রাশির পার্থক্যকে অজ্ঞাত রাশিদ্বয়ের সহগের পার্থক্য দিয়ে ভাগ দিলে ঐ ভাগফলই অজ্ঞাত রাশি।
ইহার সপ্তমাংশের সহিত একের ষষ্ঠাংশ নদীতে জলপান করিতে গিয়াছিল। ইহার অষ্টমাংশের সহিত পদ্মবনে খেলা করিতে গিয়াছিল। দলপতিকে তিনটি হস্তিনীর সহিত দেখা গেল। সেইদলে কতগুলি হস্তী ছিল? বীজগণিতীয় পদ্ধতিতে এটির সমাধান হচ্ছে এইরূপ- যদি নির্ণেয় সংখ্যা=x ধরা যায় তাহলে
![]()
প্রসঙ্গত বলা প্রয়োজন, কোলেব্রুক সাহেব লীলাবতী অনুবাদ করতে গিয়ে এটিকে ভুলে অথবা যে কোন কারণেই হ’ক এড়িয়ে গেছেন। পণ্ডিত জীবানন্দ বিদ্যাসাগর সম্পাদিত লীলাবতীতে এই উদাহরণটি দেখা যায়।
একটি অজ্ঞাত রাশি বিশিষ্ট একমাত্রার সমীকরণ সমাধানের আরও নানা পদ্ধতি আছে। তার মধ্যে একটি পদ্ধতি প্রথম আর্যভট, ব্রহ্মগুপ্ত, দ্বিতীয় ভাস্করাচার্য প্রমুখেরা আলোচনা করেছেন। এ সম্পর্কে প্রথম আর্যভট বলেছেন-
“গুলিকান্তরেণ বিভজেদ্ দ্বয়োঃ পুরুষয়োস্ত রূপকবিশেষম্।
লব্ধং গুলিকামূল্যং সম্ভর্থকৃতং ভবতি তুল্যম্।
অর্থাৎ দুই ব্যক্তির সঙ্গে জ্ঞাত পরিমাণ রাশির পার্থক্যকে অজ্ঞাত রাশিদ্বয়ের সহগের পার্থক্য দিয়ে ভাগ দিলে ঐ ভাগফলই অজ্ঞাত রাশি।
অর্থাৎ বলা যেতে পারে-দুই ব্যক্তির অর্থের পরিমাণ সমান। প্রথম ব্যক্তির কোন অজ্ঞাত রাশির এ পরিমাণ এবং তৎসহ নগদ ৫ একক অর্থ এবং দ্বিতীয় ব্যক্তি ঐ অজ্ঞাত রাশির ৮ পরিমাণ এবং তৎসহ নগদ ঐ একক অর্থেই সমান হলে অজ্ঞাত রাশিটি কত?
আধুনিক বীজগণিতে প্রকাশ করলে দাড়ায়

এই প্রসঙ্গে ব্রহ্মগুপ্ত অষ্টাদশ অধ্যায়ের ৪৩-তম শ্লোকে বলেছেন-
“অব্যক্তান্তরভক্তেং ব্যস্তং রূপান্তরং সমেহব্যক্তঃ।
বর্গাব্যক্তাঃ শোধ্যা যম্মান্ত্রপাণি তদধস্তাত,।”
অর্থাৎ একবর্ণ সমীকরণে রূপদ্বয়ের (constant terms) বিপরীতকে (চিহ্নযুক্ত) অব্যক্তদ্বয়ের সহগের অন্তর দিয়ে ভাগ দিলে অব্যক্ত মান পাওয়া যাবে।
এই প্রসঙ্গে শ্রীপতি বলেছেন-
“অব্যক্ত বিশ্লেষহৃতে প্রতীপ-রূপান্তরেংব্যক্তমিতী ভবেতাম্। স্যারা যতোনাহতভক্তমিচ্ছে-উদাহন্যপক্ষে বিহিতে তথৈব। ”
অর্থাৎ একবর্ণ সমীকরণস্থলে প্রথম এবং দ্বিতীয় পক্ষের বর্ণকে যোগ বা বিয়োগ করিয়া একপক্ষে আনয়ন করিবে এবং রূপরাশিকে ঐ ভাবে অন্যপক্ষে লইয়া যাইবে, অতঃপর অব্যক্তের রূপরাশিদ্বারা বাক্ত রাশিকে ভাগ করিলে অব্যক্তমান পাওয়া যাইবে।
(চলবে)
প্রাচীন ভারতে গণিতচর্চা (পর্ব-২৮৭)
প্রদীপ কুমার মজুমদার 



















