চিনাবাদাম শুধু সুস্বাদুই নয়, এটি মানবদেহের জন্য একটি পুষ্টিকর খাবার। এতে প্রোটিন, স্বাস্থ্যকর চর্বি, ভিটামিন, খনিজ এবং অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট রয়েছে, যা শরীরকে শক্তি জোগায় এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। বিশেষ করে হৃদরোগ প্রতিরোধে চিনাবাদামকে কার্যকর খাবার হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
হৃদরোগে চিনাবাদামের ভূমিকা
চিনাবাদামে থাকে মনো-আনস্যাচুরেটেড এবং পলি-আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট, যা খারাপ কোলেস্টেরল (LDL) কমাতে সাহায্য করে এবং ভালো কোলেস্টেরল (HDL) বাড়ায়। এর ফলে ধমনিতে চর্বি জমে ব্লক তৈরি হওয়ার ঝুঁকি হ্রাস পায় এবং রক্তপ্রবাহ স্বাভাবিক থাকে। নিয়মিত পরিমাণমতো চিনাবাদাম খাওয়া হৃদরোগ, স্ট্রোক এবং উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি কমায়।
দেহের অন্যান্য উপকারিতা
শক্তি জোগায় – চিনাবাদামে প্রচুর প্রোটিন ও ক্যালোরি থাকে, যা শরীরকে দীর্ঘ সময় শক্তি দেয়।
ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক – সঠিক পরিমাণে খেলে ক্ষুধা কমায়, ফলে অতিরিক্ত খাওয়া নিয়ন্ত্রণ হয়।
অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টের উৎস – এতে ভিটামিন ই (E) ও রেসভারাট্রল থাকে, যা বার্ধক্য বিলম্বিত করে এবং কোষকে সুরক্ষা দেয়।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়ক – এতে গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম থাকায় রক্তে শর্করা হঠাৎ বেড়ে যায় না।
কীভাবে খাওয়া ভালো
- ভাজা চিনাবাদাম– লবণ ছাড়া ভাজা চিনাবাদাম সবচেয়ে স্বাস্থ্যকর।
- চিনাবাদামের মাখন (‘peanut butter’)– চিনি ও অতিরিক্ত তেলবিহীন মাখন বেছে নেওয়া উচিত।
- প্রতিদিনের পরিমাণ– প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য দৈনিক এক মুঠো (২৫ থেকে ৩০ গ্রাম) যথেষ্ট। অতিরিক্ত খেলে ওজন বাড়ার ঝুঁকি থাকে।
- খাবারের সাথে– সকালের নাশতায়, বিকেলের নাস্তা হিসেবে বা সালাদের সাথে খাওয়া যেতে পারে।
সতর্কতা
- যাদেরচিনাবাদামে অ্যালার্জি আছে, তাদের একেবারেই খাওয়া উচিত নয়।
- ভাজা বা প্রক্রিয়াজাত চিনাবাদামে অতিরিক্ত লবণ ও তেল এড়ানো ভালো।
চিনাবাদাম একটি সহজলভ্য, সাশ্রয়ী এবং স্বাস্থ্যকর খাবার। হৃদযন্ত্রকে সুস্থ রাখতে, শরীরে শক্তি জোগাতে এবং রোগ প্রতিরোধে চিনাবাদাম কার্যকর ভূমিকা পালন করে। তবে পরিমাণমতো খাওয়া এবং প্রাকৃতিক উপায়ে গ্রহণ করা সবসময়ই শ্রেয়।