নতুন কেনাকাটার রূপ
বেঙ্গালুরুর এক কর্মচঞ্চল ছাত্রাবাসে বসে স্বাক্ষী গুপ্তা ব্যস্ত তার প্রিয় শপিং অ্যাপে। বাবা-মা যে ব্র্যান্ডগুলো ব্যবহার করতেন, তিনি সেগুলো এড়িয়ে যাচ্ছেন। কারণ, সেসব ব্র্যান্ডে কৃত্রিম উপাদানের আধিক্য। পরিবর্তে গুপ্তার শপিং কার্ট ভরে উঠছে হলুদ মেশানো ফেস ওয়াশ, আয়ুর্বেদিক হেয়ার অয়েল এবং জৈব-পচনযোগ্য টিউবের পণ্যে।
গুপ্তার ভাষায়, ‘‘এমনকি উবতানের মতো ঐতিহ্যবাহী জিনিসও এখন আধুনিক টিউবে পাওয়া যাচ্ছে।’’ তিনি উল্লেখ করেন, মামাআর্থের মতো স্টার্ট-আপগুলো এসব ঐতিহ্যকে আধুনিক রূপে হাজির করছে। তার মতে, ‘‘এগুলো দীর্ঘস্থায়ী, ত্বকের জন্য ভালো এবং পরিবেশবান্ধব।’’
ব্যক্তিগত রুচি থেকে সামাজিক প্রবণতা
গুপ্তার ব্যক্তিগত পছন্দ আসলে বৃহত্তর এক প্রবণতার প্রতিফলন। প্রসাধনী থেকে শুরু করে প্যাকেটজাত খাবার কিংবা গৃহস্থালি সামগ্রী—সব ক্ষেত্রেই ভারতের জেনারেশন জেড (মধ্য নব্বইয়ের দশক থেকে ২০১০-এর শুরুর দিকে জন্ম নেওয়া তরুণ প্রজন্ম) ভোক্তাবাজারে বড় ধরনের পরিবর্তন আনছে।
ভিন্ন চাহিদার প্রজন্ম
মুম্বাইয়ের উপকণ্ঠের শহর থানে-য় দেখা যায় শিক্ষার্থীরা মোবাইল ফোনে নিয়মিত অনলাইনে ঘোরাঘুরি করছে। তারা শুধু কেনাকাটায় সীমাবদ্ধ নয়, বরং পণ্য অনুসন্ধান করছে, কিনছে এবং সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দিচ্ছে। তাদের দাবি—পণ্য হতে হবে স্বচ্ছ, নিরাপদ এবং সংস্কৃতির শিকড়ের সঙ্গে যুক্ত। বহুজাতিক কোম্পানির একরকমের ব্র্যান্ড সংস্কৃতি তারা সোজাসুজি প্রত্যাখ্যান করছে।
ভোক্তা বিপ্লবের ইঙ্গিত
সাম্প্রতিক এক যৌথ প্রতিবেদনে (ডেলয়েট ও ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান চেম্বারস অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি) উঠে এসেছে, নগর ভারতের দুই-তৃতীয়াংশের বেশি ভোক্তা খাবার কেনার আগে উপাদান তালিকা খুঁটিয়ে দেখে। পাশাপাশি প্রায় ৮০ শতাংশ তরুণ কৃত্রিম উপাদান এড়িয়ে চলে।
বিশ্লেষকদের মতে, এই পরিসংখ্যান স্পষ্ট করছে যে ভারতের তরুণ প্রজন্ম শুধু বাজারের চরিত্রই বদলে দিচ্ছে না, বরং এক নতুন ধরনের ভোক্তা বিপ্লবের পথ তৈরি করছে।