০৫:৪৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫

দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট: যুক্তরাষ্ট্রে বিনিয়োগে অনিশ্চয়তা তৈরি করবে রেইড

ঘটনাপ্রবাহ

দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট লি জে মিয়ং বলেছেন, সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়ার একটি হুন্ডাই কারখানায় ব্যাপক অভিবাসন রেইডের পর কোরিয়ান কোম্পানিগুলো যুক্তরাষ্ট্রে বিনিয়োগে দ্বিধাগ্রস্ত হবে। এই ঘটনায় আটক হওয়া ৩০০-এর বেশি দক্ষিণ কোরিয়ান নাগরিককে মুক্তি দেওয়া হয়েছে এবং শুক্রবার দেশে ফেরার কথা রয়েছে।

লি জানান, তাদের দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত বিলম্বিত হয়েছিল হোয়াইট হাউসের নির্দেশে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সাময়িকভাবে ফেরত পাঠানো আটকে দেন, যাতে যাচাই করা যায় তারা যুক্তরাষ্ট্রে থেকে কাজ চালিয়ে যেতে ও আমেরিকানদের প্রশিক্ষণ দিতে রাজি কী না।

প্রেসিডেন্ট লির প্রতিক্রিয়া

প্রেসিডেন্ট লি তার প্রেসিডেন্ট পদে ১০০ দিন পূর্তি উপলক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, পরিস্থিতি অত্যন্ত বিভ্রান্তিকর। সাধারণত কোরিয়ান প্রতিষ্ঠানগুলো বিদেশি কারখানা স্থাপনের সময় কর্মী পাঠায়। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রে তা আর সম্ভব না হলে উৎপাদন কারখানা স্থাপন কঠিন হয়ে উঠবে এবং কোম্পানিগুলো প্রশ্ন তুলবে সেখানে বিনিয়োগ আদৌ যুক্তিযুক্ত কী না।

লি জানান, সিউল বর্তমানে ওয়াশিংটনের সঙ্গে কর্মীদের জন্য ভিসা বিকল্প নিয়ে আলোচনা করছে—কোটা বাড়ানো বা নতুন ভিসা বিভাগ তৈরি করার মতো সমাধান নিয়ে। তার মতে, যুক্তরাষ্ট্র যদি এ বিষয়টিকে বাস্তব প্রয়োজনীয়তা হিসেবে দেখে, তবে তারা পদক্ষেপ নেবে।

রেইডের ঘটনা

গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা জর্জিয়ার বিশাল ব্যাটারি উৎপাদন কারখানায় ৪৭৫ জনকে আটক করেন। এর মধ্যে ৩০০-এর বেশি ছিলেন দক্ষিণ কোরিয়ান নাগরিক। কর্মকর্তারা দাবি করেছেন, তারা অবৈধভাবে কাজ করছিলেন।

এ কারখানাটি হুন্ডাই এবং এলজি এনার্জি সলিউশন্সের যৌথ বিনিয়োগ প্রকল্প। এলজি জানিয়েছে, অনেক কর্মী বৈধ ভিসাধারী বা ভিসা ওয়েভার প্রোগ্রামের আওতায় ছিলেন।

কারখানার এক কর্মী বিবিসিকে জানান, রেইড চলাকালে ব্যাপক আতঙ্ক ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছিল। আটক অধিকাংশ ছিলেন মেকানিক, যারা প্রোডাকশন লাইন বসানোর কাজে নিয়োজিত ছিলেন এবং কন্ট্রাক্টরের অধীনে কাজ করতেন।

কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক প্রভাব

দক্ষিণ কোরিয়া যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্র এবং দেশটি যুক্তরাষ্ট্রে কয়েক দশক বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগের অঙ্গীকার করেছে। আংশিকভাবে শুল্ক মোকাবিলার জন্যও এসব উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তবে এই রেইডকে সিউলের গণমাধ্যমগুলো আঘাত হিসেবে দেখছে। দৈনিক দোং-আ ইলবো সতর্ক করেছে, এ ধরনের ঘটনা যুক্তরাষ্ট্রে কোরিয়ান ব্যবসায়িক কার্যক্রমকে “হিমশীতল” করে দিতে পারে। ইয়নহাপ নিউজ এজেন্সি সম্পাদকীয়ে দুই দেশকে সহযোগিতার মাধ্যমে মিত্রতার ভাঙন রোধের আহ্বান জানিয়েছে।

রেইডের সময়কালও প্রশ্ন তুলেছে, কারণ এই সময়ে দুই দেশ বাণিজ্য নিয়ে সংবেদনশীল আলোচনায় ব্যস্ত।

যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান

হোয়াইট হাউস রেইডের সমর্থন করেছে এবং বিনিয়োগ নিরুৎসাহিত হওয়ার আশঙ্কা উড়িয়ে দিয়েছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প রোববার এক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করে বিদেশি কোম্পানিগুলোকে আমেরিকান কর্মী নিয়োগের আহ্বান জানান।

তিনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র সরকার বৈধ অভিবাসন আইন মেনে চললে বিদেশি কোম্পানিগুলোকে দ্রুত ও আইনসিদ্ধ উপায়ে কর্মী আনার সুযোগ করে দেবে।

দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট: যুক্তরাষ্ট্রে বিনিয়োগে অনিশ্চয়তা তৈরি করবে রেইড

০৬:৫৮:১৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ঘটনাপ্রবাহ

দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট লি জে মিয়ং বলেছেন, সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়ার একটি হুন্ডাই কারখানায় ব্যাপক অভিবাসন রেইডের পর কোরিয়ান কোম্পানিগুলো যুক্তরাষ্ট্রে বিনিয়োগে দ্বিধাগ্রস্ত হবে। এই ঘটনায় আটক হওয়া ৩০০-এর বেশি দক্ষিণ কোরিয়ান নাগরিককে মুক্তি দেওয়া হয়েছে এবং শুক্রবার দেশে ফেরার কথা রয়েছে।

লি জানান, তাদের দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত বিলম্বিত হয়েছিল হোয়াইট হাউসের নির্দেশে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সাময়িকভাবে ফেরত পাঠানো আটকে দেন, যাতে যাচাই করা যায় তারা যুক্তরাষ্ট্রে থেকে কাজ চালিয়ে যেতে ও আমেরিকানদের প্রশিক্ষণ দিতে রাজি কী না।

প্রেসিডেন্ট লির প্রতিক্রিয়া

প্রেসিডেন্ট লি তার প্রেসিডেন্ট পদে ১০০ দিন পূর্তি উপলক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, পরিস্থিতি অত্যন্ত বিভ্রান্তিকর। সাধারণত কোরিয়ান প্রতিষ্ঠানগুলো বিদেশি কারখানা স্থাপনের সময় কর্মী পাঠায়। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রে তা আর সম্ভব না হলে উৎপাদন কারখানা স্থাপন কঠিন হয়ে উঠবে এবং কোম্পানিগুলো প্রশ্ন তুলবে সেখানে বিনিয়োগ আদৌ যুক্তিযুক্ত কী না।

লি জানান, সিউল বর্তমানে ওয়াশিংটনের সঙ্গে কর্মীদের জন্য ভিসা বিকল্প নিয়ে আলোচনা করছে—কোটা বাড়ানো বা নতুন ভিসা বিভাগ তৈরি করার মতো সমাধান নিয়ে। তার মতে, যুক্তরাষ্ট্র যদি এ বিষয়টিকে বাস্তব প্রয়োজনীয়তা হিসেবে দেখে, তবে তারা পদক্ষেপ নেবে।

রেইডের ঘটনা

গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা জর্জিয়ার বিশাল ব্যাটারি উৎপাদন কারখানায় ৪৭৫ জনকে আটক করেন। এর মধ্যে ৩০০-এর বেশি ছিলেন দক্ষিণ কোরিয়ান নাগরিক। কর্মকর্তারা দাবি করেছেন, তারা অবৈধভাবে কাজ করছিলেন।

এ কারখানাটি হুন্ডাই এবং এলজি এনার্জি সলিউশন্সের যৌথ বিনিয়োগ প্রকল্প। এলজি জানিয়েছে, অনেক কর্মী বৈধ ভিসাধারী বা ভিসা ওয়েভার প্রোগ্রামের আওতায় ছিলেন।

কারখানার এক কর্মী বিবিসিকে জানান, রেইড চলাকালে ব্যাপক আতঙ্ক ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছিল। আটক অধিকাংশ ছিলেন মেকানিক, যারা প্রোডাকশন লাইন বসানোর কাজে নিয়োজিত ছিলেন এবং কন্ট্রাক্টরের অধীনে কাজ করতেন।

কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক প্রভাব

দক্ষিণ কোরিয়া যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্র এবং দেশটি যুক্তরাষ্ট্রে কয়েক দশক বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগের অঙ্গীকার করেছে। আংশিকভাবে শুল্ক মোকাবিলার জন্যও এসব উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তবে এই রেইডকে সিউলের গণমাধ্যমগুলো আঘাত হিসেবে দেখছে। দৈনিক দোং-আ ইলবো সতর্ক করেছে, এ ধরনের ঘটনা যুক্তরাষ্ট্রে কোরিয়ান ব্যবসায়িক কার্যক্রমকে “হিমশীতল” করে দিতে পারে। ইয়নহাপ নিউজ এজেন্সি সম্পাদকীয়ে দুই দেশকে সহযোগিতার মাধ্যমে মিত্রতার ভাঙন রোধের আহ্বান জানিয়েছে।

রেইডের সময়কালও প্রশ্ন তুলেছে, কারণ এই সময়ে দুই দেশ বাণিজ্য নিয়ে সংবেদনশীল আলোচনায় ব্যস্ত।

যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান

হোয়াইট হাউস রেইডের সমর্থন করেছে এবং বিনিয়োগ নিরুৎসাহিত হওয়ার আশঙ্কা উড়িয়ে দিয়েছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প রোববার এক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করে বিদেশি কোম্পানিগুলোকে আমেরিকান কর্মী নিয়োগের আহ্বান জানান।

তিনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র সরকার বৈধ অভিবাসন আইন মেনে চললে বিদেশি কোম্পানিগুলোকে দ্রুত ও আইনসিদ্ধ উপায়ে কর্মী আনার সুযোগ করে দেবে।