১০:১৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৫
টেকনাফে পাহাড়ি জমি থেকে চাকমা যুবক অপহরণ মেটার ‘বিশ্বস্ত’ সংস্থার সহায়তায় আমি নিজেই একটি প্রতারণামূলক বিজ্ঞাপন চালিয়েছি কক্সবাজারে পর্যটকের চাপ, সেবা ব্যবস্থায় চাপ বাড়ছে রাজবংশের হাতে গড়া লিংইন মন্দির শুধু দর্শনের জন্য জন্য নয় সরাসরি ইতিহাস পাঠ বন্য প্রাণীর চলাচলে জীবনরেখা ক্যানোপি সেতু, সুনগাই পিনে নতুন আশার গল্প ঘূর্ণিঝড় দিত্বাহর ধ্বংসযজ্ঞের পর শ্রীলঙ্কার পাশে বিশ্বব্যাংক গ্রুপ চীনা ঐতিহ্যেই ব্র্যান্ডের নতুন গল্প, বদলাচ্ছে বিপণনের ভাষা দুর্যোগের আগেই পাশে দাঁড়ায় যে মানবতার শক্তি, মালয়েশিয়ায় ইউনাইটেড শিখসের নীরব সেবা থাইল্যান্ড-কাম্বোডিয়া সীমান্তে উত্তেজনা থামাতে কুয়ালালামপুর বৈঠকের দিকে তাকিয়ে জাপানের পারমাণবিক প্রত্যাবর্তন ফুকুশিমার পনেরো বছর পর আবার চালু হচ্ছে বিশ্বের বৃহত্তম কেন্দ্র

এয়ার ইন্ডিয়া দুর্ঘটনা: ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর মামলা বোয়িং ও হানিওয়েলের বিরুদ্ধে

মামলার পটভূমি

২০২৫ সালের ১২ জুন আহমেদাবাদ বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়নের কয়েক সেকেন্ড পরই লন্ডনগামী এয়ার ইন্ডিয়া ফ্লাইট ১৭১ দুর্ঘটনায় পড়ে। এই মর্মান্তিক ঘটনায় ২৬০ জনের মৃত্যু হয়। নিহতদের মধ্যে চার যাত্রীর পরিবার যুক্তরাষ্ট্রের ডেলাওয়্যার সুপিরিয়র কোর্টে বোয়িং ও হানিওয়েলের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। মামলায় দাবি করা হয়েছে, বিমানের ফুয়েল কাট-অফ সুইচে ত্রুটির কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটে। তবে মার্কিন ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (FAA) বলছে, এই সুইচগুলো দুর্ঘটনার কারণ নয়।

সুইচ ত্রুটি নিয়ে অভিযোগ

বাদীপক্ষ উল্লেখ করেছে, ২০১৮ সালে FAA এক পরামর্শ দিয়েছিল যাতে বোয়িং ৭৮৭ সহ কিছু মডেলের ফুয়েল কাট-অফ সুইচ পরীক্ষা করার সুপারিশ করা হয়। তবে এটি বাধ্যতামূলক করা হয়নি। ভারতের বিমান দুর্ঘটনা তদন্ত ব্যুরো (AAIB)-এর প্রাথমিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এয়ার ইন্ডিয়া এই পরামর্শ অনুযায়ী পরীক্ষা চালায়নি। রক্ষণাবেক্ষণ নথি থেকে জানা যায়, সংশ্লিষ্ট বিমানের থ্রটল কন্ট্রোল মডিউল ২০১৯ ও ২০২৩ সালে পরিবর্তন করা হয়েছিল।

তদন্ত ও কোম্পানির প্রতিক্রিয়া

AAIB-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিমানে প্রয়োজনীয় সব ধরনের নিরাপত্তা নির্দেশনা মেনে চলা হয়েছিল। বোয়িং এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানালেও হানিওয়েল তাৎক্ষণিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।

এদিকে ককপিটের অডিও রেকর্ডে দেখা গেছে, উড্ডয়নের সময় পাইলট নিজেই ফুয়েল প্রবাহ বন্ধ করে দেন। মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, সুইচগুলোর অবস্থান এমন জায়গায় যেখানে ককপিটের স্বাভাবিক কর্মকাণ্ড চলাকালীন অনিচ্ছাকৃতভাবে চাপা পড়ার সম্ভাবনা থাকে। তবে বিমান নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, সুইচগুলোর নকশা ও অবস্থান অনুযায়ী এগুলো ভুল করে চালু হওয়ার সুযোগ নেই।

ক্ষয়ক্ষতি ও নিহতদের পরিচয়

এই দুর্ঘটনায় ২২৯ জন যাত্রী, ১২ জন ক্রু ও মাটিতে থাকা ১৯ জন নিহত হন। মাত্র একজন যাত্রী বেঁচে যান। মামলায় যেসব নিহতের পরিবারের পক্ষে মামলা করা হয়েছে, তারা হলেন কান্তাবেন ধীরুভাই পাঘাদাল, নাভ্যা চিরাগ পাঘাদাল, কুবেরভাই প্যাটেল ও বাবুবেন প্যাটেল। তারা ভারত ও যুক্তরাজ্যের নাগরিক।

দায়-দায়িত্বের প্রশ্ন

প্রাথমিক তদন্তে বোয়িং ও ইঞ্জিন নির্মাতা জিই অ্যারোস্পেসকে দায়মুক্ত করা হলেও কিছু পরিবার ও সমালোচকরা বলছেন, তদন্ত ও সংবাদমাধ্যম অতিরিক্তভাবে পাইলটদের কর্মকাণ্ডের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে। আইন বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো সাধারণত নির্মাতাদের বিরুদ্ধে মামলা করতে বেশি আগ্রহী হয়, কারণ এয়ারলাইন্সের তুলনায় তাদের দায়সীমা কম সীমাবদ্ধ। তাছাড়া, মার্কিন আদালতে মামলা হলে বাদীদের ক্ষতিপূরণের সম্ভাবনা বেশি থাকে।

মামলার তথ্য

মামলাটির নাম দেওয়া হয়েছে: Paghadal et al v Boeing Co et al। এটি ডেলাওয়্যার সুপিরিয়র কোর্টে নথিভুক্ত হয়েছে (মামলা নম্বর: N25C-09-145)। এটি যুক্তরাষ্ট্রে এই দুর্ঘটনা সংক্রান্ত প্রথম মামলা বলে মনে করা হচ্ছে।

জনপ্রিয় সংবাদ

টেকনাফে পাহাড়ি জমি থেকে চাকমা যুবক অপহরণ

এয়ার ইন্ডিয়া দুর্ঘটনা: ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর মামলা বোয়িং ও হানিওয়েলের বিরুদ্ধে

১২:৪০:২৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫

মামলার পটভূমি

২০২৫ সালের ১২ জুন আহমেদাবাদ বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়নের কয়েক সেকেন্ড পরই লন্ডনগামী এয়ার ইন্ডিয়া ফ্লাইট ১৭১ দুর্ঘটনায় পড়ে। এই মর্মান্তিক ঘটনায় ২৬০ জনের মৃত্যু হয়। নিহতদের মধ্যে চার যাত্রীর পরিবার যুক্তরাষ্ট্রের ডেলাওয়্যার সুপিরিয়র কোর্টে বোয়িং ও হানিওয়েলের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। মামলায় দাবি করা হয়েছে, বিমানের ফুয়েল কাট-অফ সুইচে ত্রুটির কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটে। তবে মার্কিন ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (FAA) বলছে, এই সুইচগুলো দুর্ঘটনার কারণ নয়।

সুইচ ত্রুটি নিয়ে অভিযোগ

বাদীপক্ষ উল্লেখ করেছে, ২০১৮ সালে FAA এক পরামর্শ দিয়েছিল যাতে বোয়িং ৭৮৭ সহ কিছু মডেলের ফুয়েল কাট-অফ সুইচ পরীক্ষা করার সুপারিশ করা হয়। তবে এটি বাধ্যতামূলক করা হয়নি। ভারতের বিমান দুর্ঘটনা তদন্ত ব্যুরো (AAIB)-এর প্রাথমিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এয়ার ইন্ডিয়া এই পরামর্শ অনুযায়ী পরীক্ষা চালায়নি। রক্ষণাবেক্ষণ নথি থেকে জানা যায়, সংশ্লিষ্ট বিমানের থ্রটল কন্ট্রোল মডিউল ২০১৯ ও ২০২৩ সালে পরিবর্তন করা হয়েছিল।

তদন্ত ও কোম্পানির প্রতিক্রিয়া

AAIB-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিমানে প্রয়োজনীয় সব ধরনের নিরাপত্তা নির্দেশনা মেনে চলা হয়েছিল। বোয়িং এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানালেও হানিওয়েল তাৎক্ষণিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।

এদিকে ককপিটের অডিও রেকর্ডে দেখা গেছে, উড্ডয়নের সময় পাইলট নিজেই ফুয়েল প্রবাহ বন্ধ করে দেন। মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, সুইচগুলোর অবস্থান এমন জায়গায় যেখানে ককপিটের স্বাভাবিক কর্মকাণ্ড চলাকালীন অনিচ্ছাকৃতভাবে চাপা পড়ার সম্ভাবনা থাকে। তবে বিমান নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, সুইচগুলোর নকশা ও অবস্থান অনুযায়ী এগুলো ভুল করে চালু হওয়ার সুযোগ নেই।

ক্ষয়ক্ষতি ও নিহতদের পরিচয়

এই দুর্ঘটনায় ২২৯ জন যাত্রী, ১২ জন ক্রু ও মাটিতে থাকা ১৯ জন নিহত হন। মাত্র একজন যাত্রী বেঁচে যান। মামলায় যেসব নিহতের পরিবারের পক্ষে মামলা করা হয়েছে, তারা হলেন কান্তাবেন ধীরুভাই পাঘাদাল, নাভ্যা চিরাগ পাঘাদাল, কুবেরভাই প্যাটেল ও বাবুবেন প্যাটেল। তারা ভারত ও যুক্তরাজ্যের নাগরিক।

দায়-দায়িত্বের প্রশ্ন

প্রাথমিক তদন্তে বোয়িং ও ইঞ্জিন নির্মাতা জিই অ্যারোস্পেসকে দায়মুক্ত করা হলেও কিছু পরিবার ও সমালোচকরা বলছেন, তদন্ত ও সংবাদমাধ্যম অতিরিক্তভাবে পাইলটদের কর্মকাণ্ডের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে। আইন বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো সাধারণত নির্মাতাদের বিরুদ্ধে মামলা করতে বেশি আগ্রহী হয়, কারণ এয়ারলাইন্সের তুলনায় তাদের দায়সীমা কম সীমাবদ্ধ। তাছাড়া, মার্কিন আদালতে মামলা হলে বাদীদের ক্ষতিপূরণের সম্ভাবনা বেশি থাকে।

মামলার তথ্য

মামলাটির নাম দেওয়া হয়েছে: Paghadal et al v Boeing Co et al। এটি ডেলাওয়্যার সুপিরিয়র কোর্টে নথিভুক্ত হয়েছে (মামলা নম্বর: N25C-09-145)। এটি যুক্তরাষ্ট্রে এই দুর্ঘটনা সংক্রান্ত প্রথম মামলা বলে মনে করা হচ্ছে।