সেসময়ে হিটলারের “মাইন ক্যাফ (Mein Kampf)” বা “আমার সংগ্রাম” জার্মানদের হাতে হাতে- বাইবেলের মতো ঘুরছে।
জানাতোল প্রনল্লাহণ করেছিলেন ইউক্রেনে। কিন্তু ১৯২২ সালে, এখাছে আগাতোল বাবা মা’র হাত ধরে যুক্তরাষ্ট্রে চলে আসেন এবং ১৯২৯ গালে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব অর্জন করেন। আনাতোলের জীবনস্বপ্ন ছিল সঙ্গীতচি হবেন। তাই ১৯২৯ থেকে ১৯৩৪ সাল পর্যন্ত পাক্কা পাঁচ বছর তিনি পাশ্চায়া মাগসঙ্গীতের অন্যতম ‘মক্কা’ অস্ট্রিয়ার ভিয়েনাতে সঙ্গীত নিয়ে পড়াশুনো করেন।
ভেবেছিলেন যে পিয়ানাবাদক হিসেবে শ্রীবিকানির্বাহ করবেন। সেই মতো প্রথমে জিনি নিউ ইয়র্ক সিটি-তে খু-খ চেষ্টা করেন, কিন্তু ভাগ্যলক্ষ্মীর কৃপা মেলে না। অতঃপর যান মেক্সিকো সিটিতে। সেখানেও পয়সা দিয়ে বাদ্যযন্ত্রের বাজনা শোনার সমঝদার মেলে না। আনাতোল উপলব্ধি করেন যে কনসার্টের পিয়ানোবাদক হয়ে জীবিকানির্বাহ করা কঠিন। অসম্ভব।
আনাতোল এখন তি করবেন? কোনো কূলকিনারা না পেয়ে অগত্যা তিনি শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ে আভারমাজুয়েট ছাত্র হিসেবে নাম লেখান। সেখানে ছাত্র থাকাকালীন সময়ে আমন্ত্রিত হয়ে বিভিন্ন স্থানে সঙ্গীতের উপর লেকচার দেয়ার দিনগুলোতে-“স্পেংলার”-য়ের রচনার সঙ্গে আনাতোলের পরিচিতি ঘটে।
বিশেষ করে স্পেংলারের পাশ্চাতা সঙ্গীত ও গণিতের মধ্যে সাযুজ্য ও মিল রয়েছে বিষয়ক রচনা তাঁকে উদ্দীপ্ত ও কৌতূহলী করে। আনাতোল তখন মনস্থির করেন যে তিনি গণিত নিয়ে পড়বেন। ১৯৩৮ সালে আনাতোল স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করেন এবং প্রাতকোত্তর শ্রেণিতে ভর্তি হন। নিজের স্মৃতিকথায় আনাতোল লেখেন যে “১৯৩৮ সালের নভেম্বর মাসে আমি কমিউনিস্ট পার্টিতে যোগদান করি।”
দ্বিতীয় মহাযুদ্ধ শুরু হয় ১ সেপ্টেম্বর ১৯৩৯ সালে। দ্বিতীয় দফায় আরেকটি মহাযুদ্ধ শুরুর প্রেক্ষাপট ছিল এরকম: ১৯৩৩ সালে অ্যাডল্ফ হিটলার জার্মান রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ ক্ষমতায় আসীন হন। সেসময়ে হিটলারের “মাইন ক্যাফ (Mein Kampf)” বা “আমার সংগ্রাম” জার্মানদের হাতে হাতে- বাইবেলের মতো ঘুরছে।
প্রথম মহাযুদ্ধে পরাজিত জার্মানদেরকে ভার্সাই চুক্তির মাধ্যমে অবমাননাকর ও কঠোর শর্তাবলি আরোপ করে কোণঠাসা অবস্থায় রাখা হয়; হিটলার জার্মানজাতিকে এই বেড়িবন্ধ ভেঙ্গে মুক্ত করার প্রতিশ্রুতি দেন। ফলে, ইউরোপের রাজনৈতিক আকাশে বাতাসে বড়ো মাপের যুদ্ধাশংকা দিনকে দিন বৃদ্ধি পেতে থাকে। একটি বড়োমাপের যুদ্ধ অনিবার্য হয়ে দেখা দেয়; কিন্তু কবে হবে?
এই যুদ্ধ যুদ্ধ আবহাওয়াকে কেন্দ্র করে ইউরোপে নাটকীয় অবস্থার সৃষ্টি হয়। ১৯৩৩ থেকে ১৯৩৯ সালের মধ্যে জার্মান রাইখের সঙ্গে ইউরোপীয় দেশগুলোর চুক্তি সম্পাদনের হিড়িক পড়ে যায়। জার্মানির সঙ্গে প্রথম চুক্তিটি হয় ১৯৩৪ সালের ছাব্বিশে জানুয়ারি: জার্মানি-পোল্যান্ডের মধ্যে; চুক্তির বিষয়: অনাক্রমণ (নন-অ্যাগ্রেশন), অর্থাৎ কেউ কাউকে আক্রমণ করবে না।
দ্বিতীয় চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয় ১৯৩৮ সালের উনত্রিশে সেপ্টেম্বর (২৯.০৯.১৯৩৮); জার্মানির মিউনিক শহরে, চুক্তিপত্রে সই সাবুদ করে জার্মানি, ইতালি এবং ইংল্যান্ড ও ফ্রান্স; চুক্তিটি “মিউনিক চুক্তি” নামে পরিচিত। এই দুই চুক্তির মধ্যবর্তী সময়ে, ফ্রান্সকে বাদ দিয়ে যুক্তরাজ্য এককভাবে ভার্সাই চুক্তির শর্ত লঙ্ঘন করে এবং ১৯৩৫ সালের ১৮ জুন (১৮.০৬.১৯৩৫) জার্মানির সঙ্গে অ্যাংলো-জার্মান ন্যাভাল চুক্তি সম্পাদন করে, যার অর্থ জার্মানি তার নৌবহর সৃষ্টি ও গঠন করতে পারবে।
(চলবে)
নাঈম হক 



















