মুঘল আমলে বাংলায় স্থাপিত তিন রাজধানী ঢাকা, মুর্শিদাবাদ এবং কলকাতার মধ্যে ঢাকা ছিল প্রাচীন।
কয়েক বছর আগে পুরনো এক সাময়িকপত্রে জনৈক গুরু বকস সিং-এর একটি প্রবন্ধ পেলাম- ‘শিখ রেলিকস ইন ইস্টার্ন বেঙ্গল’ এবং তা পড়ে বিস্মিত হলাম। ঢাকা শুধু নয় পূর্ববঙ্গেও শিখদের অনেক গুরু দোয়ারা ছিল যা প্রমাণ করে সারা পূর্ববঙ্গে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে শিখরা বসবাস করতেন যে ইতিহাস আমাদের অজানা। প্রধানত গুরু বখশ সিং ও অন্যান্য তথ্যের সাহায্যে রচিত হলো এই ভুক্তি।
শিখদের ধর্মচর্চার কেন্দ্র থেকে পূর্ববঙ্গ অনেক দূরে এবং অনেকের কাছে বিশ্বাসযোগ্য মনে হবে না যে, পূর্ববঙ্গে এক সময় শিখরা বসবাস করতেন। কিন্তু দেখা যাচ্ছে পশ্চিমে রাজমহল থেকে তখন বাংলার অংশ মনে করা হতো। পূর্বে সিলেট, উত্তরে যুবড়ি (আসাম) থেকে দক্ষিণে বাঁশখালি এবং ফটিকছড়ি পর্যন্ত সারা পূর্ববঙ্গে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ছিল শিখ সঙ্গত এবং মন্দির। কীভাবে তা ঘটল? সে ইতিহাস জানতে হলে একটু পিছিয়ে যেতে হবে।
ইসলাম খাঁ মুঘল সম্রাট জাহাঙ্গীরের সময় ১৬১০ সালে ঢাকায় মুঘল রাজধানীর পত্তন করেন। মুঘল আমলে বাংলায় স্থাপিত তিন রাজধানী ঢাকা, মুর্শিদাবাদ এবং কলকাতার মধ্যে ঢাকা ছিল প্রাচীন। ইসলাম খাঁ ঢাকার নামকরণ করেন জাহাঙ্গীরনগর। তখন কিন্তু বাংলার রাজধানী হিসেবে সোনারগাঁর পরিচিতিই ছিল বেশি।
ঢাকাকে নগর বলা যাবে না যদিও বসতি ছিল প্রাচীন আমল থেকেই। মুঘল রাজধানী হওয়ার পর ঢাকার চেহারাটাই পাল্টে গেল। সোনারগাঁ হয়ে গেল প্রান্তিক। রাজধানী এবং সম্পদশালী নগর হিসেবে ঢাকা পরিচিত হয়ে উঠতে থাকল।
(চলবে)