রেকর্ড গড়ল সোনার দাম
বুধবার সোনার দাম ইতিহাসের সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছেছে। যুক্তরাষ্ট্রে সরকার আংশিকভাবে বন্ধ হয়ে যাওয়ার পাশাপাশি সুদের হার কমতে পারে—এমন প্রত্যাশার কারণে বিনিয়োগকারীরা নিরাপদ আশ্রয় হিসেবে সোনার দিকে ঝুঁকছেন। একই সময়ে দুর্বল ডলারের কারণে সোনা আরও আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে।
স্পট গোল্ডের দাম দুপুরে আউন্স প্রতি ৩,৮৬১.৭৭ ডলারে লেনদেন হয়, যা দিনের মধ্যে সর্বোচ্চ ৩,৮৯৫.০৯ ডলারে পৌঁছেছিল। ডিসেম্বর সরবরাহের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের গোল্ড ফিউচারও বেড়ে ৩,৮৯৭.৫০ ডলারে স্থির হয়।
দুর্বল হলো মার্কিন ডলার
ডলার শীর্ষ মুদ্রাগুলোর বিপরীতে দুর্বল হয়েছে, ফলে আন্তর্জাতিক ক্রেতাদের জন্য ডলারে নির্ধারিত সোনা কেনা সহজ হয়েছে। বাজার বিশ্লেষক এডওয়ার্ড মেইর জানান, সরকার বন্ধ হয়ে গেলে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি ও বাজারে নেতিবাচক মনোভাব ছড়িয়ে পড়ে, যা ডলার ও শেয়ারবাজারকে প্রভাবিত করে।
চাকরি খাতে ধাক্কা
সেপ্টেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রে বেসরকারি খাতে চাকরি ৩২ হাজার কমেছে। আগস্টে এই সংখ্যা ছিল ৩০ হাজার। অথচ অর্থনীতিবিদরা ধারণা করেছিলেন সেপ্টেম্বরে চাকরি ৫০ হাজার বাড়বে। চাকরির এই দুর্বল তথ্যও সোনার চাহিদা বাড়িয়েছে, কারণ দুর্বল অর্থনীতি ও কম সুদের হার সাধারণত সোনার জন্য ইতিবাচক।
সরকার বন্ধের প্রভাব
দলীয় দ্বন্দ্বের কারণে কংগ্রেস ও হোয়াইট হাউস তহবিল চুক্তিতে পৌঁছাতে না পারায় যুক্তরাষ্ট্র সরকারের বড় অংশ বন্ধ হয়ে গেছে। এর ফলে হাজার হাজার সরকারি কর্মসংস্থান ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। এ অবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক সূচকের প্রকাশ বিলম্বিত হতে পারে, যেমন বহুল আলোচিত নন-ফার্ম পেরোলস (NFP) প্রতিবেদন।
কেন সোনা নিরাপদ আশ্রয়
সোনা কোনো সুদ দেয় না, কিন্তু অর্থনৈতিক ও ভূরাজনৈতিক অস্থিরতার সময়ে এটি নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে বিবেচিত হয়। বিশেষত যখন সুদের হার কম থাকে, তখন সোনার আকর্ষণ আরও বাড়ে। বর্তমানে বিনিয়োগকারীরা প্রায় ৯৯ শতাংশ সম্ভাবনা দেখছেন যে ফেডারেল রিজার্ভ এই মাসেই সুদের হার কমাবে।
বিনিয়োগকারীদের “FOMO”
বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন, পশ্চিমা দেশগুলোর প্রাতিষ্ঠানিক ও খুচরা বিনিয়োগকারীরা এখন সোনায় ব্যাপক আগ্রহ দেখাচ্ছেন। একে “FOMO” বা সুযোগ হারানোর ভয়ে বিনিয়োগের প্রবণতা বলা হচ্ছে। এ প্রবণতা অব্যাহত থাকলে সোনার দাম আউন্স প্রতি ৪,০০০ ডলারের উপরে চলে যাওয়া আশ্চর্যের কিছু হবে না।
অন্যান্য মূল্যবান ধাতুর অবস্থান
- • রুপার দাম ১.৬% বেড়ে আউন্স প্রতি ৪৭.৪২ ডলারে পৌঁছেছে, যা গত ১৪ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।
- • প্লাটিনামের দাম ১.৬% কমে ১,৫৪৯.১৭ ডলারে নেমেছে।
- • প্যালাডিয়ামের দাম ১.১% কমে ১,২৪৩.৩১ ডলারে দাঁড়িয়েছে।