কর্মস্থলের অগ্নিকাণ্ডে ৬ জন মহিলার মৃত্যু
মুম্বাইয়ের কান্দিভালী এলাকার একটি ক্যাটারিং ইউনিটে ২৪ সেপ্টেম্বর একটি ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ৬ জন মহিলার মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে ছিলেন শিভানি গাঁধী, রাক্ষা জোশী, দূর্গাবতী গুপ্ত, জনাকি গুপ্ত, নিটু গুপ্ত, এবং পুনিতা গৌতম। এই মহিলারা সবাই মুম্বাইয়ের রাম নগর বস্তির বাসিন্দা ছিলেন এবং শিভানির পরিচালিত ক্যাটারিং ইউনিটে ঘণ্টা ভিত্তিতে কাজ করতেন।
শিভানি ক্যাটারিং সার্ভিসের শুরু
৮ বছর আগে শিভানি গাঁধী ‘শিভানি ক্যাটারিং সার্ভিস’ নামে একটি জনপ্রিয় ক্যাটারিং ইউনিট শুরু করেন, যা মূলত গুজরাটি থেপলা, লাঞ্চ এবং ডিনারের অর্ডার নিত। শিভানি তার শ্রমিকদের প্রতি যত্নবান ছিলেন এবং তাদের দৈনিক টাকা দিয়ে পরিশোধ করতেন। তিনি কখনও কখনও অগ্রিম টাকা দিয়ে থাকতেন, যাতে তাদের বেতন বাড়ি ফেরার সময় হাতের কাছে থাকে।
দুর্ঘটনার দিন
অগ্নিকাণ্ডের সময়, ইউনিটে ৬ জন মহিলা এবং ১ জন পুরুষ কুক ছিলেন। সকালের দিকে একটি গ্যাস সিলিন্ডার থেকে লিকেজ হয়ে যায় এবং কিছু সময়ের মধ্যে আগুন পুরো ইউনিটে ছড়িয়ে পড়ে। শিভানি এবং তার সহকর্মীরা দগ্ধ হন এবং এক সপ্তাহ পর, সবাই মারা যান।
মহিলাদের জীবনের সংগ্রাম
শিভানি, দূর্গাবতী এবং জনাকি, সহ অন্যান্য নিহতরা, জীবনের নানা সংগ্রামে লিপ্ত ছিলেন। দূর্গাবতী, যিনি তার ছেলের শিক্ষার জন্য একটি ঋণ নিয়েছিলেন, প্রায় ৮-১০ ঘণ্টা কাজ করতেন। জনাকি, যিনি তার অসুস্থ স্বামী ও চার সন্তানকে নিয়ে মুম্বাই এসেছিলেন, ১২-১৪ ঘণ্টা কাজ করতেন তাদের চিকিৎসা এবং ভরণপোষণের জন্য। তাদের মতই, অন্যান্য নিহতরা, যারা মুম্বাইয়ের বিভিন্ন এলাকায় বসবাস করতেন, প্রত্যেকেই তাদের পরিবার এবং জীবিকার জন্য লড়াই করছিলেন।
গুরুতর অবস্থা
অগ্নিকাণ্ডের পর, পুলিশ এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ শিভানি এবং দোকানের মালিক মিত্রির বিরুদ্ধে অবহেলার অভিযোগ আনে। এ ঘটনায় ৬ জন মহিলার মৃত্যুর পাশাপাশি, একমাত্র পুরুষ কর্মী, মনরম, ৪০% দগ্ধ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এই ঘটনায় শিভানির পরিবার এবং কর্মীদের জন্য একটি বড় ধাক্কা এসেছে, কিন্তু তাদের সংগ্রামের গল্প এখনও মানবিকতার প্রমাণ দেয়।