শেখার জন্য মার্কিন সৈনিকরা খুব উঠে পড়ে লেগে যান। সেতুর ওপারে জেলা অফিসের পাশ ঘেঁষে চলে গেছে “জি ঘোষ লেইন”
আলোচনার সময়, প্রফেসর করিম আমাকে বলেন যে র্যাপাপোর্টের মতো জওয়ানরা যারা কমিউনিস্ট ছিলেন বা কমিউনিস্ট ভাবাপন্ন ছিলেন, তারা “ভালো লোক”-এর খোঁজ করতেন। কিন্তু “ভালো লোক” খুঁজে পেতে বের করতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়া আর কোনো উৎস ছিল না।
তারা তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবাসগুলোতে সমমনের মানুষের খোঁজ করতেন, পেতেন-ও। এইসব মার্কিন কমিউনিস্ট সৈনিক স্থানীয় কমিউনিস্টদের সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে কমিউনিস্টদের আন্তর্জাতিক প্রতীক ব্যবহার করতেন, অর্থাৎ ডান হাতের আঙুলগুলোকে করতলের মধ্যে চেপে ধরে মুষ্টি সৃষ্টি করে, শব্দহীন জানান দিতেন যে “তোমার মতো আমিও একজন”।
কুর্মিটোলার ডিসপেনসারি। সৌজন্যে: ইউএস ন্যাশনাল আর্কাইভস
একবার, হাত দিয়ে কিভাবে খেতে হয় শেখার জন্য মার্কিন সৈনিকরা খুব উঠে পড়ে লেগে যান। সেতুর ওপারে জেলা অফিসের পাশ ঘেঁষে চলে গেছে “জি ঘোষ লেইন”, স্থানীয় কয়েকজন ছাত্র সেই লেইনের এক বাসাবাড়িতে ভাড়া নিয়ে ‘মেস’-য়ের মতো একত্রে থাকতেন। তারা বাসাটিকে বলতেন “কমিউন”। একবার, কমিউনের বাসিন্দারা মার্কিন সৈনিকদেরকে দুপুরে খাওয়ার নিমন্ত্রণ করেন।
সৈনিকরা নিমন্ত্রণ গ্রহণ করেন এবং সময়মতো খেতেও আসেন। মহা হৈ চৈ করে খাওয়াদাওয়া শুরু হয়; কিন্তু কপাল আর কাকে বলে! খাওয়া দাওয়া যখন মাঝামাঝি অবস্থায় রয়েছে ঠিক সেই সময়টায় সামরিক পুলিশের একটি দল জি ঘোষ লেইনের বাড়িটিতে হানা দেয়। আধ-পেট খাওয়া সব কয়জন মার্কিন সৈনিককে হাতে নাতে গ্রেফতার করে ও সঙ্গে করে নিয়ে চলে যায়।
(চলবে)