“দিল্লির দরবারের সময় শরৎসুন্দরী “মহারাণী” উপাধি লাভ করেন, কিন্তু তিনি খেলাত গ্রহণ করেন নাই। গবর্মমেন্টকে সেই উপলক্ষে জানাইয়া ছিলেন, তিনি বিধবা, সে সম্মান তাহার গ্রহণীয় নহে। মহারাণীর দান এত বিস্তৃত এবং তাহা সাধারণের এত পরিচিত যে তাহার উল্লেখ মাত্রই এখানে যথেষ্ট। কিন্তু তিনি অতি গোপনে নিজের আমলাদেরও অজ্ঞাতে যে সকল দান করেন, আজিকার এই বাহ্যাড়ম্বরের দিনে তাহার কিছু পরিচয় দিতে হইতেছে। আজি পর্যন্ত প্রায় ৪/৫ লক্ষ টাকা দান করিয়াছেন। প্রাতে শয্যাত্যাগ করিবার কিছু পরে বৈষয়িক কাগজপত্র দেখা এবং সংবাদপত্র পাঠ করা তাহার একটা দৈনিক নির্দিষ্ট কার্য। সেই সময় পরিচিত দুঃখী স্ত্রীলোক, বালক এবং বালিকাগণ আসিয়া তাহাকে ঘিরিয়া বসে; কেহ কাঁদিতেছে, ঘরে খাবার নাই, কাহারও কাপড় নাই, কাহারও ছেলের ব্যারাম চিকিৎসা হয় না। সকলেই দুঃখের কান্না কাঁদিতেছে, শুনিতে শুনিতে মহারাণী চক্ষের জল মুছিতেছেন। সকলেরই অভাব মোচন করিতে হইবে, কাহাকেও বিমুখ কার হইবে না। রাজবাটিতে অবশ্য চিকিৎসকের অভাব নাই, ইঙ্গিত মাত্রেই দুঃখিনীর ছেলেটির চিকিৎসা হইতে পারে। কিন্তু মহারাণী অতি গোপনে তাহার হস্তে উপযুক্ত অর্থ দিয়া ডাক্তার আনাইয়া চিকিৎসা করাইতে উপদেশ করেন।”
“কোমল বয়সে স্বামীর যত্নে মহারাণী সামান্য লেখা-পড়া শিখিয়াছিলেন। তাহার পর নিজের যত্ন ও অধ্যবসায়ের গুণে সেই শিক্ষা বিশেষ উৎকর্ষ লাভ করিয়াছে, তাহার নিজের একটি লাইব্রেরী আছে। এদেশে যে কোন সুশিক্ষিতের পক্ষে সেইরূপ পুস্তক রাশির সংগ্রহ সুখ্যাতির কথা। গত বৎসর পর্যন্ত মহারাণী প্রায় সকল বাংলা সাময়িক পত্র গ্রহণ ও পাঠ করিতেন। অনেক বাংলা গ্রন্থকার তাহার উৎসাহ ও অর্থানুকূল্য লাভ করিয়া থাকেন। তাহার প্রতিষ্ঠিত বিদ্যালয় সমূহ তাহার সাহায্যাধীন বিদ্যার্থী নিরাশ্রয় ভদ্র সন্তানের প্রতি তাহার স্নেহ এবং যত্ন মনে করিলে চমৎকৃত হইতে হয়। রাজসাহী কলেজের সুন্দর গৃহগুলি, রেইল প্রভৃতি তাহাদের দুই স্ত্রী পুরুষের অক্ষয় কীর্তি। অন্তঃপুরে বসিয়াও ভারতবর্ষের উন্নতির সূচনা মাত্রে তাহার মনে কেমন আনন্দ, কেমন উৎসাহ জন্মে। আত্ম-শাসন প্রণালী উপলক্ষে গত বৎসর পুঠিয়ার বিরাট সভা তাহার উদাহরণ। সেই সভার পর্দার অন্তরালে মহারাণী স্বয়ং উপস্থিত ছিলেন। বোধহয় অনেকেই জানেন যে আত্মশাসন সম্পর্কে এদেশে সেই প্রথমসভা।”
“মহারাণী শরৎসুন্দরী হিন্দু ধর্মে অনন্ত বিশ্বাসবর্তী। তাহার জীবন হিন্দু ধর্মময়- হিন্দু শাস্ত্রের সকল অনুশাসন তিনি অক্ষরে অক্ষরে প্রতিপালন করিয়া থাকেন। বাল-বিধবা সেই আবল্য, যথাশাস্ত্র ব্রহ্মচর্য অবলম্বন করিয়া জীবন অতিবাহিত করিয়া আসিতেছেন। এই কঠোর ধর্ম ভাবের বলে তাহার স্বস্থ্য চিরদিনের মত ভাঙিয়া গিয়াছে। সেবার গঙ্গাসাগর হইতে ফিরিয়া কলিকাতার প্রাণ সংশয়রূপে পীড়িতা হন। সেই অবদিই প্রায় অসুস্থ। কিন্তু অসুখের কথা সহজে কেহ জানিতে পারে না। সর্বদা অনাবৃত হ্যতলে বসিয়া থাকা তাহার নিয়ম। পীড়ার কষ্ট অসহ্য না হইলে আর শয্যার আশ্রয় গ্রহণ করেন না। সুতরাং পীড়া গুরুতর হইয়া না দাঁড়াইলে কখন তাহার চিকিৎসা হইতে পায় না। নিরাশ্রয়া বিধবা ব্রাহ্মণ কন্যা সংখ্যায় অনেকগুলি বারমাস তাহারা মহারাণীকে ঘেরিয়া বসেন ও নানা প্রকার গল্প করেন। রাত্রে প্রকাণ্ড চাতালে সকলের মধ্যস্থলে সামান্য শয্যায় শয়ন করেন। পালঙ্ক নাই, ইস্প্রিংয়ের গদী নাই, দুগ্ধ যেন নিভ শয্যা নাই, মেজের উপর সেই সামান্য শয্যাতেই মহারাণী সন্তুষ্ট।”
“এক্ষণে কিছুদিন মধ্যে মহারাণী বোধ হয় কাশীবাস করিবেন। তিনি যেখানেই থাকুন, সমগ্র ভারতবাসীরও প্রীতি তাহার সহগামিনী হইবে। ৩৩
মহারাণী শরৎসুন্দরী কেবল যে দীন দুঃখীকে দান এবং স্বধর্ম কার্যে সমস্ত কাল যাপন করিতেন এমত নহে। তিনি বিস্তৃত সম্পত্তির তত্ত্বাবধান কার্যেও অতি নিপুণ ও দক্ষ ছিলেন। বাংলা ১২৭২ সাল হইতে বাংলা ১২৯০ সাল পর্যন্ত আঠার বৎসর তাহার হস্তে সম্পত্তি তত্ত্বাবধানের ভার ছিল। এই কাল মধ্যে তিনি সম্পত্তির অতি সুবন্দোবস্ত করেন এবং প্রায় দশ লক্ষ টাকার সম্পত্তি ক্রয় করিয়া পতির সম্পত্তির সহিত সংযোজিত করেন। তিনি প্রজাগণকে এরূপ স্নেহ সহকারে পালন করিতেন যে প্রজারা তাহাকে মাতার ন্যায় ভক্তি করিত এবং সন্তুষ্ট হইয়া বৃদ্ধিহারে জমা দিতে স্বীকৃত হইয়াছিল। এই ১৮ বৎসর মধ্যে তাহার সম্পত্তির আয় প্রায় দ্বিগুণ বৃদ্ধি হয়। যে ওয়াটসন কোম্পানির সহিত তাহার পতি রাজা যোগেন্দ্রনারায়ণ বিবাদ করিয়া অকালে মৃত্যুমুখে পতিত হন, তিনি সম্পত্তির ভার গ্রহণ করিয়া সেই কোম্পানির সহিত সন্ধি করেন এবং কোন স্থলে আদালতের আশ্রয়ে অতি কৌশলে মীমাংসা করিয়া নির্বিবাদী হন এবং পরম সুখে প্রজা পালনে রত ছিলেন। মহারাণীর অমায়িকতা ও সদ্গুণে শত্রুগণও বশীভূত হইত। ১২৮১ সালের দুর্ভিক্ষে মহারাণী প্রজাগণকে মাতার ন্যায় আহার যোগাইয়া ছিলেন এবং অশক্ত অনেক প্রজার বাকি খাজানা মধ্যেও অনেক টাকা মাপ দিয়া সাধারণে শত সহস্র ধন্যবাদের পাত্রী হইয়াছিলেন। রাজা মহারাজা উল্লেখে মহাত্মা বড়লাট লর্ড কার্জন বাহাদুরের কথায় বলিতে গেলে মহারাণী শরৎসুন্দরী নিজের সুখের জন্য রাজস্ব সংগ্রহ করিতেন না; কিন্তু প্রজার মঙ্গলের জন্য। তিনি নিজ প্রজার যেমন প্রভু ছিলেন তেমনই দাসও ছিলেন। ** এই আদর্শ দৃষ্টে বঙ্গদেশের মহারাজা, রাজা, জমিদারগণ প্রজাপালন করিলে প্রজাগণের সুখের ইয়ত্তা থাকে না। এইরূপ আদর্শের মহারাজা, রাজা, জমিদার আজিকালি ভারতে অতি বিরল। আজি কালি প্রায় মহারাজা, রাজা, জমিদারগণ নিজের সুখের জন্য, নিজ কুটুম্ব প্রতিপালন জন্য, ইংরেজি ধরনের নুতন বিলাসিতা জন্য, প্রজার রক্ত শোষণ করিয়া নিজ নিজ কোষ পুরণ করিয়া আনন্দিত হন। ধর্মভাবের অভাবেই প্রজাগণের দুঃখ হইলে, প্রজাগণ ও জমিদারগণের সুখ দুঃখের ভাগী হইবে তাহার আর সন্দেহ নাই।
বাংলা ১২৯০ সালে তাহার দত্তক পুত্র, কুমার যতীন্দ্রনারায়ণ রায় বাহাদুর বয়ঃপ্রাপ্ত হইলেন।
মহারাণী শরৎসুন্দরী মাতৃভক্ত, বৎসল পুত্রের হস্তে সম্পত্তির ভার অর্পণ করিয়া কাশীধামে গমন করিলেন। কুমার রাজ্যভার গ্রহণ করিয়াও মাতার কিনা আদেশে বা বিনা পরামর্শে কোন কার্য করিবার অল্পদিন পরেই মাতৃভক্ত কুমার মাতৃ দর্শনে কাশীধাম গমন করেন। তথায় তাহার পীড়া করিতেন না। কিন্তু তাহাকে অতি অল্পকাল রাজত্ব করিতে হইয়াছিল। মহারাণী কাশীধাম গমন উপস্থিত হয়। বাংলা ১২৯০ সালের ফাল্গুন মাসে ছয় মাস গর্ভবর্তী পত্নী রাখিয়া কুমার কাশীলাভ করেন। তদপর বাংলা ১২৯১ সালের আষাঢ় মাসে মহারাণীর পুত্রবধূ হেমন্তকুমারী দেবী এক কন্যা প্রসব করেন। পুত্রের পরলোক গমনের পর মহারাণী তাহার পূত্রবধূর আত্মীয়গণকে সমাদরে নিকটে রাখিতেন। এসময় হইতে পুত্রবধূর সহিত তাহার মনান্তর ঘটাইবার জন্য দুইটি দল সৃষ্টি হইল। মহারাণী তাহা জানিতে পারিয়া কিছু দিন তীর্থ-যাত্রা উপলক্ষে রাজ কার্যের সংস্রব ত্যাগ করিতে ইচ্ছা করেন, যদিচ কুমারের মৃত্যুর পর মহারাণীর হস্তে রাজকার্যের ভার অর্পিত ছিল। বাংলা ১২৯২ সালের পৌষ বা মাঘ মাসে মহারাণী তীর্থ পর্যটনে বহির্গত হইলেন। অযোধ্যা, চিত্রকূট, দণ্ডকারণ্য, নৈমিষারণ্য, কুরুক্ষেত্র, হরিদ্বার, কনখল, জ্বালামুখী, মথুরা, বৃন্দাবন প্রভৃতি তীর্থ পর্যটন করিয়া বৈশাখ মাসে কাশীধামে ফিরিয়া আসিলেন। প্রায় সকল তীর্থ দর্শনে নিজ পদব্রজে ১০/১২ ক্রোশে পথ গমন করিয়া কাতর হইলেও তিনি ধর্ম বলে বলীয়ান হইয়া কোন যানে পরমসুখে যাইবার প্রয়াস পান নাই। আত্মীয় ও কর্মচারীদের কৌশলে পুত্রবধূর সহিত মহারাণীর যে মনান্তর চলিতেছিল তাহা তীর্থ হইতে ফিরিয়া আসিয়াও নির্বাপিত হইতে দেখা গেল না। তখন মহারাণী ১২৯৩ সালে পুঁঠিয়া আগমন করিয়া অনেকের অনিচ্ছায় সম্পত্তি বধুরাণীর বয়ঃপ্রাপ্ত কাল পর্যন্ত “কোট অব ওয়ার্ডসের” তত্ত্বাবধানে লইবার জন্য স্বয়ং রাজসাহীর কালেক্টরের নিকট আবেদন কারেন। গবর্ণমেন্টের আদেশের জন্য প্রতীক্ষা করিতে লাগিলেন। বিধবা রাণী হইয়াও ব্রহ্মচারিণী বেশে দিন যাপন করিতেন এবং অনিয়মে নানা রোগের উৎপত্তি হইয়াও তিনি ওষধ সেবন করিতেন না। অর্শ, অম্লপিত্ত, উদরাময়, জ্বর প্রভৃতি রোগের ক্রমে বৃদ্ধি হইয়া তিনি একরূপ শয্যাগত হইলেন। এরূপ শরীরেও তাহার নিয়মিত ধর্মকর্মের বাদ ছিল না বা তিনি কষ্ট বোধ করিতেন না। তখন আর তিনি পুঠিয়ায় থাকিতে পারিলেন না। তিনি ঐরূপ কাতর শরীরে কাশীধামে প্রত্যাগমন করেন। কাশীধামে যাইবার পরও তাহার আর রোগ সমূহ হইতে আরোগ্য লাভের আশা রহিল না। এই সময়ে অর্থাৎ মৃত্যুর পূর্ব দিন টেলিগ্রাম পাইয়া জানিতে পারিলেন যে সম্পত্তি “কোর্ট অব ওয়ার্ডসের” অধীন হইবে না। এই সংবাদ পাইবার পর ১২৯৩ সালের ২৫ ফাল্গুন তারিখে মহারাণী কাশীলাভকরিয়া পুণ্যধামে গমন করেন। তাহার কাশী প্রাপ্তির পর পুত্রবধূ রাণী হেমন্তকুমারী দেবী সম্পত্তির ভার গ্রহণ করেন।
রাণী হেমন্তকুমারী দেবী পতির সম্পত্তির ভারগ্রহণ করার অব্যবহিত পরে তাহার আত্মীয়-স্বজন স্টেটের সর্বময় কর্তা হইয়া বসিলেন। রাণী অল্প বয়স্কা এবং বিষয়-কৌশলতাও তাহার তাদৃশ ছিল না। এমতাবস্থায় ভূসম্পত্তির শাসনকার্য সুচারুরূপে নির্বাহ না হওয়ারই কথা। মহারাণী শরৎসুন্দরীর দয়া, অমায়িকতা এবং সুশাসনের পর রাজ্যের বিশৃঙ্খলতায় অনেক শত্রুর সৃষ্টি হইতে লাগিল। রাজা যোগেন্দ্রনারায়ণ রায়ের মাসীর পুত্র জয়নাথ চক্রবর্তীকে শত্রুপক্ষীয়েরা এই বলিয়া উত্তেজিত করেন যে সম্পত্তির প্রকৃত উত্তরাধিকারী এখন মাসীর পুত্র, যেহেতুক শাস্ত্রের বিধানানুসারে যোগেন্দ্রনারায়ণের দত্তক রাখা হয় নাই। শত্রুদের এইরূপ উত্তেজনায় এবং অনায়াস লব্ধ একটা বৃহৎ রাজ্য লাভের আশায় জয়নাথ রাজসাহীর জজ আদালতে দত্তক পুত্র অসিদ্ধির মোকদ্দমা উপস্থিত করিলেন। জয়নাথের মৃত্যুর পর আদালতে দত্তক পুত্র সিদ্ধ হইল। জয়নাথের উত্তরাধিকারীগণ মোকদ্দমায় পরাজিত হইল বটে কিন্তু এই মোকদ্দমায় অযথা প্রচুর অর্থ ব্যয় হইয়া গেল। মোকদ্দমার পর হইতেই স্বজন বন্ধুবান্ধবদের পূর্বের মত কর্তৃত্ব রহিল না এবং রাজ্য শাসনকার্যও অনেক ভাল হইল। বর্তমানে যেরূপ বন্দোবস্ত হইয়াছে, তাহাতে রাজ্যের শুভ লক্ষণই দৃষ্ট হইতেছে।
পুঠিয়ার রাজ-মহিলা-আর্যজাতির মধ্যে অনেক সাধ্বী পতিব্রতা, পুণ্যবতী, দয়াবর্তী এবং
দানশীলা মহিলা ধনীর অট্টালিকায় এবং দরিদ্রের কুটীরে ছিল এবং বর্তমানে আছে। কিন্তু এক মহিলাতে সকল গুণ থাকা বিরল। কেহ হয়ত পতিব্রতা কিন্তু দয়াবতী ও দানশীলা নহে, আবার কেহ হয়ত দয়াবতী ও দানশীলা কিন্তু পতিব্রতা নহে। আবার রাজ রমণীর রাজকার্যের পটুতা সকল স্থলেও দৃষ্ট হয় না। পুঠিয় রাজবংশ ধর্মের, পুণ্যের সংসার বলিয়া কীর্তিত হয়। এ বংশের মহিলাদের দেবচরিত্র নিতান্ত প্রশংসনীয়। এই পুঁঠিয়া রাজবংশে রাজা রাজেন্দ্রনারায়ণের স্ত্রী রাণী সূর্যমণী দেবী, রাজা জগন্নারায়-এর পত্নী রাণী ভুবনময়ী দেবী এবং রাজা যোগেন্দ্রনারায়ণের পত্নী মহারাণী শরৎসুন্দরী দেবীর কীর্তিকলাপ এরূপ বিস্তৃত এবং প্রসিদ্ধ যে নাম ও যশে বংশের গৌরব সমগ্র ভারতে ব্যাপিয়া আছে। এই তিনটি রমণী মধ্যে মহারাণী শরৎসুন্দরী দেবী যেরূপ বালবিধবা হন এরূপ অপর কেহই নহে। যদিচ রাণী সূর্যমণী অল্প বয়সে বিধবা হইয়া পতির ত্যক্ত সম্পত্তির অধিকারিণী হওয়ার পর সুকৌশলে রাজকার্য নির্বাহ করেন, তথাপি মহারাণী শরৎসুন্দরী দেবীর ন্যায় রাণী সূর্যমণী বা রাণী ভুবনময়ী কেহই যশস্বিণী হইতে পারেন নাই। সুতরাং মহারাণী শরৎসুন্দরী দেবীর গুণকীর্তণে হিন্দু মহিলার সহিত পতির কিরূপ সংস্রবে থাকিতে হয় এবং হিন্দু মহিলার কি কর্তব্য তাহাই প্রকাশ পাইবে।