১০:৪৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৫
জাপানে ভিসা ফি বাড়ছে, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের সমান হবে হার ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন সিদ্ধান্তে ভারত হয়ে উঠছে মার্কিন কোম্পানিগুলোর বিকল্প আউটসোর্সিং কেন্দ্র বৈশ্বিক মানবিক সহায়তায় নতুন ভূমিকা নিচ্ছে বেইজিং, তবে ‘গণতান্ত্রিক বিকল্প’ও দরকার দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ঢাকা (পর্ব-৪১) ভূতের নৃত্য কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে তিন দফা দাবিতে শিক্ষকদের টানা আন্দোলন, সরকারের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান শাহজালাল বিমানবন্দরে বিমান চলাচল বন্ধ ঘোষণা শাহজালাল বিমানবন্দরে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে আহত ৩৫ নিরাপত্তাকর্মী কিংবদন্তি রক গুরু আইয়ুব বাচ্চুর সপ্তম মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধার স্রোত জুলাই সনদ নিয়ে বিভাজন—রক্ত দিল যারা, ক্ষমতার মঞ্চে তাদের দেখা নেই

শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে মিরপুর ও চট্টগ্রাম—পরপর অগ্নিকাণ্ডে বিশেষজ্ঞদের সতর্কবার্তা

ঢাকা ও চট্টগ্রামে সাম্প্রতিক তিনটি বড় অগ্নিকাণ্ড বাংলাদেশের নিরাপত্তা মান এবং জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলার সক্ষমতা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলেছে। সর্বশেষ দুর্ঘটনাটি ঘটে শনিবার দুপুরে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে, যার ফলে সব ধরনের ফ্লাইট চলাচল স্থগিত করতে হয়।

শাহজালাল বিমানবন্দরে ভয়াবহ আগুন

বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজ এলাকায় বিকেল ২টা ৩০ মিনিটের দিকে গেট নম্বর ৮–এর পাশে আগুন লাগে বলে জানান ফায়ার সার্ভিসের মিডিয়া সেলের কর্মকর্তা তালহা বিন জাশিম।
ফায়ার সার্ভিসের ৩৭টি ইউনিট ঘটনাস্থলে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে, এবং আরও ছয়টি ইউনিট পথে রয়েছে। পাশাপাশি বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)-এর দুই প্লাটুনও উদ্ধারকাজে যোগ দিয়েছে।

বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের মুখপাত্র মো. মাসুদুল হাসান মাসুদ নিশ্চিত করেন যে, আগুন লাগার পর থেকেই ফ্লাইট চলাচল বন্ধ রয়েছে।

সপ্তাহজুড়ে অন্য দুই অগ্নিকাণ্ড: মিরপুর ও চট্টগ্রাম

এর আগে সপ্তাহের শুরুতে, মঙ্গলবার মিরপুরের রূপনগরের শিয়ালবাড়ি এলাকায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে পোশাক কারখানা ও রাসায়নিক গুদামে আগুন ধরে ১৬ জনের মৃত্যু হয়।

চট্টগ্রামের রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে (সিইপিজেড) বৃহস্পতিবারের আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে ফায়ার সার্ভিসের ২৩টি ইউনিটকে টানা ১৭ ঘণ্টা কাজ করতে হয়।

ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় প্রশাসন উভয় দুর্ঘটনার তদন্তে পৃথক কমিটি গঠন করেছে।

চট্টগ্রামে আগুন নিয়ন্ত্রণে ইউনিট বেড়ে ২৩

অতীতের শিক্ষা: কাঠামোগত দুর্বলতা ও তদারকির ঘাটতি

বাংলাদেশে বড় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা নতুন নয়—এর বেশিরভাগই ঘটে দুর্বল অবকাঠামো, অপর্যাপ্ত তদারকি এবং নিম্নমানের নিরাপত্তা ব্যবস্থার কারণে।
২০১৩ সালের রানা প্লাজা ধস, ২০১৯ সালের চকবাজার অগ্নিকাণ্ড, এবং ২০২১ সালের নারায়ণগঞ্জের খাদ্য ও পানীয় কারখানার আগুনে শতাধিক প্রাণহানি—সবই একই ধরণের অবহেলা ও নীতিগত ব্যর্থতার উদাহরণ।

ঢাকা শহরের দীর্ঘ অগ্নিকাণ্ড ইতিহাস প্রতিবারই দেখিয়েছে, তদারকির দুর্বলতা ও বিধিনিষেধ বাস্তবায়নের ঘাটতি কীভাবে মানুষের জীবনহানির কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে।

বিশেষজ্ঞদের মত: তদারকিপরিকল্পনা ও সমন্বয়ের অভাবই মূল সমস্যা

ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক পারভেজ করিম আব্বাসি বলেন, “আগুন প্রতিরোধে মূল দায়িত্ব শহর করপোরেশন ও সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর। কিন্তু তারা নিয়মিত পরিদর্শন করছে না।”

তিনি আরও বলেন, “শিল্প এলাকা ও আবাসিক এলাকা আলাদা রাখতে হবে এবং বিপজ্জনক বা দাহ্য পদার্থের সঠিক সংরক্ষণ ও পরিদর্শন নিশ্চিত করতে হবে। কাগজে-কলমে নিয়ম আছে, কিন্তু বাস্তবে তা অনুসরণ করা হয় না।”

আব্বাসির মতে, আগুন প্রতিরোধে স্মার্ট সিটি পরিকল্পনার মধ্যে ফ্যাক্টরি বিন্যাস, শ্রমিক নিরাপত্তা ও পরিবেশগত মান অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

ফায়ার সার্ভিসের সীমাবদ্ধতা ও সমাধান প্রস্তাব

তিনি জানান, “ফায়ার সার্ভিস, রাজউক এবং সিটি করপোরেশন—সব প্রতিষ্ঠানকে যৌথভাবে কাজ করতে হবে। কর্মী সংখ্যা, সরঞ্জাম, প্রশিক্ষণ ও সুবিধা বাড়াতে হবে।”

ট্রাফিক জ্যাম, সরু রাস্তা, অপরিকল্পিত শহর বিন্যাস এবং পর্যাপ্ত ওয়াটার হাইড্রেন্ট না থাকা—এসব কারণে ফায়ার সার্ভিসের দ্রুত সাড়া দেওয়া কঠিন হয়ে পড়ে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

আব্বাসি বলেন, “এই সমস্যা একদিনে সমাধান সম্ভব নয়। সমন্বিত পরিকল্পনা ও দীর্ঘমেয়াদি উদ্যোগ প্রয়োজন।”

মিরপুরে আগুনে ৯ মৃত্যু, নিখোঁজদের জন্য চলছে তল্লা...

২০২৪ সালের পরিসংখ্যান: প্রতিদিন গড়ে ৭৩টি অগ্নিকাণ্ড

ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স (এফএসসিডি) জানিয়েছে, ২০২৪ সালে সারা দেশে মোট ২৬,৬৫৯টি অগ্নিকাণ্ড ঘটে। এতে ১৪০ জন প্রাণ হারান, যাদের মধ্যে দুইজন ছিলেন দমকলকর্মী; আহত হন আরও ৩৪১ জন।

গড়ে প্রতিদিন ৭৩টি অগ্নিকাণ্ড ঘটে—বেশিরভাগই বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট, গ্যাস লিক বা ধূমপানের অবশিষ্টাংশ থেকে।

ওইসব ঘটনায় ৪৪৭ কোটি টাকার সম্পদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তবে ফায়ার সার্ভিস ১,৯৭৪ কোটি টাকার সম্পদ রক্ষা করতে সক্ষম হয়।

নিরাপত্তা প্রশিক্ষণ ও সচেতনতা কার্যক্রম

অগ্নি প্রতিরোধে ২০২৪ সালে ফায়ার সার্ভিস ১৪৭টি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে এবং ১৪৯টি প্রতিষ্ঠানে মোট ২৫.৮৩২ কোটি টাকা জরিমানা আরোপ করা হয়। তিনটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।

এছাড়া সারা দেশে ১৮,৯৮৩টি অগ্নিনির্বাপণ মহড়া, ৩,০৩৬টি জরিপ এবং ১৫,৬৮৩টি জনসচেতনতা কার্যক্রম পরিচালিত হয়।

একই বছরে ১,৪৭,৭১৭ জনকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় ৭,৭৬৯টি অগ্নি নিরাপত্তা কোর্সের মাধ্যমে। এর মধ্যে শুধু তৈরি পোশাক কারখানাগুলোতেই ৩,৯২১টি কোর্সে ১,৫৬,৮৪০ শ্রমিক অংশ নেন।

কাগজে নয়বাস্তবে নিরাপত্তা চাই

বাংলাদেশে অগ্নিকাণ্ডের পুনরাবৃত্তি প্রমাণ করে—কেবল নিয়ম নয়, তার কার্যকর বাস্তবায়নই জরুরি। নগর পরিকল্পনা, অবকাঠামো উন্নয়ন, প্রতিষ্ঠানিক সমন্বয় এবং জনগণের সচেতনতা—সবই একসঙ্গে নিশ্চিত করতে হবে।
নইলে শাহজালাল থেকে মিরপুর, আবার চট্টগ্রাম—এই দুঃসহ চক্রে নতুন প্রাণহানি চলতেই থাকবে।

বাংলাদেশ# অগ্নিকাণ্ড# শাহজালাল বিমানবন্দর# ফায়ার সার্ভিস#  নিরাপত্তা, চট্টগ্রাম#  মিরপুর, দুর্ঘটনা # নগর পরিকল্পনা#  সারাক্ষণ রিপোর্ট

জনপ্রিয় সংবাদ

জাপানে ভিসা ফি বাড়ছে, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের সমান হবে হার

শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে মিরপুর ও চট্টগ্রাম—পরপর অগ্নিকাণ্ডে বিশেষজ্ঞদের সতর্কবার্তা

০৭:৪১:৩৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৫

ঢাকা ও চট্টগ্রামে সাম্প্রতিক তিনটি বড় অগ্নিকাণ্ড বাংলাদেশের নিরাপত্তা মান এবং জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলার সক্ষমতা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলেছে। সর্বশেষ দুর্ঘটনাটি ঘটে শনিবার দুপুরে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে, যার ফলে সব ধরনের ফ্লাইট চলাচল স্থগিত করতে হয়।

শাহজালাল বিমানবন্দরে ভয়াবহ আগুন

বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজ এলাকায় বিকেল ২টা ৩০ মিনিটের দিকে গেট নম্বর ৮–এর পাশে আগুন লাগে বলে জানান ফায়ার সার্ভিসের মিডিয়া সেলের কর্মকর্তা তালহা বিন জাশিম।
ফায়ার সার্ভিসের ৩৭টি ইউনিট ঘটনাস্থলে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে, এবং আরও ছয়টি ইউনিট পথে রয়েছে। পাশাপাশি বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)-এর দুই প্লাটুনও উদ্ধারকাজে যোগ দিয়েছে।

বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের মুখপাত্র মো. মাসুদুল হাসান মাসুদ নিশ্চিত করেন যে, আগুন লাগার পর থেকেই ফ্লাইট চলাচল বন্ধ রয়েছে।

সপ্তাহজুড়ে অন্য দুই অগ্নিকাণ্ড: মিরপুর ও চট্টগ্রাম

এর আগে সপ্তাহের শুরুতে, মঙ্গলবার মিরপুরের রূপনগরের শিয়ালবাড়ি এলাকায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে পোশাক কারখানা ও রাসায়নিক গুদামে আগুন ধরে ১৬ জনের মৃত্যু হয়।

চট্টগ্রামের রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে (সিইপিজেড) বৃহস্পতিবারের আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে ফায়ার সার্ভিসের ২৩টি ইউনিটকে টানা ১৭ ঘণ্টা কাজ করতে হয়।

ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় প্রশাসন উভয় দুর্ঘটনার তদন্তে পৃথক কমিটি গঠন করেছে।

চট্টগ্রামে আগুন নিয়ন্ত্রণে ইউনিট বেড়ে ২৩

অতীতের শিক্ষা: কাঠামোগত দুর্বলতা ও তদারকির ঘাটতি

বাংলাদেশে বড় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা নতুন নয়—এর বেশিরভাগই ঘটে দুর্বল অবকাঠামো, অপর্যাপ্ত তদারকি এবং নিম্নমানের নিরাপত্তা ব্যবস্থার কারণে।
২০১৩ সালের রানা প্লাজা ধস, ২০১৯ সালের চকবাজার অগ্নিকাণ্ড, এবং ২০২১ সালের নারায়ণগঞ্জের খাদ্য ও পানীয় কারখানার আগুনে শতাধিক প্রাণহানি—সবই একই ধরণের অবহেলা ও নীতিগত ব্যর্থতার উদাহরণ।

ঢাকা শহরের দীর্ঘ অগ্নিকাণ্ড ইতিহাস প্রতিবারই দেখিয়েছে, তদারকির দুর্বলতা ও বিধিনিষেধ বাস্তবায়নের ঘাটতি কীভাবে মানুষের জীবনহানির কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে।

বিশেষজ্ঞদের মত: তদারকিপরিকল্পনা ও সমন্বয়ের অভাবই মূল সমস্যা

ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক পারভেজ করিম আব্বাসি বলেন, “আগুন প্রতিরোধে মূল দায়িত্ব শহর করপোরেশন ও সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর। কিন্তু তারা নিয়মিত পরিদর্শন করছে না।”

তিনি আরও বলেন, “শিল্প এলাকা ও আবাসিক এলাকা আলাদা রাখতে হবে এবং বিপজ্জনক বা দাহ্য পদার্থের সঠিক সংরক্ষণ ও পরিদর্শন নিশ্চিত করতে হবে। কাগজে-কলমে নিয়ম আছে, কিন্তু বাস্তবে তা অনুসরণ করা হয় না।”

আব্বাসির মতে, আগুন প্রতিরোধে স্মার্ট সিটি পরিকল্পনার মধ্যে ফ্যাক্টরি বিন্যাস, শ্রমিক নিরাপত্তা ও পরিবেশগত মান অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

ফায়ার সার্ভিসের সীমাবদ্ধতা ও সমাধান প্রস্তাব

তিনি জানান, “ফায়ার সার্ভিস, রাজউক এবং সিটি করপোরেশন—সব প্রতিষ্ঠানকে যৌথভাবে কাজ করতে হবে। কর্মী সংখ্যা, সরঞ্জাম, প্রশিক্ষণ ও সুবিধা বাড়াতে হবে।”

ট্রাফিক জ্যাম, সরু রাস্তা, অপরিকল্পিত শহর বিন্যাস এবং পর্যাপ্ত ওয়াটার হাইড্রেন্ট না থাকা—এসব কারণে ফায়ার সার্ভিসের দ্রুত সাড়া দেওয়া কঠিন হয়ে পড়ে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

আব্বাসি বলেন, “এই সমস্যা একদিনে সমাধান সম্ভব নয়। সমন্বিত পরিকল্পনা ও দীর্ঘমেয়াদি উদ্যোগ প্রয়োজন।”

মিরপুরে আগুনে ৯ মৃত্যু, নিখোঁজদের জন্য চলছে তল্লা...

২০২৪ সালের পরিসংখ্যান: প্রতিদিন গড়ে ৭৩টি অগ্নিকাণ্ড

ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স (এফএসসিডি) জানিয়েছে, ২০২৪ সালে সারা দেশে মোট ২৬,৬৫৯টি অগ্নিকাণ্ড ঘটে। এতে ১৪০ জন প্রাণ হারান, যাদের মধ্যে দুইজন ছিলেন দমকলকর্মী; আহত হন আরও ৩৪১ জন।

গড়ে প্রতিদিন ৭৩টি অগ্নিকাণ্ড ঘটে—বেশিরভাগই বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট, গ্যাস লিক বা ধূমপানের অবশিষ্টাংশ থেকে।

ওইসব ঘটনায় ৪৪৭ কোটি টাকার সম্পদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তবে ফায়ার সার্ভিস ১,৯৭৪ কোটি টাকার সম্পদ রক্ষা করতে সক্ষম হয়।

নিরাপত্তা প্রশিক্ষণ ও সচেতনতা কার্যক্রম

অগ্নি প্রতিরোধে ২০২৪ সালে ফায়ার সার্ভিস ১৪৭টি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে এবং ১৪৯টি প্রতিষ্ঠানে মোট ২৫.৮৩২ কোটি টাকা জরিমানা আরোপ করা হয়। তিনটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।

এছাড়া সারা দেশে ১৮,৯৮৩টি অগ্নিনির্বাপণ মহড়া, ৩,০৩৬টি জরিপ এবং ১৫,৬৮৩টি জনসচেতনতা কার্যক্রম পরিচালিত হয়।

একই বছরে ১,৪৭,৭১৭ জনকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় ৭,৭৬৯টি অগ্নি নিরাপত্তা কোর্সের মাধ্যমে। এর মধ্যে শুধু তৈরি পোশাক কারখানাগুলোতেই ৩,৯২১টি কোর্সে ১,৫৬,৮৪০ শ্রমিক অংশ নেন।

কাগজে নয়বাস্তবে নিরাপত্তা চাই

বাংলাদেশে অগ্নিকাণ্ডের পুনরাবৃত্তি প্রমাণ করে—কেবল নিয়ম নয়, তার কার্যকর বাস্তবায়নই জরুরি। নগর পরিকল্পনা, অবকাঠামো উন্নয়ন, প্রতিষ্ঠানিক সমন্বয় এবং জনগণের সচেতনতা—সবই একসঙ্গে নিশ্চিত করতে হবে।
নইলে শাহজালাল থেকে মিরপুর, আবার চট্টগ্রাম—এই দুঃসহ চক্রে নতুন প্রাণহানি চলতেই থাকবে।

বাংলাদেশ# অগ্নিকাণ্ড# শাহজালাল বিমানবন্দর# ফায়ার সার্ভিস#  নিরাপত্তা, চট্টগ্রাম#  মিরপুর, দুর্ঘটনা # নগর পরিকল্পনা#  সারাক্ষণ রিপোর্ট