প্রশাসন ক্যাডার ব্যতীত অবশিষ্ট ২৫টি বিসিএস ক্যাডারের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা অতীত তারিখ থেকে কার্যকর পদোন্নতি ও পূর্ণ আর্থিক সুবিধা প্রদানের দাবি জানিয়েছেন। পাশাপাশি, সরকারি প্রশাসন সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নে অধ্যাদেশ জারির আহ্বান জানান তারা, যাতে আন্তঃক্যাডার বৈষম্য দূর হয় এবং প্রশাসন ক্যাডারের মতো সুযোগ-সুবিধা তারা পান।
বৈষম্য দূরীকরণে আহ্বান
‘অ্যান্টি-ডিসক্রিমিনেশন রিটায়ার্ড অফিসার্স কোঅর্ডিনেশন কাউন্সিল অব ২৫ ক্যাডার’-এর আহ্বায়ক আহমেদ আলী চৌধুরী ইকবালের নেতৃত্বে শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।
প্রশাসন ক্যাডারের অতিরিক্ত সুবিধা
আহমেদ আলী অভিযোগ করেন, আগের সরকার প্রশাসন ক্যাডারের ৭৭৮ জন অবসরপ্রাপ্ত ও প্রয়াত কর্মকর্তাকে অতীত তারিখ থেকে পূর্ণ বেতন ও ভাতাসহ পদোন্নতি দিলেও অন্যান্য ২৫ ক্যাডারের কর্মকর্তারা সে সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। অন্যদিকে, মাত্র ৭২ জন কর্মকর্তাকে সীমিত পরিসরে পদোন্নতি দেওয়া হয়, যেখানে তারা কেবল মৌলিক বেতন, গ্র্যাচুইটি ও পেনশন সুবিধা পান—প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তারা পান পূর্ণ বেতন ও ভাতা।

নেতৃত্বে একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণের অভিযোগ
তিনি আরও অভিযোগ করেন, প্রশাসন ক্যাডার এখন অধিকাংশ মন্ত্রণালয় ও বিভাগে নেতৃত্বের স্থান দখল করে রেখেছে, যা পেশাদারিত্ব ও প্রশাসনিক ভারসাম্য নষ্ট করছে। ২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচনের পর এসব পদ আনুষ্ঠানিকভাবে প্রশাসন ক্যাডারের তালিকায় যুক্ত করা হয়েছে, ফলে অন্য ক্যাডারের কর্মকর্তারা উপেক্ষিত হয়েছেন।
সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নে দাবি
কাউন্সিলের অভিযোগ, সরকারি প্রশাসন সংস্কার কমিশনের ৮৪টি সুপারিশের মধ্যে প্রশাসনিক সংস্কার-সংক্রান্ত সাতটি গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব গোপন রাখা হয়েছে। আহমেদ আলী আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, প্রশাসন ক্যাডারের জন্য উপকারী অংশগুলোই বাস্তবায়ন করা হবে—অতীতের ২৬টি সংস্কার কমিশনের মতোই।
সিনিয়র সার্ভিস পুল অর্ডারের প্রাসঙ্গিকতা

১৯৭৯ সালের সিনিয়র সার্ভিস পুল অর্ডার অনুযায়ী, সব ক্যাডারের কর্মকর্তাদের মেধা ও অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার মাধ্যমে ডেপুটি সেক্রেটারি পদে নিয়োগ দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু নতুন প্রস্তাবে ৫০ শতাংশ পদ প্রশাসন ক্যাডারের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে, যা জুলাই চার্টারের মূল চেতনার পরিপন্থী বলে অভিযোগ করেন আহমেদ আলী।
পেশাদার প্রশাসন গঠনের প্রস্তাব
আহ্বায়ক আহমেদ আলী চৌধুরী ইকবাল বলেন, নীতি প্রণয়ন ও উন্নয়ন ব্যবস্থাপনায় পেশাদারিত্ব নিশ্চিত করতে “সিনিয়র এক্সিকিউটিভ সার্ভিস” চালু করা জরুরি। তিনি আশা প্রকাশ করেন, বর্তমান সরকার ক্যাডারভিত্তিক বৈষম্য দূর করে একটি জবাবদিহিমূলক ও সেবামুখী প্রশাসন গড়ে তুলবে।
উপস্থিত ব্যক্তিরা
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অবসরপ্রাপ্ত কৃষি কর্মকর্তাদের সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক এস এম গোলাম কিবরিয়া, সাবেক চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও বিসিএস তথ্য ক্যাডার সমিতির সাবেক সভাপতি প্রিন্সিপাল আই কে সেলিমুল্লাহ খন্দকার, ঢাকা কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক মোহাম্মদ কফিল উদ্দিন ও অধ্যাপক এম এ সামাদ, সাবেক প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পরিচালক ড. মো. মাহবুবুর রহমান, প্রকৌশলী সৈয়দ মাহফুজ আহমেদ, মো. আশরাফুল ইসলাম, প্রকৌশলী নকীব আহসান (পাবলিক হেলথ ইঞ্জিনিয়ারিং) এবং প্রকৌশলী এস এম এনামুল হকসহ বিভিন্ন ক্যাডারের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা।
#BCS #২৫ক্যাডার #প্রশাসনক্যাডার #পদোন্নতি #সংস্কারকমিশন #সরকারিকর্মকর্তা #বৈষম্যদূরীকরণ #সারাক্ষণরিপোর্ট
সারাক্ষণ রিপোর্ট 


















