দেশের পোশাক ও বস্ত্র খাতে অন্তর্বর্তী সরকার সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছে বলে কঠোর মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শওকত আজিজ রাসেল। তিনি বলেছেন, গত এক বছরে এই খাতে সরকারের কোনো দৃশ্যমান সাফল্য নেই, বরং ধারাবাহিক ভুল সিদ্ধান্তে শিল্প আরও সংকটে পড়েছে।
গুলশান ক্লাবে মতবিনিময় সভা
রোববার রাজধানীর গুলশান ক্লাবে বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন শওকত আজিজ রাসেল। সুতা উৎপাদন খাতে দীর্ঘদিন ধরে চলমান নানা সমস্যার কারণ চিহ্নিত করা এবং সেখান থেকে উত্তরণে সরকারের করণীয় নির্ধারণের উদ্দেশ্যে এই সভার আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে সংগঠনের সাবেক সভাপতি এ মতিন চৌধুরী ও মোহাম্মদ আলী খোকনসহ সাবেক পরিচালক রাজীব হায়দারও বক্তব্য দেন।
কারখানা বন্ধের চিত্র তুলে ধরলেন সভাপতি
বিটিএমএ সভাপতি বলেন, সরকার নতুন কোনো কারখানা গড়ে তুলতে পারেনি, বরং ব্যাপকভাবে কারখানা বন্ধ হয়েছে। তার ভাষায়, দুই শতাধিক গার্মেন্টস কারখানা এবং পঞ্চাশটির বেশি টেক্সটাইল মিল বন্ধ হয়ে গেছে। এর বাইরে অর্ধেকের বেশি কারখানা আংশিকভাবে বন্ধ অবস্থায় রয়েছে। সব মিলিয়ে স্পিনিং মিল বন্ধের সংখ্যা শতাধিক ছাড়িয়েছে বলে জানান তিনি। এই পরিস্থিতিতে গত এক বছরে সরকারের সাফল্য কোথায়, তা নিয়েই প্রশ্ন তোলেন তিনি।

কর ও শুল্ক নীতির সমালোচনা
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে শওকত আজিজ রাসেল বলেন, বাণিজ্য উপদেষ্টা চেষ্টা করলেও একা সব সমস্যার সমাধান করা সম্ভব নয়। তিনি তুলার ওপর শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্তকে আত্মঘাতী বলে উল্লেখ করেন। তার মতে, তুলার ওপর শুল্ক বসানো মানে দেশীয় সুতা উৎপাদনের বদলে বিদেশি সুতা আমদানিকে উৎসাহিত করা। শুল্ক যদি দিতেই হয়, তাহলে তা সুতার ওপর দেওয়া উচিত ছিল, যাতে দেশে তুলা এনে সুতা উৎপাদন বাড়ানো যেত।
করপোরেট কর ও প্রণোদনা সংকট
তিনি আরও বলেন, করপোরেট কর হঠাৎ করে অনেক বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, যা শিল্পের ওপর বড় ধরনের চাপ তৈরি করছে। এর পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের কর আরোপ করে উদ্যোক্তাদের ওপর বাড়তি বোঝা চাপানো হয়েছে। একই সঙ্গে পোশাক ও বস্ত্র খাতে দেওয়া প্রণোদনাও ধীরে ধীরে কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। এসব সিদ্ধান্ত শিল্পের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর বলে মন্তব্য করেন তিনি।
সব মিলিয়ে শওকত আজিজ রাসেলের মতে, ভুল নীতি ও সিদ্ধান্তের কারণে পোশাক ও বস্ত্র খাত বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েছে এবং এই দায় এড়ানোর সুযোগ সরকারের নেই।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















