সারাক্ষণ ডেস্ক
প্রথম আলর একটি শিরোনাম “ঘূর্ণিঝড়, নিম্নচাপের সংখ্যা কমছে, বাড়ছে তীব্রতা”
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া প্রবল ঘূর্ণিঝড় এবং সাধারণ ঘূর্ণিঝড়ের সংখ্যা কমছে। এই সাগরে নিম্নচাপ সৃষ্টিও আগের চেয়ে কমেছে। ১৯৪৮ থেকে সর্বশেষ ২০২৩ সাল পর্যন্ত আবহাওয়া অধিদপ্তরের উপাত্ত বিশ্লেষণ করে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
আবহাওয়া ও জলবায়ুবিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিশ্বের অন্যান্য সাগরের তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বঙ্গোপসাগরেও তাপমাত্রা বাড়ছে। এর ফলে ঘূর্ণিঝড়গুলো হয়তো তীব্র হচ্ছে। কিন্তু এর সংখ্যা কমছে। এর সম্ভাব্য কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, ভূপৃষ্ঠের সঙ্গে সমুদ্রপৃষ্ঠেরও তাপমাত্রা সমানভাবে বৃদ্ধির ফলে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির সহায়ক পরিবেশে বিঘ্ন ঘটছে। নিম্নচাপ ও এর ফলে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়ের মতো প্রাকৃতিক প্রক্রিয়ার ধারাবাহিকতায় ছেদ পড়লে উপকূল শুধু নয়, দেশের অন্যান্য অঞ্চলের কৃষি, পরিবেশ ও অর্থনীতিতেও এর প্রভাব পড়বে।
ঘূর্ণিঝড় নিয়ে গবেষণা করেন আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক। তিনি ১৯৪৮ থেকে ২০২৩ সাল অর্থাৎ মোট ৭৫ বছরের বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া ঘূর্ণিঝড়, প্রবল ঘূর্ণিঝড় এবং নিম্নচাপের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেছেন। সেই অনুযায়ী, ৭৫ বছরে বঙ্গোপসাগরে ১৫১টি প্রবল ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হয়। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ঘূর্ণিঝড় হয়েছে নভেম্বর মাসে—৫১টি। এরপরই বেশি ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হয়েছে মে মাসে—৩০টি। আর তৃতীয় সর্বোচ্চ ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হয়েছে অক্টোবর মাসে—২৯টি।
বণিক বার্তার একটি শিরোনাম “বৈশ্বিক সমুদ্র বাণিজ্যে অনিশ্চয়তা ও ব্যয় দুটোই বাড়ছে”
সমুদ্র বাণিজ্যে সাধারণত গ্রীষ্মের শেষ থেকে শরৎকালকে পিক সিজন ধরা হয়। এ সময় দুটি উৎসবকে কেন্দ্র করে পশ্চিমা দেশগুলোয় পণ্য সরবরাহ বাড়ে। এ দুটি উৎসব হলো নভেম্বরের ব্ল্যাক ফ্রাইডে ও পরবর্তী মাসের বড়দিন। কিন্তু লোহিত সাগরের সংঘাতের অনিশ্চয়তা ঘিরে এবারের আন্তর্জাতিক নৌ-বাণিজ্যে পিক সিজন শুরু হয়েছে বেশ আগে। এ কারণে সমুদ্র পথে পণ্য পরিবহনে খরচও বেড়েছে তুলনামূলক বেশি। খবর ফাইন্যান্সিয়াল টাইমস।
দূরপ্রাচ্য ও উত্তর ইউরোপের মধ্যে পণ্যবাহী ৪০ ফুট কনটেইনার বাবদ গড় খরচ গত সপ্তাহে ৪ হাজার ৩৪৩ ডলারে পৌঁছেছে, যা ২০২৩ সালের একই সময়ের চেয়ে তিন গুণ বেশি বলে জানিয়েছে পণ্যবাহী জাহাজের তথ্য বিশ্লেষক প্রতিষ্ঠান জেনেটা।
গত বছর লোহিত সাগরে হুথি হামলা শুরু হওয়ার পর দ্রুত বাড়তে থাকে কনটেইনার শিপিংয়ের ভাড়া। এ ব্যয় সর্বোচ্চ পর্যায়ে দাঁড়ায় নভেম্বরে। তারপর থেকে তা এ পর্যন্ত কিছুটা কমলেও এখনো সমুদ্রপথে পণ্য পরিবহন আগের চেয়ে অনেক বেশি ব্যয়বহুল পর্যায়ে রয়েছে।
গত বছরের অক্টোবরে গাজার বিরুদ্ধে ইসরায়েলের সর্বাত্মক হামলা শুরুর পর ফিলিস্তিনিদের পক্ষ নিয়ে লোহিত সাগরে জাহাজে আক্রমণ করে ইয়েমেনভিত্তিক হুথিরা। তাদের দাবি ছিল, হামলার শিকার জাহাজগুলো কোনো না কোনোভাবে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পৃক্ত। তবে এতে সব ধরনের জাহাজ চলাচল অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। এ পথ ধরে থেকে প্রধান শিপিং কোম্পানিগুলো সুয়েজ খালকেন্দ্রিক লোহিত সাগরের গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক রুটটি এড়িয়ে চলা শুরু করে।
সম্প্রতি আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) জানিয়েছে, ২০২৩ সালের একই সময়ের তুলনায় চলতি বছরের এপ্রিলে সুয়েজ খাল হয়ে পণ্য পরিবহন কমেছে দুই-তৃতীয়াংশ। একই সময়ে আফ্রিকার উত্তমাশা অন্তরীপ হয়ে শিপিং প্রায় দ্বিগুণ বেড়েছে। সুয়েজ খাল দিয়ে চলাচল কমে যাওয়ায় ব্যাহত হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্য, ইউরোপ, এশিয়া ও আফ্রিকার অর্থনীতি।
এদিকে আট মাস ধরে চলা গাজা সংকট কাটিয়ে ওঠার কোনো লক্ষণ নেই। এ কারণে লোহিত সাগরের সংঘাত পরিস্থিতি নিয়েও আশঙ্কা কাটেনি। এমন পরিপ্রেক্ষিতে ব্যবসার মৌসুম চাঙ্গা রাখতে এবার পিক সিজন এগিয়ে দিয়েছে শিপিং কোম্পানিগুলো।
লজিস্টিকস কোম্পানি কুয়েন প্লাস নাগেলের সমুদ্র বাণিজ্যবিষয়ক প্রধান মাইকেল অ্যাল্ডওয়েল বলেন, ‘এবার পিক সিজন এগিয়ে আনা হয়েছে।’
বিশ্লেষকরা বলছেন, শিপিং খরচ বাড়ার একাধিক কারণ রয়েছে। তবে সবচেয়ে বড় কারণ লোহিত সাগরে হুথিদের হামলা। এ কারণে এশিয়া ও ইউরোপের মধ্যে পণ্য পরিবহনে জাহাজ মালিকরা আফ্রিকার উত্তমাশা অন্তরীপের পার্শ্ববর্তী সমুদ্রপথ বেছে নিতে বাধ্য হয়েছেন। গাজা যুদ্ধের কারণে শরতেও লোহিত সাগরে হামলা বাড়তে পারে। এ আশঙ্কা থেকেই পিক সিজন এগিয়ে আনা হয়েছে, যাতে যথাসময়ে বড়দিনের পণ্যগুলো ক্রেতাদের হাতে পৌঁছে দেয়া যায়।
মাইকেল অ্যাল্ডওয়েল জানান, ‘কুয়েন প্লাস নাগেলের কিছু ক্রেতা উৎসবের মৌসুম সামনে রেখে এপ্রিলে প্রি-বুক শুরু করেন। একই সময়ে অন্য বিক্রেতারা গ্রীষ্মকালীন আসবাব ও বারবিকিউ সরঞ্জাম মজুদ শুরু করে দেন। এছাড়া পূর্বাভাসের তুলনায় এবার পণ্যের চাহিদা বেড়েছে। গত বছর মজুদ কমাতে বাধ্য হলেও এবার সরবরাহ বাড়ানোর দিকে মনোযোগ দিচ্ছেন বিক্রেতারা। এ কারণে শিপিংয়ে অতিরিক্ত খরচ করতেও প্রস্তুত তারা।’
জেনেটার প্রধান বিশ্লেষক পিটার স্যান্ড বলেন, ‘কভিড-১৯ মহামারী থেকে আমদানিকারকরা কিছু শিক্ষা নিয়েছেন। এখন অনেকেই মনে করছেন, দ্রুত মজুদ সরবরাহ ব্যবস্থায় শক্ত প্রতিরোধ তৈরি করে। বড়দিনের পণ্য সরবরাহের ক্ষেত্রেও ব্যবসায়ীদের অনেকেই সে পদক্ষেপ নিয়েছেন। অন্যথায় প্রচলিত পিক সিজনে আমদানি করতে গেলো সংকটে পড়তে পারেন।’
তিনি বলেন, ‘হুথি হামলার কারণে সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কায় ব্যবসায়ীরা এ পদক্ষেপ নিচ্ছেন। কারণ কেউ জানেন না কখন এ অনিশ্চয়তা দূর হবে।’
তবে লোহিত সাগরকেন্দ্রিক সাম্প্রতিক অনিশ্চয়তা দূর হলেও বৈশ্বিক সরবরাহ ব্যবস্থা একই রকম থাকবে না বলে ধারণা করছেন বিশ্লেষকদের অনেকে। তারা মনে করেন, ভবিষ্যতে সমুদ্রকেন্দ্রিক সরবরাহ ব্যবস্থা নতুন রূপ নেবে। কারণ হিসেবে ধারাবাহিক ভূরাজনৈতিক অস্থিরতা সামনে আনছেন যুক্তরাজ্যভিত্তিক ইনস্টিটিউট অব এক্সপোর্ট অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল ট্রেনের মহাপরিচালক মার্কো ফরগিয়ন। একই কারণে পণ্য মজুদ ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন আসবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
ইত্তেফাক এর একটি শিরোনাম “ফিলিস্তিন রাষ্ট্র ছাড়া ইসরায়েলের অস্তিত্ব থাকতে পারে না: সৌদি”
স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি না দেওয়া পর্যন্ত ইসরায়েলের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক স্থাপন না করার কথা আগেই জানিয়েছে সৌদি আরব। এবার মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম সম্পদশালী ও প্রভাবশালী এই দেশটি বলেছে, ফিলিস্তিন রাষ্ট্র ছাড়া ইসরায়েলও থাকতে পারে না। একই সঙ্গে ১৯৬৭ সালের সীমানা অনুযায়ী স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার বিষয়টিও পুনর্ব্যক্ত করেছে সৌদি আরব। এদিকে রাফাহ শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি হামলায় ৪০ জন নিহত হয়েছে।
সোমবার সংবাদমাধ্যমগুলোর খবরে বলা হয়, ব্রাসেলসে আরব ও ইউরোপীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকের পর সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফয়সাল বিন-ফারহান জানান, ফিলিস্তিন রাষ্ট্র না থাকলে ইসরায়েলেরও অস্তিত্ব থাকতে পারে না। তিনি বলেন, দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানের মাধ্যমে তারা যে নিরাপত্তা চায় সেটি ইসরায়েল স্বীকার করে না—যা খুবই উদ্বেগের বিষয়। সৌদি আরবের শীর্ষ এই কূটনীতিক সাংবাদিকদের বলেন, ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের অস্তিত্ব ছাড়া ইসরায়েলেরও অস্তিত্ব থাকতে পারে না এবং এটা সম্পূর্ণরূপে মেনে নেওয়াই প্রয়োজন ইসরায়েলের।’
সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফয়সাল বিন-ফারহান আরো বলেন, ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই নিরাপত্তা পাবে ইসরায়েল। তাই আমরা আন্তরিকভাবে আশা করি, ইসরায়েলের নেতারা বিষয়টি বুঝতে পারবেন যে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে মিলে কাজ করাটা তাদের স্বার্থেই ভালো। আর সেটি শুধুমাত্র ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষকে শক্তিশালী করাই নয়, বরং ১৯৬৭ সালের সীমানা অনুযায়ী একটি ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা। এর আগে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি না দেওয়া পর্যন্ত তারা ইসরায়েলের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক স্থাপন করবে না বলে জানিয়েছিল সৌদি আরব।
সৌদি প্রেস এজেন্সির বিবৃতিতে সেসময় বলা হয়, ১৯৬৭ সালে সীমান্ত অনুযায়ী পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী করে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি না দেওয়া পর্যন্ত ইসরায়েলের সঙ্গে কোনো কূটনৈতিক সম্পর্ক হবে না বলে সৌদি আরব বাইডেন প্রশাসনকে জানিয়ে দিয়েছে।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন বন্ধ করতে হবে এবং অবরুদ্ধ এলাকা থেকে সকল রকমের ইসরায়েলি বাহিনীকে প্রত্যাহার করতে হবে। মূলত গাজা ভূখণ্ডের পাশাপাশি অধিকৃত পশ্চিম তীরকে ফিলিস্তিনিরা তাদের ভবিষ্যত্ স্বাধীন রাষ্ট্রের মূল অংশ হিসেবে চায়। এছাড়া ফিলিস্তিনিরা ঐতিহাসিক জেরুজালেম শহরের পূর্ব অংশকে নিজেদের ভবিষ্যত্ রাষ্ট্রের রাজধানী হিসেবে দেখে থাকে।
The Daily Star বাংলার একটি শিরোনাম “সম্পদ জব্দের পর কী করবেন বেনজীর?”
পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির যে অভিযোগ উঠেছে, তার অনুসন্ধান চলাকালেই দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এই সাবেক পুলিশপ্রধানসহ তার স্ত্রী ও তিন মেয়ের নামে থাকা স্থাবর সম্পদ জব্দ (ক্রোক) করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাদের ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ (ফ্রিজ) করার আদেশও দেওয়া হয়েছে।
প্রশ্ন হলো—এখন বেনজীর আহমেদ কি সম্পদ জব্দ ও ব্যাংক অ্যাকাউন্ট অবরুদ্ধের আদেশ ঠেকাতে আদালতে যাবেন? তার কি সেই সুযোগ আছে? এর পরবর্তী প্রক্রিয়াটাই বা কী?
বিষয়টি নিয়ে দ্য ডেইলি স্টার কথা বলেছে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শাহদীন মালিক, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না ও দুর্নীতিবিরোধী আন্তর্জাতিক সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল, বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামানের সঙ্গে।
এ ব্যাপারে শাহদীন মালিক বলছেন, ‘এটা (মামলা হওয়ার আগেই সম্পত্তি ক্রোকের আবেদন) দুদক আইনেই আছে। দুদক যদি মনে করে যে অভিযুক্ত ব্যক্তি দুর্নীতি করে অর্জিত সম্পত্তি হস্তান্তর করে দেবে, তাহলে দুদক এই আবেদন করতে পারে।
‘বিচারে তিনি (বেনজীর আহমেদ) যদি দোষী সাব্যস্ত হন তাহলে তো তার কারাদণ্ডের শাস্তি হবে। পাশাপাশি এই সম্পত্তি রাষ্ট্রের অনুকূলে চলে যাবে। রাষ্ট্র এই সম্পত্তির মালিক হবে। যাতে সে এগুলো ট্রান্সফার করতে না পারে, দোষী সাব্যস্ত হলে সরকার যাতে এগুলো বাজেয়াপ্ত করতে পারে এ জন্যই ফ্রিজ করে রাখা।’
পুরো বিষয়টাকে এখন পর্যন্ত ইতিবাচকভাবে দেখলেও শঙ্কার কথাও জানান টিআইবি নির্বাহী পরিচালক। বলেন, ‘এটা যেহেতেু ব্যতিক্রমী উচ্চ পর্যায়ের দুর্নীতি, এক্ষেত্রে সত্যিকারের জবাবদিহি নিশ্চিত হবে কিনা, দৃষ্টান্ত স্থাপিত হবে কিনা সে ব্যাপারে প্রশ্ন থেকেই যায়। আবার আনুষ্ঠানিকতার অংশ হিসেবেই এমন তৎপরতা দেখানো হচ্ছে কিনা তা নিয়েও সংশয় জাগে। এমন যদি হয়ে যায় তাহলে মানুষের মনে প্রচণ্ড হতাশা তৈরি হবে।’
আর যদি সুনির্দিষ্ট আইনি প্রক্রিয়া মেনে শেষ পর্যন্ত সাবেক আইজিপির বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগগুলো প্রমাণিত হয়, তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হয়, তাহলে রাষ্ট্রীয় ও সরকারিভাবে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে থাকা যে ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ আছে তাদের কাছেও শক্ত বার্তা যাবে বলেও মনে করেন ইফতেখারুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘দৃষ্টান্ত স্থাপন করলে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে থাকা দুর্নীতিপরায়ণ ব্যক্তিদের কাছে অন্তত এই বার্তা পৌঁছাবে যে এসব অপরাধ করে পার যাওয়া যায় না। বিচার একদিন হবেই। এই বার্তাটা আমাদের সমাজে নেই বললেই চলে। কাজেই দুদক ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জন্য এটা সুযোগ।’
বেনজীর আহমেদ ২০২০ সালের ১৫ এপ্রিল থেকে ২০২২ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আইজিপি ছিলেন। এর আগে তিনি ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার ও র্যাবের মহাপরিচালক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।
মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে র্যাবের সাত কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। ওই সময় র্যাবের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের পাশাপাশি এই বাহিনীর সাবেক কর্মকর্তারাও নিষেধাজ্ঞার আওতায় ছিলেন। যার মধ্যে বেনজীর আহমেদের নামও ছিল। যুক্তরাষ্ট্র যখন নিষেধাজ্ঞা দেয়, তখন আইজিপির দায়িত্বে ছিলেন বেনজীর আহমেদ।
ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত সাবেক এই পুলিশপ্রধান ২০২২ সালে কর্মজীবনে শুদ্ধাচার চর্চার জন্য শুদ্ধাচার পুরষ্কারও পান। ওই বছর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের আওতাধীন বিভিন্ন দপ্তর ও সংস্থাপ্রধানদের ভেতর থেকে তাকেই এ পুরষ্কারের জন্য মনোনীত করা হয়।
পরের বছর অবসরে যাওয়ার ছয় মাসের মধ্যে ২০২৩ সালের ৫ মার্চ রাজধানীর অভিজাত আবাসিক এলাকা গুলশানে এক দিনে চারটি ফ্ল্যাট কেনেন বেনজীর। ফ্ল্যাটগুলোর মোট আয়তন ৯ হাজার ১৯২ বর্গফুট। দাম দেখানো হয় মাত্র ২ কোটি ১৯ লাখ টাকা।
গত রোববার ওই চারটি ফ্ল্যাটও জব্দের আদেশ দেন আদালত।