১১:৩৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০২ জুলাই ২০২৫

মুর্শিদাবাদ-কাহিনী (পর্ব-২১১)

  • Sarakhon Report
  • ১১:০০:৫৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪
  • 20

শ্রী নিখিলনাথ রায়

কিন্তু তৎকালে ধৰ্ম্ম ও নীতিহীন, স্বার্থপর লোকদিগের অসাধ্য কোন কাৰ্য্যই ছিল না বলিয়া আমাদের বিশ্বাস। নন্দকুমার কিঞ্চিৎ স্বার্থপর হইলেও, তাঁহার চরিত্র অতীব পবিত্র ছিল, তিনি প্রকৃত ব্রাহ্মণের ন্যায় -ধৰ্ম্মনিষ্ঠ ছিলেন। ঐ সমস্ত পাপের কার্য্য্য তাঁহার মনে অত্যন্ত আঘাত দিত এবং বিপন্নের উদ্ধারের জন্য তাঁহার হৃদয় সর্ব্বদা বিচলিত হইত।

উৎপীড়িত লোকেরা তাঁহার আশ্রয় গ্রহণ করিলে, তিনি তাহাদের কল্যাণের ও স্বীয় প্রতিদ্বন্দ্বীর ক্ষমতা হ্রাসের জন্য নবকৃষ্ণের অত্যাচারের প্রতিবিধানের উপায় বলিয়া থাকিবেন এবং তাহাদিগকে তজ্জন্য সাহায্যও করিতে পারেন। এই জন্য তিনি শত্রুপক্ষীয়গণ কর্তৃক ঐ সকল ব্যক্তিকে মিথ্যা অভিযোগে উত্তেজিত করিয়াছেন বলিয়া কথিত হইয়া আসিতেছেন! লোকের উপকার করিতে গিয়া এরূপ অনেক স্থলে নন্দকুমার শত্রুপক্ষীয়গণকর্তৃক নিন্দিত ও অপদস্থ হইয়াছেন।

১৭৬৯ খৃঃ অব্দে ভের্নেষ্ট সাহেব বিলাতযাত্রা করিলে, কার্টিয়ার সাহেব তাঁহার স্থানে কাউন্সিলের সভাপতি ও গবর্ণর নিযুক্ত হন। কার্টিয়ার সাহেবের সময়েই বাঙ্গালা ১১৭৬ সালে ইংরেজী ১৭৭০ খৃঃ অব্দে বাঙ্গলায় ভীষণ দুর্ভিক্ষ উপস্থিত হয়। ইহাকেই সাধারণতঃ ‘ছিয়াত্তরে মন্বন্তর’ কহিয়া থাকে। এই ছিয়াত্তরে মন্বন্তরের সময় বাঙ্গলার নায়েব সুধা ও নায়েব দেওয়ান মহম্মদ রেজা খাঁর অত্যাচারে দেশের যাবতীয় লোক অত্যন্ত কষ্ট পাইয়াছিল। সেই জন্য তাঁহার নামে অভিযোগ উপস্থিত হয়।

তন্মধ্যে প্রধান দুইটির বিষয় উল্লেখ করা যাইতেছে। প্রথমটি, রেজা খাঁ দুর্ভিক্ষের সময় বাজারের সমস্ত চাউল ক্রয় করিয়া একচেটিয়া করিয়া রাখেন এবং অত্যন্ত উচ্চদরে সে সমস্ত বিক্রয় করেন। দ্বিতীয়টি, তিনি সাধারণ তহবিলের অনেক অর্থ অপব্যয় ও আত্মসাৎ করিয়াছিলেন। ইহার পর কার্টিয়ার সাহেব পদত্যাগ করিলে, ১৭৭২ খৃঃ অব্দে ওয়ারেন হেষ্টিংস তাঁহার স্থলে গবর্ণর নিযুক্ত হন।

মুর্শিদাবাদ-কাহিনী (পর্ব-২১১)

১১:০০:৫৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪

শ্রী নিখিলনাথ রায়

কিন্তু তৎকালে ধৰ্ম্ম ও নীতিহীন, স্বার্থপর লোকদিগের অসাধ্য কোন কাৰ্য্যই ছিল না বলিয়া আমাদের বিশ্বাস। নন্দকুমার কিঞ্চিৎ স্বার্থপর হইলেও, তাঁহার চরিত্র অতীব পবিত্র ছিল, তিনি প্রকৃত ব্রাহ্মণের ন্যায় -ধৰ্ম্মনিষ্ঠ ছিলেন। ঐ সমস্ত পাপের কার্য্য্য তাঁহার মনে অত্যন্ত আঘাত দিত এবং বিপন্নের উদ্ধারের জন্য তাঁহার হৃদয় সর্ব্বদা বিচলিত হইত।

উৎপীড়িত লোকেরা তাঁহার আশ্রয় গ্রহণ করিলে, তিনি তাহাদের কল্যাণের ও স্বীয় প্রতিদ্বন্দ্বীর ক্ষমতা হ্রাসের জন্য নবকৃষ্ণের অত্যাচারের প্রতিবিধানের উপায় বলিয়া থাকিবেন এবং তাহাদিগকে তজ্জন্য সাহায্যও করিতে পারেন। এই জন্য তিনি শত্রুপক্ষীয়গণ কর্তৃক ঐ সকল ব্যক্তিকে মিথ্যা অভিযোগে উত্তেজিত করিয়াছেন বলিয়া কথিত হইয়া আসিতেছেন! লোকের উপকার করিতে গিয়া এরূপ অনেক স্থলে নন্দকুমার শত্রুপক্ষীয়গণকর্তৃক নিন্দিত ও অপদস্থ হইয়াছেন।

১৭৬৯ খৃঃ অব্দে ভের্নেষ্ট সাহেব বিলাতযাত্রা করিলে, কার্টিয়ার সাহেব তাঁহার স্থানে কাউন্সিলের সভাপতি ও গবর্ণর নিযুক্ত হন। কার্টিয়ার সাহেবের সময়েই বাঙ্গালা ১১৭৬ সালে ইংরেজী ১৭৭০ খৃঃ অব্দে বাঙ্গলায় ভীষণ দুর্ভিক্ষ উপস্থিত হয়। ইহাকেই সাধারণতঃ ‘ছিয়াত্তরে মন্বন্তর’ কহিয়া থাকে। এই ছিয়াত্তরে মন্বন্তরের সময় বাঙ্গলার নায়েব সুধা ও নায়েব দেওয়ান মহম্মদ রেজা খাঁর অত্যাচারে দেশের যাবতীয় লোক অত্যন্ত কষ্ট পাইয়াছিল। সেই জন্য তাঁহার নামে অভিযোগ উপস্থিত হয়।

তন্মধ্যে প্রধান দুইটির বিষয় উল্লেখ করা যাইতেছে। প্রথমটি, রেজা খাঁ দুর্ভিক্ষের সময় বাজারের সমস্ত চাউল ক্রয় করিয়া একচেটিয়া করিয়া রাখেন এবং অত্যন্ত উচ্চদরে সে সমস্ত বিক্রয় করেন। দ্বিতীয়টি, তিনি সাধারণ তহবিলের অনেক অর্থ অপব্যয় ও আত্মসাৎ করিয়াছিলেন। ইহার পর কার্টিয়ার সাহেব পদত্যাগ করিলে, ১৭৭২ খৃঃ অব্দে ওয়ারেন হেষ্টিংস তাঁহার স্থলে গবর্ণর নিযুক্ত হন।