০৮:১৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৩ জুলাই ২০২৫

মুর্শিদাবাদ-কাহিনী (পর্ব-২১৯)

  • Sarakhon Report
  • ১১:০০:২২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪
  • 17

শ্রী নিখিলনাথ রায়

অপর সভ্যত্রয় হেষ্টিংস করিয়া, সভার কার্য্য করিতে লাগিলেন। সাহেবের প্রস্তাব গ্রাহ্য না নন্দকুমার উপস্থিত হইলে, তাঁহারা নন্দকুমারকৃত অভিযোগের প্রমাণাদি চাহেন। নন্দকুমার কতকগুলি দলিল উপস্থিত করেন; তাহাদের মধ্যে দুই একখানির মূল দলিল চাহিলে, তাহাও প্রদত্ত হয়। এই দলিলের সহিত কৃষ্ণকান্ত নন্দীর কোন সম্বন্ধ থাকায়, কাউন্সিল হইতে তাঁহাকে আহ্বান করা হয়। কিন্তু তিনি লিখিয়া পাঠান যে, আমি এক্ষণে গবর্ণর সাহেবের নিকট থাকায় এবং তিনি আমাকে যাইতে নিষেধ করায়, আমি যাইতে পারিলাম না। ইহাতে তাঁহারা কান্ত বাবুর প্রতি বিরক্ত হইয়াছিলেন।

সে দিবস অন্যান্য কার্য্যের পর সভা ভঙ্গ হয়। ইহার পর কান্ত বাবুকে আহ্বান করিয়া, তাঁহাকে বোর্ডের আদেশ অমান্য করার জন্য কিরূপ জিজ্ঞাসা করা হইয়াছিল, তাহা কান্ত বাবু নামক প্রবন্ধে উল্লিখিত হইবে। কাউন্সিলে অপদস্থ হওয়ায় নন্দকুমারের প্রতি হেষ্টিংসের প্রতিহিংসানল এতদূর প্রজ্বলিত হইয়া উঠিল যে. তিনি বৃদ্ধ ব্রাহ্মণের প্রাণনাশের পর্যন্ত বাসনা করিতে লাগিলেন। অচিরাৎ তিনি অনুচরবর্গের সহিত তাহার আয়োজনে প্রবৃত্ত হইলেন।

হেষ্টিংস নন্দকুমারের প্রধান শত্রু গ্রেহাম সাহেবের সহকারিতায় নন্দকুমারের অনিষ্টসাধনের পরামর্শে প্রবৃত্ত হইলেন। গঙ্গাগোবিন্দ সিংহ, কান্ত বাবু, নবকৃষ্ণ এবং গ্রেহাম সাহেবের মুন্সী সদর উদ্দীন প্রভৃতি সক- লেই সাধ্যমত হেষ্টিংসের সাহায্য করিতে লাগিলেন। কমল উদ্দীন খাঁ নামে একজন শয়তান প্রকৃতির লোক সেই সময়ে হিজলীর ইজারদারী করিত। নন্দকুমারের সহিত তাহার এবং তাহার পিতার পরিচয় ছিল।

কিন্তু কমলের অসৎপ্রকৃতির জন্য নন্দকুমারের সহিত তাহার মনোবিবাদ উপস্থিত হয়। যে সময়ে হেষ্টিংসের সহিত নন্দকুমারের বিবাদ চলিতেছিল, সেই সময় কমল উদ্দীন নন্দকুমারের জামাতা রাধাচরণকে লইয়া তাঁহার সহিত মিত্রতা করিতে উপস্থিত হয়। নন্দকুমার রাধা- চরণের অনুরোধে কমল উদ্দীনের প্রতি বিদ্বেষভাব পরিত্যাগ করেন।

জনপ্রিয় সংবাদ

মুর্শিদাবাদ-কাহিনী (পর্ব-২১৯)

১১:০০:২২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪

শ্রী নিখিলনাথ রায়

অপর সভ্যত্রয় হেষ্টিংস করিয়া, সভার কার্য্য করিতে লাগিলেন। সাহেবের প্রস্তাব গ্রাহ্য না নন্দকুমার উপস্থিত হইলে, তাঁহারা নন্দকুমারকৃত অভিযোগের প্রমাণাদি চাহেন। নন্দকুমার কতকগুলি দলিল উপস্থিত করেন; তাহাদের মধ্যে দুই একখানির মূল দলিল চাহিলে, তাহাও প্রদত্ত হয়। এই দলিলের সহিত কৃষ্ণকান্ত নন্দীর কোন সম্বন্ধ থাকায়, কাউন্সিল হইতে তাঁহাকে আহ্বান করা হয়। কিন্তু তিনি লিখিয়া পাঠান যে, আমি এক্ষণে গবর্ণর সাহেবের নিকট থাকায় এবং তিনি আমাকে যাইতে নিষেধ করায়, আমি যাইতে পারিলাম না। ইহাতে তাঁহারা কান্ত বাবুর প্রতি বিরক্ত হইয়াছিলেন।

সে দিবস অন্যান্য কার্য্যের পর সভা ভঙ্গ হয়। ইহার পর কান্ত বাবুকে আহ্বান করিয়া, তাঁহাকে বোর্ডের আদেশ অমান্য করার জন্য কিরূপ জিজ্ঞাসা করা হইয়াছিল, তাহা কান্ত বাবু নামক প্রবন্ধে উল্লিখিত হইবে। কাউন্সিলে অপদস্থ হওয়ায় নন্দকুমারের প্রতি হেষ্টিংসের প্রতিহিংসানল এতদূর প্রজ্বলিত হইয়া উঠিল যে. তিনি বৃদ্ধ ব্রাহ্মণের প্রাণনাশের পর্যন্ত বাসনা করিতে লাগিলেন। অচিরাৎ তিনি অনুচরবর্গের সহিত তাহার আয়োজনে প্রবৃত্ত হইলেন।

হেষ্টিংস নন্দকুমারের প্রধান শত্রু গ্রেহাম সাহেবের সহকারিতায় নন্দকুমারের অনিষ্টসাধনের পরামর্শে প্রবৃত্ত হইলেন। গঙ্গাগোবিন্দ সিংহ, কান্ত বাবু, নবকৃষ্ণ এবং গ্রেহাম সাহেবের মুন্সী সদর উদ্দীন প্রভৃতি সক- লেই সাধ্যমত হেষ্টিংসের সাহায্য করিতে লাগিলেন। কমল উদ্দীন খাঁ নামে একজন শয়তান প্রকৃতির লোক সেই সময়ে হিজলীর ইজারদারী করিত। নন্দকুমারের সহিত তাহার এবং তাহার পিতার পরিচয় ছিল।

কিন্তু কমলের অসৎপ্রকৃতির জন্য নন্দকুমারের সহিত তাহার মনোবিবাদ উপস্থিত হয়। যে সময়ে হেষ্টিংসের সহিত নন্দকুমারের বিবাদ চলিতেছিল, সেই সময় কমল উদ্দীন নন্দকুমারের জামাতা রাধাচরণকে লইয়া তাঁহার সহিত মিত্রতা করিতে উপস্থিত হয়। নন্দকুমার রাধা- চরণের অনুরোধে কমল উদ্দীনের প্রতি বিদ্বেষভাব পরিত্যাগ করেন।