ম্যাকসিম গোর্কী
একটি চিঠি
হেথা শ্যাওলার দল আর নাই, তাহাদেরই শূন্য ঠাঁই ভ’রে তবু শ্যাওলার গন্ধ পাই; ভারী, ভেজা গন্ধ পাই।… কথাগুলি খুব সুন্দর, খুব সত্যি।…”
এমন সময় অকস্মাৎ পায়ের তলা থেকে একটা খরগোস বার হ’য়ে এলো। লিও নিকোলাইয়েভিচ উত্তেজিত হ’য়ে উঠলেন, তাঁর মুখ উজ্জ্বল হ’য়ে উঠলো। তিনি সত্যিকারের বুড়ো শিকারীর মতো শব্দ করতে লাগলেন। পরক্ষণেই তিনি আমার পানে তাকিয়ে দুর্বোধ্য ভাবে নীরবে মৃদু হাসলেন, তারপর ফেটে পড়লেন সহজবোধ্য সস্নেহ সশব্দ হাসিতে। ওই মুহূর্তটিতে তাঁকে আশ্চর্য রকমের সুন্দর লেগেছিল।
আর এক সময়ে তিনি একবার বাগানে একটা বাজপাখীর দিকে তাকিয়েছিলেন। পাখীটা তার পাখা দুটোকে বাতাসে অত্যন্ত লঘুন্দে ছলিয়ে বৃহৎ চক্রাকারে কেবলই ঘুরে বেড়াচ্ছিল, সে স্থির করতে পারছিল না যে তার আঘাত হানবার মুহূতটি ঠিক কখন আসবে।
লিও নিকোলাইয়েভিচ হাত দিয়ে চোখ আড়াল ক’রে দাঁড়ালেন, উত্তেজনার সংগে বিড়বিড় ক’রে বললেন: ‘পাখীটা আমাদের বাড়ির মুরগীর ছানাগুলোকে খেতে চলেছে। এইযে আবার এদিকে আসছে ও, ভয় পয়েছে। সহিসটা ওখানে আছে, তাই না? সহিসটাকে ডাকি।….’
তিনি চেঁচিয়ে সহিসকে ডাকতে লাগলেন। তাঁর ডাকার শব্দে বাজপাখীটা ভয় পেয়ে ওপরের দিকে ঝাপটা দিয়ে এক দোলে উঠে অদৃশ্য হ’য়ে গেলো। লিও নিকোলাইয়েভিচ স্পষ্টত নিজেকে ভৎসনা ক’রে দীর্ঘশ্বাস ফেললেন, বললেন, “আমার চেঁচানোটা উচিত হোলো না। না চেঁচালেও ও মারতো।….”
একবার টিফলিস সম্বন্ধে আলাপ করার সময় আমি তাঁর কাছে ভি. ভি. ফ্লেরোভস্কি বেভির নাম উল্লেখ করলাম। লিও নিকোলাইয়েভিচ কৌতূহলী হ’য়ে প্রশ্ন করলেন “তুমি তাঁকে চেনো নাকি? বলো তো, তিনি কেমন?”