ম্যাকসিম গোর্কী
একটি চিঠি
আমি মন্তব্য করলাম, যতোক্ষণ আমরা আমাদের এই মানবরূপী অপরিহার্য “সহযাত্রীদের” সংকীর্ণ গণ্ডীর মধ্যে বাস করবো, ততোক্ষণ আমরা আমাদের প্রাসাদ রচনা করতে থাকবো চোরাবালির ওপর, বিরুদ্ধ উপকরণ দিয়ে।
তিনি মৃদু হেসে তাঁর কনুই দিয়ে আমাকে মৃদু ঠেলা দিয়ে বললেন, “ও থেকে কিন্তু অত্যন্ত, অত্যন্ত সব বিপজ্জনক সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া যায়। তুমি যথার্থ সোস্তালিস্ট নও। তুমি হোলে রোমান্টিসিস্ট, আর রোমান্টিসিস্টরা মনার্কিস্ট না হ’য়ে পারে না-চিরদিন হয়েছে-ও তাই।”
“কিন্তু হিউগো?”
‘হিউগো? তাঁর কথা আলাদা। আমি তাঁকে পছন্দ করি না।
তিনি বড়ো চেঁচামেচি করেন।”
তিনি আমাকে প্রায়ই প্রশ্ন করতেন, আমি কি পড়ছি। যদি, তাঁর মতে, কোনো খারাপ বই পড়তাম, তবে তিনি সর্বদাই আমাকে তিরস্কার করতেন।
“গীবন কস্টমারোভের চেয়েও খারাপ। লোকের মনে পড়া উচিত। মমসেন নীরস, কিন্তু তাঁর মধ্যেকার বস্তু কু জমাট।”
তিনি যখন শুনলেন যে আমি সর্বপ্রথমে যে বইটি পড়ি, সেটি হোলো “সেম্ঙ্গান্নো ভাইয়েরা”, তখন তিনি চটে উঠলেন, “ঐ দ্যাখো-অতি বাজে নভেল। ওই বইখানাই তোমায় নষ্ট ক’য়ে দিয়েছে। ফরাসী ভাষায় মাত্র তিনজন লেখক আছেন, স্তেদ্ধাল, বালজাক, ফ্লবের।
আর সম্ভবত মোপাশা, যদি-ও আমাদের শেখভ মোপাশার চেয়ে ভালো। গঁকুর- ভাইয়েরা, ওঁরা হ’লেন নিছক ভাঁড়, ওঁরা কেবল গাম্ভীর্যের ভাণ করেন। ওঁদের মতোই অন্যান্য উদ্ভাবকদের লেখা বই থেকে ওঁরা জীবনকে দেখেছেন; আর এই দেখাকে তাঁরা একটা গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার ব’লে ভাবতেন। কিন্তু কোনো মানুষের আত্মার কাছে এর কোনো দাম নেই।
তাঁর এই মতামতের সংগে আমার মতদ্বৈধ হোলো। ব্যাপারটা লিও নিকোলাইয়েভিচ কে একটু বিরক্ত ক’রে দিলো। তিনি প্রতিবাদ বড়ো একটা সইতে পারতেন না। আর, মাঝে মাঝে তাঁর মতামতগুলো বড়ো অদ্ভুত ও খামখেয়ালী হ’য়ে উঠতো।