প্রদীপ কুমার মজুমদার
প্রথম উদাহরণ ঋগ্বেদের দশম অধ্যায়ের ত্রয়োদশ মণ্ডলের পঞ্চম শ্লোকটি তুলে ধরছি। এখানে বলা হয়েছে- “সপ্ত ক্ষরন্তি শিশবে মরুত্বতে পিত্রে”
অর্থাৎ, স্তোতৃবর্গ পরিবেষ্টিত ও শংসনীয় পিতার উদ্দেশ্যে সপ্ত (অর্থাৎ সপ্ত সংখ্যক ছন্দ) উচ্চারিত হচ্ছে। এখানে সপ্ত সংজ্ঞার দ্বারা বৈদিক ছন্দকে বোঝান হচ্ছে।
সায়নাচার্য ভান্ত করতে গিয়ে বলেছেন-“সপ্তছন্দাংসি ক্ষরন্তি”। কিন্তু অথর্ববেদে এই শ্লোকটির ভায় করতে গিয়ে সায়ণাচার্য সপ্ত সংখ্যক নদীর কথাই বলেছেন। অর্থাৎ দেখা যাচ্ছে সপ্ত শব্দটি থেকে দুটি নাম সংখ্যা পাওয়া যাচ্ছে। এবার ঋগ্বেদের সপ্তম অধ্যায়ের একশ তিন শ্লোকটির কথা ধরা যাক। এখানে বলা হয়েছে:
“দেবহিতিং জগুপুর্ব্বাদশস্য ঋতুং নরে। না প্রমিনংত্যেতে” দ্বাদশ বলতে বৎসরকেই বোঝান হয়েছে। অন্তত এ কথার সমর্থনের জন্য সায়নাচার্যের ভাষ্য তুলে ধরা যেতে পারে। সায়নাচার্য বলেছেন, “দ্বাদশ দ্বাদশমাসাত্মকক্ষ সংবৎসরস্থ্য”।
এবার ঋগ্বেদের তৃতীয় অধ্যায়ের ছাব্বিস মণ্ডলের অষ্টম ঋকটি তৃতীয় উদাহরণ হিসাবে তুলে ধরছি। এখানে বলা হয়েছে-“ত্রিভিঃ পবিত্রৈরপুপোদ্ধ্যর্কং” অর্থাৎ (অগ্নি) “পবিত্র তিন দ্বারা অর্চনীয় আত্মাকে পবিত্র করেছিলেন। এছাড়াও নাম সংখ্যার আরও প্রয়োগ ঋগ্বেদের নানা মণ্ডলে দেখতে পাওয়া যায়।
সামবেদেও নাম সংখ্যার প্রয়োগ দেখতে পাওয়া যায়। যেমন এক জায়গায় বলা হয়েছে-“অয়ং ত্রিঃসপ্ত দদুহান”। এখানে ত্রিঃসপ্ত সংখ্যা দিয়ে ঐ সংখ্যক গুরুকে উল্লেখ করা হয়েছে। অন্য একটি শ্লোক সংখ্যা দিয়ে বস্তুকে বোঝান হয়েছে।
যেমন ‘ধ্বস্রয়ো পুরুষান্ত্যো বা সহস্রাণি দদ্মহে’। এখানে সহস্র অর্থ সহস্র সংখ্যক ধন বোঝান হয়েছে। অথর্ববেদেও নাম সংখ্যার বহুল ব্যবহার দেখতে পাওয়া যায়। যেমন কোন এক জায়গায় বলা হয়েছে “অশীতিভিস্তিস্বভিঃ সামগেভিরাদিত্যেভিবস্তৃভিরঙ্গিরোভি”।
(চলবে)