১২:৫৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০৯ জুলাই ২০২৫
প্রাচীন ভারতে গণিতচর্চা (পর্ব-২৩১) বিরল মাটির দখলে চীনের জয়যাত্রা ও পরিবেশের চড়া খেসারত বিশ্বব্যাপী প্রতিক্রিয়ার মধ্যেও কেন চীনের রেয়ার আর্থ আধিপত্য অটুট জৈবজ্বালানি বিধিমালা ও ভূরাজনৈতিক ঝাঁকুনিতে পাম ওয়েল বাজার কৃষকের স্ত্রীর পরিচয়ের ঊর্ধ্বে: লিঙ্গভিত্তিক পরিসর উন্মোচন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দরকষাকষিতে ব্যর্থতার অভিযোগ, আলোচকদের যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন হিউএনচাঙ (পর্ব-১৪২) ট্রাম্পের শুল্ক চিঠি এশিয়াকে ১ আগস্টের মধ্যে চুক্তি করতে চাপ দিচ্ছে ট্রাম্পের নতুন শুল্কে এশীয় মুদ্রার অবনতি, শেয়ারবাজারে মৃদু পরিবর্তন সেনাপ্রধানের সাথে তুরস্কের ডিফেন্স ইন্ডাস্ট্রিজ এর মান্যবর সেক্রেটারি’র সৌজন্য সাক্ষাৎ

নির্মাণ শ্রমিকদের ১২ দফা বাস্তবায়নের দাবীতে মানববন্ধন

  • Sarakhon Report
  • ০৫:৩৭:২০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ জানুয়ারী ২০২৫
  • 20

নিজস্ব প্রতিবেদক 

ইমারত নির্মাণ শ্রমিক ইউনিয়ন বাংলাদেশ (ইনসাব) দেশের নির্মাণ শ্রমিকদের ১২ দফা দাবী বাস্তবায়নের জন্য সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি জোরদাবী জানিয়েছে।

আজ ১৮ জানুয়ারী ২০২৫ নির্মাণ শ্রমিকদের দাবী দিবস উপরক্ষে ইমরাত নির্মাণ শ্রমিক ইউনিয়ন বাংলাদেশ (ইনসাব) আয়োজিত সমাবেশে শ্রমিক নেতৃবৃন্দ এই দাবী জানান। জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ইনসাবের সভাপতি মোঃ রবিউল ইসলাম।

বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক সালেহ আহমেদ, ইনসাব কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোঃ আব্দুর রাজ্জাক, সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ আলী হোসেন, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম রাব্বানী, অর্থ সম্পাদক রেজাউল ইসলাম, শ্রম ও দরকষাকষি সম্পাদক জালাল আহমেদ, মহিলা সম্পাদিকা সায়েরা খাতুন, দপ্তর সম্পাদক মোঃ আজিজুর রহমান আজিজ, প্রচার সম্পাদক মোঃ শরিফ মিয়া, ক্রীড়া সম্পাদক আমান উল্লাহ আমান, কার্যকরী সদস্য সোহরাব হোসেন, হুমায়ুন কবির রেজা, নারায়নগঞ্জ জেলা কমিটির সভাপতি মাহবুব আলম প্রমুখ।

সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ অপ্রাতিষ্ঠানিক শিল্প খাত হলো নির্মাণ খাত। এই খাতে দেশে প্রায় ৩৫ লক্ষের উর্দ্ধে নির্মাণ শ্রমিক কাজ করছে। প্রবাসী শ্রমিক হিসেবে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশেও রয়েছে আমাদের দেশের সমপরিমান নির্মাণ শ্রমিক। নির্মাণ শ্রমিকরা আধুনিক নগর সভ্যতা বিনির্মাণের মূল কারিগর। দেশের দালান কোঠা, ব্রীজ কালভার্টসহ নান্দনিক সৌন্দর্য্য ও অবকাঠামো নির্মাণের মাধ্যমে দেশের জাতীয় অর্থনীতিতে নিরবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলছে। কিন্তু যাদের শ্রমে ঘামে জাতীয় অর্থনীতি বিকশিত হচ্ছে, দেশ মধ্যম আয়ের দেশে রুপান্তর হতে চলছে সেই নির্মাণ শ্রমিকরা এখনো মানবেতর জীবনযাপন করছে। রাষ্ট্রের কাছে তাদের কাজের তেমন কোন স্বীকৃতি নেই। নেই তাদের সামাজিক সুরক্ষা। এই সেক্টরে কাজ করতে গিয়ে প্রতিনিয়ত অনেক শ্রমিক আহত বা নিহত হন। অনেকেই দুর্ঘটনায় সারাজীবনের জন্য কর্মক্ষম ও পঙ্গুত্ববরণ করেন। যে শ্রমিকরা দেশ গড়ার কারিগর এবং যাদের রক্তের বিনিময়ে এই দেশ স্বাধীন হয়েছে তাদের মধ্যে নির্মাণ শ্রমিকদেরও অবদান রয়েছে। স্বাধীনতার ৫ দশক পেরিয়ে তাদের মজুরী, বাসস্থান, চিকিৎসা ও সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য আজও আন্দোলন করতে হচ্ছে, যা খুবই দুঃখজনক।

নেতৃবৃন্দ কর্মস্থলে দুর্ঘটনায় নিহত ও আহত এবং পঙ্গুত্ববরণকারী শ্রমিকদের আইএলও কনভেনশন ১২১ মোতাবেক এক জীবনের সমপরিমান ক্ষতিপূরণ শ্রম আইন অন্তর্ভূক্ত ও শ্রমিকদের প্রদান করার দাবী জানান।

নেতৃবৃন্দ বলেন দ্রব্যমূল্যের ক্রমবর্ধমান উর্দ্ধগতিসহ সার্বিক জীবন ধারনের ব্যয় যে হারে বৃদ্ধি পেয়েছে তাতে একজন নির্মাণ শ্রমিকের পরিবার পরিজনসহ জীবন জীবিকা নির্বাহ করা কঠিন হয়ে দাড়িয়েছে। সে প্রেক্ষিতে রেশনিং প্রথা চালুর মাধ্যমে চাল, ডাল, তেল আটা সর্বস্তরের নির্মাণ শ্রমিকদের ন্যায্য মূল্যে  সরবরাহ করা বিনামূল্যে চিকিৎসা এবং নির্মাণ শ্রমিকের সন্তানদের শিক্ষার ব্যবস্থা করে সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবী জানান। নির্মাণ সেক্টরের শ্রমিকদের নিয়োগপত্র ছুটি, ওভারটাইম সুবিধা নেই। তাদেরকে নানাভাবে হয়রানী ও নির্যাতন করা হয়। তারা শ্রম আইনের নূন্যতম সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত। সমান কাজ করলেও নারী নির্মাণ শ্রমিকদের কম মজুরী দেয়া হয়।

নেতৃবৃন্দ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন সম্প্রতি সরকার “মরার উপর খড়ার ঘা” হিসাবে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের উপর করারোপ করেছে। এতে জ¦ালানী ও পরিবহন খরচসহ নিম্নআয়ের সাধারণ মানুষের জীবনধারণ ব্যয় আরো কঠিন হয়ে যাবে। নেতৃবৃন্দ আরোপিত কর অবিলম্বে প্রত্যাহার করার দাবী জানান। গত ১৩ জানুয়ারি ২০২৫ তারিখ শ্রম উপদেষ্টা, শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শক, শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রধান বরাবর সংগঠনের পক্ষ থেকে ১২ দফা স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।

নেতৃবৃন্দ সারাদেশে নির্মাণ শ্রমিকদের জন্য বাসস্থান, কর্মক্ষেত্রে পেশাগত স্বাস্থ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত, শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনের বোর্ড সভা প্রতিমাসে ১ বার রেশনিং ব্যবস্থা, সকল নির্মাণাধীন ভবনে কর্মরত শ্রমিকদের হাজিরা খাতা, নূন্যতম মজুরি সম্মানজনকভাবে বৃদ্ধির দাবি জানিয়েছেন। সমাবেশে শেষে একটি বর্ণাঢ্য র‌্যালী রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।

প্রাচীন ভারতে গণিতচর্চা (পর্ব-২৩১)

নির্মাণ শ্রমিকদের ১২ দফা বাস্তবায়নের দাবীতে মানববন্ধন

০৫:৩৭:২০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ জানুয়ারী ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক 

ইমারত নির্মাণ শ্রমিক ইউনিয়ন বাংলাদেশ (ইনসাব) দেশের নির্মাণ শ্রমিকদের ১২ দফা দাবী বাস্তবায়নের জন্য সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি জোরদাবী জানিয়েছে।

আজ ১৮ জানুয়ারী ২০২৫ নির্মাণ শ্রমিকদের দাবী দিবস উপরক্ষে ইমরাত নির্মাণ শ্রমিক ইউনিয়ন বাংলাদেশ (ইনসাব) আয়োজিত সমাবেশে শ্রমিক নেতৃবৃন্দ এই দাবী জানান। জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ইনসাবের সভাপতি মোঃ রবিউল ইসলাম।

বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক সালেহ আহমেদ, ইনসাব কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোঃ আব্দুর রাজ্জাক, সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ আলী হোসেন, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম রাব্বানী, অর্থ সম্পাদক রেজাউল ইসলাম, শ্রম ও দরকষাকষি সম্পাদক জালাল আহমেদ, মহিলা সম্পাদিকা সায়েরা খাতুন, দপ্তর সম্পাদক মোঃ আজিজুর রহমান আজিজ, প্রচার সম্পাদক মোঃ শরিফ মিয়া, ক্রীড়া সম্পাদক আমান উল্লাহ আমান, কার্যকরী সদস্য সোহরাব হোসেন, হুমায়ুন কবির রেজা, নারায়নগঞ্জ জেলা কমিটির সভাপতি মাহবুব আলম প্রমুখ।

সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ অপ্রাতিষ্ঠানিক শিল্প খাত হলো নির্মাণ খাত। এই খাতে দেশে প্রায় ৩৫ লক্ষের উর্দ্ধে নির্মাণ শ্রমিক কাজ করছে। প্রবাসী শ্রমিক হিসেবে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশেও রয়েছে আমাদের দেশের সমপরিমান নির্মাণ শ্রমিক। নির্মাণ শ্রমিকরা আধুনিক নগর সভ্যতা বিনির্মাণের মূল কারিগর। দেশের দালান কোঠা, ব্রীজ কালভার্টসহ নান্দনিক সৌন্দর্য্য ও অবকাঠামো নির্মাণের মাধ্যমে দেশের জাতীয় অর্থনীতিতে নিরবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলছে। কিন্তু যাদের শ্রমে ঘামে জাতীয় অর্থনীতি বিকশিত হচ্ছে, দেশ মধ্যম আয়ের দেশে রুপান্তর হতে চলছে সেই নির্মাণ শ্রমিকরা এখনো মানবেতর জীবনযাপন করছে। রাষ্ট্রের কাছে তাদের কাজের তেমন কোন স্বীকৃতি নেই। নেই তাদের সামাজিক সুরক্ষা। এই সেক্টরে কাজ করতে গিয়ে প্রতিনিয়ত অনেক শ্রমিক আহত বা নিহত হন। অনেকেই দুর্ঘটনায় সারাজীবনের জন্য কর্মক্ষম ও পঙ্গুত্ববরণ করেন। যে শ্রমিকরা দেশ গড়ার কারিগর এবং যাদের রক্তের বিনিময়ে এই দেশ স্বাধীন হয়েছে তাদের মধ্যে নির্মাণ শ্রমিকদেরও অবদান রয়েছে। স্বাধীনতার ৫ দশক পেরিয়ে তাদের মজুরী, বাসস্থান, চিকিৎসা ও সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য আজও আন্দোলন করতে হচ্ছে, যা খুবই দুঃখজনক।

নেতৃবৃন্দ কর্মস্থলে দুর্ঘটনায় নিহত ও আহত এবং পঙ্গুত্ববরণকারী শ্রমিকদের আইএলও কনভেনশন ১২১ মোতাবেক এক জীবনের সমপরিমান ক্ষতিপূরণ শ্রম আইন অন্তর্ভূক্ত ও শ্রমিকদের প্রদান করার দাবী জানান।

নেতৃবৃন্দ বলেন দ্রব্যমূল্যের ক্রমবর্ধমান উর্দ্ধগতিসহ সার্বিক জীবন ধারনের ব্যয় যে হারে বৃদ্ধি পেয়েছে তাতে একজন নির্মাণ শ্রমিকের পরিবার পরিজনসহ জীবন জীবিকা নির্বাহ করা কঠিন হয়ে দাড়িয়েছে। সে প্রেক্ষিতে রেশনিং প্রথা চালুর মাধ্যমে চাল, ডাল, তেল আটা সর্বস্তরের নির্মাণ শ্রমিকদের ন্যায্য মূল্যে  সরবরাহ করা বিনামূল্যে চিকিৎসা এবং নির্মাণ শ্রমিকের সন্তানদের শিক্ষার ব্যবস্থা করে সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবী জানান। নির্মাণ সেক্টরের শ্রমিকদের নিয়োগপত্র ছুটি, ওভারটাইম সুবিধা নেই। তাদেরকে নানাভাবে হয়রানী ও নির্যাতন করা হয়। তারা শ্রম আইনের নূন্যতম সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত। সমান কাজ করলেও নারী নির্মাণ শ্রমিকদের কম মজুরী দেয়া হয়।

নেতৃবৃন্দ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন সম্প্রতি সরকার “মরার উপর খড়ার ঘা” হিসাবে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের উপর করারোপ করেছে। এতে জ¦ালানী ও পরিবহন খরচসহ নিম্নআয়ের সাধারণ মানুষের জীবনধারণ ব্যয় আরো কঠিন হয়ে যাবে। নেতৃবৃন্দ আরোপিত কর অবিলম্বে প্রত্যাহার করার দাবী জানান। গত ১৩ জানুয়ারি ২০২৫ তারিখ শ্রম উপদেষ্টা, শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শক, শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রধান বরাবর সংগঠনের পক্ষ থেকে ১২ দফা স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।

নেতৃবৃন্দ সারাদেশে নির্মাণ শ্রমিকদের জন্য বাসস্থান, কর্মক্ষেত্রে পেশাগত স্বাস্থ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত, শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনের বোর্ড সভা প্রতিমাসে ১ বার রেশনিং ব্যবস্থা, সকল নির্মাণাধীন ভবনে কর্মরত শ্রমিকদের হাজিরা খাতা, নূন্যতম মজুরি সম্মানজনকভাবে বৃদ্ধির দাবি জানিয়েছেন। সমাবেশে শেষে একটি বর্ণাঢ্য র‌্যালী রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।