প্রদীপ কুমার মজুমদার
জৈনাচার্য জিনসেন লিখিত ‘নেমাপুরাণে’ নামসংখ্যার প্রয়োগ দেখতে পাওয়া যায়। এই গ্রন্থের এক জায়গায় বলা হয়েছে: “স্থানক্রমাত্রিকং দ্বে চ ঘট, চত্বারি নব দ্বিকং” অর্থাৎ উল্লিখিত সংখ্যাটি হচ্ছে-২৯৪৬২৩।
যে কয়েকজন জৈন পণ্ডিত নামসংখ্যার উল্লেখ করেন তাঁদের মধ্যে পার্শ্বদেবগণি, শ্রীচন্দ্রদুরী, রত্নপ্রভাকর প্রভৃতির নাম উল্লেখযোগ্য। পার্শ্বদেবগণি গ্রহরসরুদ্র = ১১৬৯ বলেছেন। এখন গ্রহ-১, রস-৬, রুদ্র-১১ ধরা হয়েছে। শ্রীচন্দ্রসূরী করণসূর্য্য -১৬২২ বলেছেন। রত্নপ্রভাকর সুরী বঙ্গলোকার্ক-১২৩৮ লিখেছেন। এখানে বন্ধু-৫, লোক-৩, অর্ক-১২ ধরা হয়েছে।
প্রসঙ্গত বলা প্রয়োজন যে জৈন গণিতগ্রন্থে নামসংখ্যার সাহায্যে, কেন সংখ্যার উল্লেখ করা হয়েছে সে সম্পর্কে স্পষ্ট ভাষায় বলা হয়েছে। আগেই নেমীচন্দ্রের একটি-শ্লোকে এ আভাস দেওয়া হয়েছে। এখন নেমীচন্দ্রের গ্রন্থ ছাড়াও ত্রিলোকসারে এ সম্পর্কে বেশ স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। যেমন ত্রিলোকসারের এক জায়গায় বলা হয়েছে:
“ছাদালহন্নসত্তয়াবাবন্ধং হোংতি মেরুপহুদীণং
পংচন্নং পরিধীত্ত কমেণ অংকতমেণের।”
অর্থাৎ এটির স্থলার্থ হচ্ছে “অঙ্কক্রমে রাশি বর্ণনাই নাম সংখ্যার মূলধর্ম”। জৈন গণিত গ্রন্থ বা আমাদের শাস্ত্রে নামসংখ্য। সহকারে সংখ্যার উল্লেখ আছে, সে দৃষ্টান্ত প্রচুর পেয়েছি। এবার একটু আর্যভট, ব্রহ্মগুপ্ত প্রভৃতি পঞ্চম শতাব্দী থেকে ত্রয়োদশ শতাব্দীর গণিতবিদদের ব্যবহৃত নামসংখ্যার উল্লেখ কর। প্রয়োজন।
(চলবে)
প্রাচীন ভারতে গণিতচর্চা (পর্ব-৭৫)