সত্যেন্দ্রকুমার বসু
তার বেশীর ভাগই এখন জার্মানীর জাদুঘরে। এর থেকে দেখা যায় যে, তৃতীয়-চতুর্থ শতাব্দীতে এখানকার শিল্পে গ্রীক (গান্ধারীয়) প্রভাব আর ভারতের গুপ্তযুগের প্রভাব যথেষ্ট ছিল। কিন্তু হিউএনচাঙের সমসাময়িক নিদর্শনগুলিতে ইরানের প্রভাবই বেশী দেখা যায়। এসব পট থেকে জানা যায়, এই সময়ে কুচা-প্রদেশের জীবনযাত্রা কেমন ছিল, কুচাবাসীরা কী ভাবে যুদ্ধযাত্রায় যেতেন, কীভাবে বৌদ্ধ মন্দিরে পূজা দিতেন।
তাঁদের পূজার ও যুদ্ধের পোশাক-পরিচ্ছদ অস্ত্রশস্ত্র, যুবক-যুবতীদের রকম-সকম আকৃতি-প্রকৃতি সমস্তই কী রকম সমৃদ্ধ ছিল তা এইসব ছবি থেকে বোঝা যায়। এর থেকে বোঝা যায় যে, এদের আকৃতি ছিল অনেকটা আধুনিক ইটালিয়ানদের মত, আচার-ব্যবহার ছিল ইরানীদের মত, আর ধর্মাচরণ সম্পূর্ণ বৌদ্ধ ছিল।
কুচাতে অসংখ্য বৌদ্ধশাস্ত্র সংস্কৃত থেকে অনুবাদ হত। বিখ্যাত বৌদ্ধ পণ্ডিত কুমারজীব খৃষ্টীয় চতুর্থ শতাব্দীতে এক ভারতীয়ের বংশে জন্মগ্রহণ করেন। অল্পবয়সে কাশ্মীরে গিয়ে ইনি সন্ন্যাস গ্রহণ করেন আর বেদ থেকে আরম্ভ করে বৌদ্ধ হীনযান পর্যন্ত সমস্ত শাস্ত্র অধ্যয়ন করে কুড়ি বছর বয়সের আগেই কুচায় ফিরে আসেন।
৩৮৩ খৃস্টাব্দে চীনের এক অভিযান যখন কুচা আক্রমণ করে, তখন চীন সেনাদল এঁকে উত্তর চীনে নিয়ে যায়। কুচায় ও চীনে ইনি বহু বৌদ্ধগ্রন্থ, বিশেষতঃ’সদ্ধর্মপুণ্ডরিক,’ ‘সূত্রাসংকার’ আর মাধ্যমিক মতবাদের নানা গ্রন্থ অনুবাদ করেন।
(চলবে)
Sarakhon Report 



















