সত্যেন্দ্রকুমার বসু
কুমারজীব নিজে যদিও মহাযানী ছিলেন, তবু তাঁর উপদেশ কুচায় বেশী কার্যকর হয় নি। এখানে হীনযানেরই আধিপত্য ছিল। হীনযানের ক্রমিক মতানুসারে তিন রকম মাংস বৌদ্ধরা আহার করতে পারেন।
কাজেই নিমন্ত্রণ সত্ত্বেও হিউএনচাঙ রাজার সঙ্গে আহার করতে পারলেন না। এদিকে রাজ্যের ধর্মোপদেষ্টার সঙ্গে হিউএনচাঙের মতবিরোধ হল। মোক্ষগুপ্ত বিভাষা শাস্ত্র আর অভিধর্মকশ শাস্ত্রের উল্লেখ করে হীনযান সমর্থন করতে চাইলেন।
হিউ এনচাঙ জবাব দিলেন, ‘চীনেও আমাদের এই দুই শাস্ত্র আছে, কিন্তু দুঃখের সঙ্গে আমাকে বলতে হবে যে, এগুলি নিতান্ত বাজে আর ভাসাভাসা কথায় পূর্ণ। আমি মহাযান শাস্ত্র, বিশেষতঃ যোগশাস্ত্র, অধ্যয়ন করবার জন্যেই দেশত্যাগ করেছি।’
মোক্ষগুপ্ত বললেন যে, ‘মহাযান তো বুদ্ধের বাণী নয়। মহাযান মত তো একটা নতুন মত, বুদ্ধের মতের উপর জোর ক’রে বসানো হয়েছে। যে শাস্ত্রে ভুল মত শিক্ষা দেওয়া হয়, সে শাস্ত্র অধ্যয়ন করে লাভ কী? বুদ্ধের প্রকৃত শিষ্যরা এসব পাঠ করেন না।’
এ কথায় এক মুহূর্তের জন্যে হিউএনচাঙের ধৈর্য লোপ হল, ‘যোগশাস্ত্র যিনি শিক্ষা দিয়েছেন তিনি মৈত্রেয় বুদ্ধের পূর্ণাবতার ছিলেন। এ শাস্ত্র ভুল বলে অনন্ত রসাতলে ডুববার আপনার ভয় হয় না কি?’
(চলবে)