সত্যেন্দ্রকুমার বসু
সম্রাটকে রাজী হতেই হল। তিনি এক দোভাষীকে দিয়ে কাপিশীর রাজার নিকট সুপারিশ পত্র লিখিয়ে দিলেন। আর দোভাষীকে হুকুম দিলেন যে, সে স্বয়ং ধর্মগুরুর সঙ্গে কাবুল উপত্যকায় কাপিশী পর্যন্ত ঐ চিঠিগুলো নিয়ে যাবে। হিউএনচাঙকে শিরোপা দিয়ে নিজে তাঁকে পথে খানিকদূর পর্যন্ত এগিয়ে দিয়ে এলেন।
এই ক্ষমতাশালী তুরুস্ক সম্রাটের সহায়তা না পেলে হিউএনচাঙের পক্ষে পামির আর তুখারদেশ পার হওয়া সহজ হত না। আশ্চর্যের বিষয়, এই বৎসরের শেষভাগেই এই সম্রাট হত্যাকারীর হাতে নিহত হন আর তার পর থেকেই পশ্চিম তুরুস্ক সাম্রাজ্যের পতন আরম্ভ হয়।
হিউএনচাঙ আবার পশ্চিমদিকে অগ্রসর হলেন। যে সমতলে চু নদীর দশ শাখা আর কুরাগতি নদীর নয় প্রশাখা প্রবাহিত সে সমতল পার হলেন। তখনও আর আজও তার নাম ‘সহস্রধারা’ (মিনবুলাক)। ‘এই দেশ লম্বায় চওড়ায় ৫০ মাইল। দক্ষিণে পর্বত, অন্য তিনদিকে সম-তল। প্রচুর জল আর উঁচু উঁচু বিশাল অরণ্য। বসন্তকালে শত সহস্র ফুল সমতলে ফুটে ওঠে।
প্রচুর জলাশয় থাকায় এ স্থানের নাম সহস্রধারা। সম্রাট প্রত্যেক বছর গরমের সময় এখানে আসেন। দলে দলে হরিণ ঘুরে বেড়াচ্ছে। তাদের গলায় ঘণ্টা আর আংটি বাঁধা। সম্রাট হুকুম দিয়েছেন যে, এই হরিণ কেউ মারলে তার মৃত্যুদণ্ড হবে। তাই এরা মানুষ দেখে ভয় পায় না আর মৃত্যু পর্যন্ত শান্তিতে থাকতে পারে।’
(চলবে)
হিউএনচাঙ (পর্ব-৩৭)