১২:৪২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর ২০২৫
জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তে আর্থিক পরামর্শকের ভূমিকা: কখন প্রয়োজন পেশাদার সহায়তা নিউইয়র্কের আকাশছোঁয়া মানবিক স্থাপনা: জেপি মরগান চেজ ভবনের নতুন দিগন্ত স্ট্যাটিনের বাইরে নতুন আশা: উচ্চ কোলেস্টেরল কমাতে আসছে আধুনিক ওষুধ ও জিন-সম্পাদনার যুগ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (AI) দক্ষ কর্মীরাই এখন অফিসের নতুন তারকা চীনের নৌবাহিনীতে নতুন শক্তি যোগ: ফুজিয়ান বিমানবাহী রণতরী আনুষ্ঠানিকভাবে যুক্ত মার্কিন-চীন বাণিজ্য যুদ্ধে নতুন উপাদান: অ্যান্টিমনি অনুসন্ধানে যুক্তরাষ্ট্র থাইল্যান্ড-কাম্বোডিয়া সীমান্তে মাইন বিস্ফোরণের পর ট্রাম্প-মধ্যস্থ শান্তি চুক্তি স্থগিত ভারতের ই-স্কুটার নির্মাতা এথার এনার্জির বিক্রি বেড়ে লোকসান কমল ভারতের ভোডাফোন আইডিয়ার ক্ষতি প্রত্যাশার চেয়ে কম, প্রিমিয়াম প্ল্যান গ্রাহক বাড়ায় আয় বৃদ্ধি জাতিসংঘে শেখ হাসিনার বিচার নিয়ে প্রশ্ন

হিউএনচাঙ (পর্ব-৩৯)

  • Sarakhon Report
  • ০৯:০০:১৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • 60

সত্যেন্দ্রকুমার বসু

এর পর যাত্রী তালাস্ নদী (আধুনিক আউলিয়াটা) পার হয়ে টাস্ফেন্ট গেলেন। সেখান থেকে লালবালির মরুভূমি কিজিল কুমের পূব পাশ পার হয়ে সমরখন্দে এলেন।সমরখন্দ এ সময়ে বাণিজ্য-সম্পদে খুব সমৃদ্ধ ছিল। ৬৩০ খৃস্টাব্দে হিউএনচাঙ যখন এখানে আসেন তখন এটা একটা ছোট তুরুস্ক-পারস্য রাজ্যের রাজধানী ছিল।

এর সংস্কৃতি সম্পূর্ণভাবে পারশিক ছিল। হিউ-এনচাঙ বলেন, ‘অধিবাসীদের সংখ্যা খুব বেশী। রাজা-প্রজা সবাই খুব বীর আর সাহসী। রাজা বা প্রজা কারোই বৌদ্ধধর্মে বিশ্বাস নেই। এরা অগ্নির উপাসক।’ আসলে কোনও বিশেষ ধর্মেই এদের গোঁড়ামী ছিল না। হিউএনচাঙ আরও বলেন যে, প্রথমে রাজা তাঁর সমাদর করেন নি। কিন্তু পরদিন তাঁর কাছে মোক্ষধর্মের উপদেশ পাওয়ার পর রাজার ধর্মে বিশ্বাস হয়।

রাজ্যের অধিবাসীরা হিউএনচাঙের অনুচরদের পোড়াবার জন্যে মশাল নিয়ে তাদের তাড়া করে। রাজা ঐ দুর্বৃত্তদের ধ’রে তাদের হাত পা কেটে দিতে হুকুম দিয়েছিলেন, কিন্তু ধর্মগুরু তাঁকে নিরস্ত করায়, রাজা তাদের শুধু লাঠির প্রহার দিয়ে নগর থেকে তাড়িয়ে দেন। হিউএনচাঙ বলেন যে, এর পর সব শ্রেণীর লোকেরাই দলে দলে ধর্মোপদেশ নেবার জন্যে তাঁর কাছে আসতে লাগল।

সমরখন্দ ছেড়ে পরিব্রাজক পশ্চিম-দক্ষিণে যাত্রা করলেন আর কেশ পার হয়ে পামিরের এক ছিন্ন অংশ কোটিন কোহর পর্বতে এলেন। ‘এই পর্বতের পথ খুব খাড়াই আর বিপঞ্জনক। এতে পা দেবার পর জল বা ঘাস কিছুই দেখা যায় না।’ এই পর্বতের উপর দিয়ে ৩০০ লি যাবার পর ‘লোহার কবাটে’ আসা যায়। এই বিখ্যাত গিরিসংকট দিয়ে আজও সমরখন্দ আর বন্ধুনদীর যাত্রীপ্রবাহগুলি যাতায়াত করে।

হিউএনচাঙ বলেন, দুটি সমান্তরাল পর্বতশ্রেণী দুই দিকে খুব খাড়াভাবে উঠেছে, মধ্যে কেবল একটা সরু পথ। প্রবেশ-মুখে কাঠের দুটা জোড়া কবাট রাখা আছে আর তার উপরে অনেক ছোট ছোট লোহার ঘণ্টা।কবাটের উপর অনেক লোহা মারা আছে। এই পথে সহজে শত্রু আসতে পারে না ব’লে একে লোহার কবাট বলা হয়।

(চলবে)

জনপ্রিয় সংবাদ

জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তে আর্থিক পরামর্শকের ভূমিকা: কখন প্রয়োজন পেশাদার সহায়তা

হিউএনচাঙ (পর্ব-৩৯)

০৯:০০:১৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

সত্যেন্দ্রকুমার বসু

এর পর যাত্রী তালাস্ নদী (আধুনিক আউলিয়াটা) পার হয়ে টাস্ফেন্ট গেলেন। সেখান থেকে লালবালির মরুভূমি কিজিল কুমের পূব পাশ পার হয়ে সমরখন্দে এলেন।সমরখন্দ এ সময়ে বাণিজ্য-সম্পদে খুব সমৃদ্ধ ছিল। ৬৩০ খৃস্টাব্দে হিউএনচাঙ যখন এখানে আসেন তখন এটা একটা ছোট তুরুস্ক-পারস্য রাজ্যের রাজধানী ছিল।

এর সংস্কৃতি সম্পূর্ণভাবে পারশিক ছিল। হিউ-এনচাঙ বলেন, ‘অধিবাসীদের সংখ্যা খুব বেশী। রাজা-প্রজা সবাই খুব বীর আর সাহসী। রাজা বা প্রজা কারোই বৌদ্ধধর্মে বিশ্বাস নেই। এরা অগ্নির উপাসক।’ আসলে কোনও বিশেষ ধর্মেই এদের গোঁড়ামী ছিল না। হিউএনচাঙ আরও বলেন যে, প্রথমে রাজা তাঁর সমাদর করেন নি। কিন্তু পরদিন তাঁর কাছে মোক্ষধর্মের উপদেশ পাওয়ার পর রাজার ধর্মে বিশ্বাস হয়।

রাজ্যের অধিবাসীরা হিউএনচাঙের অনুচরদের পোড়াবার জন্যে মশাল নিয়ে তাদের তাড়া করে। রাজা ঐ দুর্বৃত্তদের ধ’রে তাদের হাত পা কেটে দিতে হুকুম দিয়েছিলেন, কিন্তু ধর্মগুরু তাঁকে নিরস্ত করায়, রাজা তাদের শুধু লাঠির প্রহার দিয়ে নগর থেকে তাড়িয়ে দেন। হিউএনচাঙ বলেন যে, এর পর সব শ্রেণীর লোকেরাই দলে দলে ধর্মোপদেশ নেবার জন্যে তাঁর কাছে আসতে লাগল।

সমরখন্দ ছেড়ে পরিব্রাজক পশ্চিম-দক্ষিণে যাত্রা করলেন আর কেশ পার হয়ে পামিরের এক ছিন্ন অংশ কোটিন কোহর পর্বতে এলেন। ‘এই পর্বতের পথ খুব খাড়াই আর বিপঞ্জনক। এতে পা দেবার পর জল বা ঘাস কিছুই দেখা যায় না।’ এই পর্বতের উপর দিয়ে ৩০০ লি যাবার পর ‘লোহার কবাটে’ আসা যায়। এই বিখ্যাত গিরিসংকট দিয়ে আজও সমরখন্দ আর বন্ধুনদীর যাত্রীপ্রবাহগুলি যাতায়াত করে।

হিউএনচাঙ বলেন, দুটি সমান্তরাল পর্বতশ্রেণী দুই দিকে খুব খাড়াভাবে উঠেছে, মধ্যে কেবল একটা সরু পথ। প্রবেশ-মুখে কাঠের দুটা জোড়া কবাট রাখা আছে আর তার উপরে অনেক ছোট ছোট লোহার ঘণ্টা।কবাটের উপর অনেক লোহা মারা আছে। এই পথে সহজে শত্রু আসতে পারে না ব’লে একে লোহার কবাট বলা হয়।

(চলবে)