স্বদেশ রায়
৫ আগষ্ট ২০২৪, দেশের উদ্ভূত পরিস্থিতিতে জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দিয়েছিলেন সেনাপ্রধান। তাঁর সে ভাষণ যেমন সংক্ষিপ্ত ছিলো তেমনি ছিলো দ্বায়িত্বপূর্ণ। সেখানে মূল কথা ছিলো, “ আপনারা আমার ওপর আস্থা রাখুন” । আর বাস্তব সত্য হলো দেশের অধিকাংশ মানুষ সেনাপ্রধানের ওপরই আস্থা রেখেছিলেন। তারা শান্ত হয়ে নিজ নিজ বাড়ি বা কাজে নিয়োজিত ছিলেন। সেনাপ্রধানের কথায় আস্থা রেখে যারা শান্ত হয়ে নিজ নিজ অবস্থানে শান্তিপূর্ণভাবে ছিলেন তাদের সংখ্যা দেশের শতকরা ৯৯% এর বেশি।
কিন্তু দুর্ভাগ্য হলো, সেনাপ্রধান শান্ত থাকতে বললেও কিছু উচ্ছৃঙ্খল লোককে দেখা গেলো, সরকারি সম্পদ লুঠ করতে। সরকারি মর্যাদাপুর্ণ স্থাপনাগুলোকে লুঠের স্থানে পরিনত করতে। যা মূলত জনগনের সম্পদ। কোন ব্যক্তির নয়। আর একটি সংঘবদ্ধ গ্রুপকে দেখা গেলো, জনগনের জানমালের রক্ষক পুলিশের ওপর হামলা করতে। তাদেরকে নির্বিচারে হত্যা করতে। সেনাপ্রধান তার ২৫ ফেব্রুয়ারি দেয়া ভাষনে যা বলেছেন, পুলিশ প্যানিকড হয়ে গেছে। মূলত পুলিশের কাঠামো মনোবল, ৫ আগষ্ট ২০২৪ থেকেই ভেঙে ফেলা শুরু হয়। এবং এর ফলে যে সারা দেশে নৈরাজ্য, হত্যা, লুঠ, সংখ্যালঘু নির্যাতন শুরু হওয়া শুধু নয়, সব থেকে ভয়াবহ ঘটনা ঘটলো- জেলখানা থেকে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার হুমকি এবং গ্লোবাল টেরোরিজমের পার্ট এমন অপরাধীরাও বেরিয়ে গেলো। কারণ, পুলিশ তখন প্যানিকড। আর সে সুযোগে তাদের সহযোগীরা তাদেরকে জেল থেকে বের করে নিলো।
অন্যদিকে দেশের মানুষ অন্তত যারা সচেতন, তারা দেখতে পেলো- এই অবস্থাতেও সেনাপ্রধান সাংবিধানিক কাঠামোর ভেতরে থেকেও কোনরূপ জরুরী আইন জারি না করে, রাষ্ট্রপতির উপদেষ্টা নিয়োগ করে, একটি বেসামরিক সরকার গঠন করতে রাষ্ট্রপতিকে সর্বোচ্চ সহায়তা করলেন। তিনি দেশে একটি বেসামরিক সরকার গঠন করলেন। তিনি দেশের একজন এনজিও ব্যক্তিত্ব, যিনি ও তার সংগঠন মিলে শান্তিতে নোবেল পেয়েছেন, সেই মুহাম্মদ ইউনুসকে রাষ্ট্রপতির প্রধান উপদেষ্টা করে একটি সরকার গঠন করলেন।
কিন্তু গত সাত মাস সেই সরকারের পারফরমেন্স নিয়ে সেনাপ্রধানের ভাষনের পরে আর নতুন করে বলার কিছু নেই। কোন জেনারেল কখনই দীর্ঘ শব্দ ব্যবহার করে কমান্ড করেন না। আমাদের জেনারেলও প্রকৃত একজন জেনারেলের মতই একটি শব্দে এই সরকারের গত সাত মাসের পারফরমেন্সকে প্রকাশ করেছেন- “এনাফ” ।
সেনাপ্রধান তার কথা বলেদিয়েছেন, তাই বর্তমানে এখন যারা রাষ্ট্রপতির উপদেষ্টা আছেন, তাদের উচিত হবে, সেনাপ্রধান যেমন শান্তিপূর্ণভাবে তাদেরকে নিয়োগ দিয়েছিলেন- এখন যেহেতু সেনাপ্রধানের সঙ্গে সঙ্গে দেশের জনগনও মনে করছে “এনাফ” – অতত্রব দেশের ভবিষ্যত চিন্তা করে যারা ব্যর্থ হয়েছেন, শান্তিপূর্ণভাবে তাদের সিদ্ধান্ত নেয়া। যার ফলে দেশ শান্তিপূর্ণভাবে নতুন করে শুরু করে স্থিতিশীলতার দিকে এগিয়ে যেতে পারে।
আর গত সাত মাসে দেশ কেন এ অবস্থায় গেলো তা কিন্তু সেনাপ্রধান তার অবস্থান ও মর্যাদার সঙ্গে মিল রেখেই অত্যন্ত শোভনীয় ভাষায় এবং খুব কম শব্দে বলেছেন, “ ডিজিএফআই, র্যাব, এনএসআই, এসবি এধরনের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে আন্ডারমাইন করবেন না” । বাস্তবে গত সাত মাসে তাদেরকে আন্ডারমাইন শুধু করা হয়নি, তাদের ডিফেইমও করা হয়েছে। আর এই ডিফেইম করতে গিয়ে যে উপদেষ্টারা রাষ্ট্রপতির কাছে শপথ নিয়েছেন, রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা ভাঙ্গবেন না, সেটা ভেঙ্গেছেন। বাস্তবে একবার রাষ্ট্র প্রধানের কাছে শপথ নিলে ক্ষমতা চলে গেলেও কিন্তু রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা ভাঙার অধিকার থাকে না। কিন্তু বর্তমানে যারা ক্ষমতায় আছেন, তারা ক্ষমতায় থেকেই রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা ভেঙেছেন। এবং নিজেদের স্বার্থ, ভবিষ্যত রাজনৈতিক উদ্দেশ্যকে লাভবান করার স্বার্থে -রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিশ্ববুকে ডিফেইম করছেন। তারপরেও সেনাপ্রধান তাঁর অবস্থানের সঙ্গে মিল রেখে অত্যন্ত শোভনীয় ভাষায় বলেছেন, “আন্ডারমাইন” করবেন না।
সেনাপ্রধানের ২৫ তারিখের ভাষনটি সর্তকবানী। তাই তিনি শুধু সর্তক করে দিয়েছেন, “ আন্ডারমাইন” করবেন না বলে। কিন্তু রাষ্ট্রীয় এই সংস্থাগুলো বা রাষ্ট্রীয় কাঠামোকে ডিফেইম করতে গিয়ে যারা শপথ ভেঙেছেন -এই শপথ ভাঙার আইনত দিকটি এবং তার পরবর্তী আইনের কি করণীয় সেটা নিশ্চয়ই দেশের আইনজ্ঞগন ভালো ভাবে বলতে পারবেন। তবে যখন প্রমানিত হয় এটা রাষ্ট্রীয় শপথভঙ্গ- রাষ্ট্রীয় শপথ ভঙ্গ সব সময়েই আইনের দৃষ্টিতে রাষ্ট্রদ্রোহীতা।
সেনাপ্রধান তাঁর ভাষনে বর্তমান অবস্থাকে “অরাজক” অবস্থা বলে উল্লেখ করেছেন। বাস্তবে বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা যে “অরাজক” অবস্থা তা দেশে ও বিদেশে সকলের কাছে স্বীকৃত। এই অরাজক অবস্থা কেন হয়েছে তাও সেনাপ্রধান তার সর্তক করার জন্যে দেয়া ভাষনে বলেছেন, যে দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করার কাজ পুলিশ বাহিনীর। সেই পুলিশ বাহিনীর অনেকের বিরুদ্ধে মামলা, অনেকে জেলে, অনেকে পলাতক। তারা প্যানিকড। তাদের পক্ষে কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না। বাস্তবে দেশের আইন অনুযায়ী প্রতিটি শৃঙ্খলবাহিনীর জন্য তাদের বিভাগীয় কোর্ট ও আইন আছে। তারা কোন শৃঙ্খলাভঙ্গ করলে সেটা তাদের বিভাগীয় কোর্টে বিচার ও শাস্তি হবে। তারা যদি তাদের নির্দিষ্ট পোষাকের বাইরে এসে অন্য কোন সময় কোন ব্যক্তিগত বা অনৈতিক কাজ করে তখন ব্যক্তির অপরাধ হিসেবে তা সাধারণ কোর্টে বিচার হতে পারে। কিন্তু পদে থেকে সরকারি নির্দেশে দ্বায়িত্ব পালনের কারণে কোন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রধানসহ বড় বড় পদের প্রধানকে হাত কড়া পরিয়ে জেলে নেয়া হলে তখন ওই বাহিনী “পানিকড” হবেই। তখন আর তাদের পক্ষে দ্বায়িত্ব পালন করা সম্ভব নয়। আর এই রাষ্ট্রীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোকে যে সুপরিকল্পিতভাবে প্যানিকড করা হয়েছে তা এখন স্পষ্ট হয়ে গেছে জাতির কাছে। কারণ, তাদেরকে ভীতির মধ্যে নিয়ে মূলত গত সাত মাস দেশের ওপর সরকারি আনুকূল্যে দাপিয়ে বেড়িয়েছে একটি “প্রাইভেট বাহিনী” । এবং এই প্রাইভেট বাহিনী শুধু রাষ্ট্রীয় সম্পদ, ঐতিহাসিক সম্পদ ও ব্যক্তির সম্পদ ধ্বংস করেনি- তারা রাষ্ট্রের অন্যতম স্তম্ভ বিচার বিভাগের ওপরও আঘাত করেছে। এবং তাদের দৌরাত্মের কারণে এমন এমন বিচারপতিদেরকে বিচার কাজ থেকে দূরে রাখা হয়েছে, যাদের বিচারিক কাজ দেখে ভিন্ন দেশের প্রধান বিচারপতি অভিভূত হয়েছেন। এমনকি শ্রীলংঙ্কার প্রধান বিচারপতি ব্যক্তিগত আলোচনায় হাইকোর্টের একজন বিচারপতির বিচার পরিচালনা সম্পর্কে মন্তব্য করেছেন, অনেক দেশের অ্যাপিলেড ডিভিশনের বিচার পরিচালনা তিনি দেখেছেন, সে হিসেবে তিনি তাঁকে তাদের উপরে রাখেন। আর এর বদলে ওই প্রাইভেট বাহিনীর দৌরাত্মের কারণে যাদের বিচারপতি নিয়োগ করা হয়েছে, তাদের প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই শুধু প্রবীন আইনজীবি এবং আইন-অঙ্গনে সকলের কাছে গ্রহনযোগ্য মাহবুব উদ্দিন খোকনের একটি বক্তব্য উল্লেখ করলেই সব পরিস্কার হয়ে যায়। তিনি বলেছেন, যাদের বিচারপতি নিয়োগ করা হয়েছে তাদের বেশিভাগকে তিনি চেনেন না। আর কয়েকজনের আইনজীবির জীবনে হাইকোর্টে দুটি বা তিনটি মামলা করার অভিজ্ঞতা নেই।
অর্থাৎ শুধু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী, দেশের সীমান্তরক্ষাকারী ও দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষাকারী বাহিনীকে ক্ষতিগ্রস্থ, তাদের ওপর হামলা নয়, দেশের বিচারবিভাগেও প্যানিক সৃষ্টি করা হয়েছে। প্যানিক ও স্থবির করা হয়েছে সিভিল প্রশাসনের শত শত কর্মকর্তাকে চাকুরিচূত্য করে ও অনেককে জেলে নিয়ে। শুধু তাই নয়, দেশের মর্যাদা ও চরিত্র নষ্ট করা হয়েছে পুলিশ প্রশাসনে ট্রেনিং এর পরে যাদের যোগদান করতে দেয়া হয়নি তাদের একটি বড় অংশ সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের লোক। রাষ্ট্র সব সময়ই এসব ক্ষেত্রে ধর্মের উর্ধে থাকে। এসব ক্ষেত্রে ধর্মীয় দৃষ্টিকোন আনলে সেটা সংবিধানের ২৮(১) এর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। সংবিধানে সুনির্দিষ্ট করে বলা থাকলেও এখানে রাষ্ট্রকে ধর্মের উর্ধেও যেমন রাখা হয়নি, তেমনি মর্যাদা দেয়া হয়নি সংবিধানেরও।
যাহোক, এভাবে প্রতিটি বিষয় তুলে ধরতে গেলে বিশাল আকারের বই হয়ে যাবে। আর যেহেতু দেশের মানুষ ভুক্তভোগী তাই তারা সবাই এগুলো দেখেছেন।
এখন এর থেকে পরিত্রানের জন্যে সেনাবাহিনী প্রধান যেটা বলেছেন, দেশকে একটি “ইনক্লুসিভ ইলেকশানের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকারের দিকে নিয়ে যেতে হবে। সে লক্ষ্যে এগুনো শুরু করা এখনই দরকার। যেহেতু সেনাপ্রধান বলেছেন “এনাফ” তাই এখানেই বর্তমান অবস্থার “ ফুল স্টপ” দিয়ে ভবিষ্যতের দিকে পরবর্তী অধ্যায়ের জন্যে যাত্রা শুরু যত দ্রুত হবে ততই দেশের ও জাতির জন্য মঙ্গলজনক। আর সেজন্য দেশে কিছু দিনের জন্যে হলেও আইনগতভাবে “ স্থিতিশীলতা রক্ষার জন্য একটা জরুরী ব্যবস্থা প্রয়োগের চিন্তা করা” প্রয়োজন । আর এটা যে প্রয়োজন তা দেশের একজন ফল ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে ইউনিভারসিটির সম্মানিত অধ্যাপক ও অনান্য পেশার সিনিয়র, জুনিয়র সকল সিটিজেনও মনে করেন। এই স্থিতিশীলতার জন্যে আইনগত ব্যবস্থা নেবার পরেই প্রথম কাজ নি:সন্দেহে সেনাবাহিনীর প্রধানের সর্তকবার্তায় যা স্পষ্ট করা হয়েছে- সেটাই সত্য- অর্থাত দেশে যে অরাজকতা চলছে এর থেকে মুক্তির জন্যে পুলিশবাহিনীকে ভয়মুক্ত করে তাদেরকে স্বাভাবিক কাজে ফিরিয়ে আনতে হবে। আর তার লক্ষ্যে “ জরুরী ব্যবস্থা” যেমন প্রয়োজন তেমনি তা কার্যকর ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিকে স্বাভাবিক অবস্থায় আনার জন্যে পুলিশকে স্বাভাবিক ও ভয়মুক্ত পরিবেশে আনতে হবে। আর তার জন্যে প্রথমে প্রয়োজন, পুলিশ হত্যাকারীদের যে দায়মুক্তি ( ইনডেমনিটি) দেয়া হয়েছে তা বাতিল করা। যেহেতু সংবিধানের ২৭ অনুচ্ছেদ ও ২৬ (১) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী ইনডেমনিটির কোন সুযোগ নেই। তাই এ বে-আইনী অধ্যাদেশ বাতিল রাষ্ট্র স্বাভাবিকভাবে চললেই হয়ে যায়। রাষ্ট্রকে এই অবস্থানে দেশের নাগরিকের জান ও মালের স্বার্থে যত দ্রুত সম্ভব আসতে হবে। কারণ, সেনাবাহিনীর প্রধানের এই সর্তকবার্তার পরের দিনেও এ দেশে আরো একটি ভয়াবহ ঘটনার সূচনা হয়েছে। এই সরকারের পৃষ্টপোষকতায় চালিত প্রাইভে্ট বাহিনীর কিছু সদস্য মানুষের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে খোঁজ নিয়েছে সেখানে তাদের ভিন্নমতের লোক আছে কিনা? যা জার্মানীর নাজিদের কথা মনে করিয়ে দেয়। কারণ, একটি স্বাভাবিক রাষ্ট্রে পুলিশ ও ম্যাজিস্ট্রেট তাদের আইনি অধিকার নিয়ে কারো বাড়িতে ঢুকতে পারে, অন্য কোন ব্যক্তি বা প্রাইভেট বাহিনী নয়।
সর্বোপরি দেশের ব্যবসা বানিজ্য স্থবির হয়ে গেছে। দেশের অর্থনীতি এভাবে চলতে পারে না। ব্যবসায়ীরা প্রকাশ্য সভায় প্রধান উপদেষ্টার লোককে “গণশত্রু” হিসেবে অভিহিত করে তাদেরকে থামতে বলেছেন। এমনি বার্তা এখন দেশের সকল সেক্টরের। হয়তো সকলে মুখ ফুটে বলতে পারছে না জীবনের নিশ্চয়তার আশঙ্খায়।
যাহোক, সেনাপ্রধান যেহেতু গত সাত মাস ধৈর্য্য ধরে জাতিকে শুধু সর্তক করেননি, সাত মাস সম্পর্কে “এনাফ” একটি শব্দ দিয়ে সব বুঝিয়ে দিয়েছেন। তাই দেশবাসী এখন তাঁর দিকে তাকিয়ে। কারণ, দেশকে এখন নতুন করে যাত্রা শুরু করতে হবে। যাদের দিয়ে পরীক্ষা করা হয়েছিলো তারা তাদের যোগ্যতা কতটুকু ও নিরপেক্ষতা কতটুকু তা ইতোমধ্যে প্রমান করে ফেলেছেন। এ কারণে জাতির হাতে সময় নষ্ট করার সময় আর নেই। তাছাড়া সংস্কারের নামে ওই ধোকাবাজিতে পড়ার সময়ও আর নেই। এমনকি যাদেরকে দিয়ে এই সংস্কার করানোর কথা বলা হচ্ছে, তাদের যোগ্যতাও এদেশের মানুষ জানে। তাই রাষ্ট্রীয় অর্থ নষ্ট করে এসব করার সুযোগ দেয়া কোন অর্থবহন করে না।
সর্বোপরি বর্তমানের এই গ্লোবালাইজেশানের যুগে একটি দেশ বিচ্ছিন্ন হয়ে চলতে পারে না। এমনকি বাংলাদেশের মত একটি দেশ অবস্থানগত দিক থেকে সিরিয়া বা আফগানিস্তানের কাছাকাছি নিজেকে রেখে চলতে পারে না। দেশকে প্রায় সেখানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
তাই সেনাবাহিনী প্রধানের এই সর্তকবার্তার পরে এখন নতুন পথ চলার শুরু দ্রুতই প্রয়োজন। দেশের মানুষ ৫ আগষ্ট ২০২৪, সেনাবাহিনী প্রধানের বক্তব্যতেই আস্থা রেখেছিলেন। সাত মাস ধরে যে রুদ্ধশ্বাস অরাজকতার মধ্য দিয়ে চলছে- তার পরে ২৫ ফেব্রুয়ারি সেনাবাহিনীর প্রধানের সর্তকবানীর পরে দেশের মানুষ একটু বেঁচে থাকার ও পরিবর্তনের আশার আলো দেখতে পেয়েছে। আর তাই এখন সত্যি অর্থে মানুষ তাকিয়ে আছে তাঁর দিকে। ইতিহাস কখনও কখনও কারো কাঁধে এমন গুরুভার চাপিয়ে দেয়। আর জাতির ও একটি মানবগোষ্টির স্বার্থে তাঁকে সেটা পালন করতে হয়। এর ভেতর দিয়েই ইতিহাস সৃষ্ট ঐতিহাসিক মানুষের সৃষ্টি হয়।
লেখক: রাষ্ট্রীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত সাংবাদিক, সম্পাদক সারাক্ষণ ও The Present World.
Leave a Reply