সারাক্ষণ রিপোর্ট
দুবাই থেকে আজমাতুল্লাহ ওমরজাই তার স্ট্রিট ক্রিকেটের দিনগুলোর একটি স্মরণীয় কাহিনী শেয়ার করেন। ছোটবেলার খেলার সময়, দেরিতে উইকেট নেয়ার মাধ্যমে তিনি তাঁর বড় ভাইদের মুগ্ধ করেন। এক দশক পর, লাহোরে একই কৌশল প্রয়োগ করে ইংল্যান্ডের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির প্রত্যাশা ভেঙে আফগানিস্তানকে সেমিফাইনালে পৌঁছে দেন।
উল্লিখিত ম্যাচে বিশেষ পারফরম্যান্স
ম্যাচের প্রভাব ও প্রতিযোগিতার পরিস্থিতি
ওমরজাই-এর পাঁচ উইকেট সংগ্রহ আফগানিস্তানের ৩২৫ রান সুরক্ষায় বিশাল ভূমিকা রাখে। একই গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে, যেখানে ইংল্যান্ড কয়েক রাত আগে ৩৫১ রান রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছিল, এই ইনিংস ছিল মাত্র দুটি ৫-উইকেট ইনিংসের মধ্যে একটি। সাবেক পাকিস্তানি কিংবদন্তি ওয়াসিম আকরাম বলেন,
“ওমরজাই সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে উইকেট সংগ্রহ করেছেন। প্রথম স্পেলে ফুল বোলিং করতে গিয়ে আঘাত পাওয়ার পর তিনি শর্ট বলিংয়ের পরিকল্পনা গ্রহণ করেন এবং ইংরেজ খেলোয়াড়দের দুর্বল দিক থেকে আউট করতে সক্ষম হন।”
জীবনের সংগ্রাম ও ক্রিকেটের প্রতি অনুরাগ
কুনার প্রদেশের নুরগল জেলার হয়ে বেড়ে ওঠা ওমরজাই অস্ত্রবিহীন সংঘর্ষের ছায়ায় জীবন কাটিয়েছেন। কঠিন জীবনযাত্রার মাঝে ক্রিকেট ছিল তাঁর আশার আলো। ২০১৪ সালে, যখন তিনি ও তাঁর পরিবার আফগানিস্তান ও বাংলাদেশের এশিয়া কাপ ম্যাচ দেখছিলেন, তখন আফগানিস্তানের বিজয় উদযাপনে তাঁর বাবাও আনন্দ ভাগ করে নেন। দীর্ঘ দিন ধরে টেনিস বল নিয়ে খেলা করা স্ট্রিট ক্রিকেটের অভিজ্ঞতা তাঁকে ক্রিকেটের পেছনে ঠেলে দেয়।
আন্তর্জাতিক সফলতা ও ভবিষ্যতের দিগন্ত
স্বাধীনতার পর কখনো পেছনে তাকাননি ওমরজাই। গত বছর তাঁর অলরাউন্ড দক্ষতা আফগানিস্তানের চারটি ধারাবাহিক ওডিআই সিরিজ জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এর ফলশ্রুতিতে তিনি ২০২৪ সালের আইসিসি ওডিআই প্লেয়ার অফ দ্য ইয়ার পুরস্কার লাভ করেন।
বহুমুখী প্রতিভা ও পরবর্তী স্তরের লক্ষ্য
প্রথমদিকে ব্যাটসম্যান হিসেবে শুরু করলেও, ধীরে ধীরে ওমরজাই দক্ষ সুইং বোলারে পরিণত হন। মৃত্যুমুখী ওভারে তাঁর বোলিংয়ের পরিসর ব্যাপকভাবে প্রসারিত হয়েছে।
ইতিহাস গঠনের পথে
২৪ বছর বয়সী ওমরজাই শুক্রবার অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে আরও এক অসাধারণ অলরাউন্ড প্রদর্শনী করেন। তাঁর এই পারফরম্যান্স আফগানিস্তানকে আইসিসি ওডিআই ইভেন্টে প্রথম সেমিফাইনালে পৌঁছানোর পথপ্রদর্শক হিসেবে নতুন ইতিহাস গড়ার সম্ভাবনা দেখাচ্ছে।
Leave a Reply