সারাক্ষণ রিপোর্ট
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ শিক্ষার্থী অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা অভিযোগ করেন যে, সরকার স্কুল-কলেজে জুলাই অভ্যুত্থানে নিহত ও আহতদের পরিবারের জন্য যে কোটা সংরক্ষণ করছে, তা মূলত জুলাই অভ্যুত্থানের মৌলিক চেতনার পরিপন্থী।
কোটার ঘোষণা
- সরকার মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে মোট আসনের ৫ শতাংশ কোটা মুক্তিযোদ্ধা পরিবার এবং জুলাই অভ্যুত্থানে নিহতদের পরিবারের সন্তানদের জন্য সংরক্ষণ করেছে।
- শিক্ষামন্ত্রণালয়ের নির্দেশে এই সিদ্ধান্ত ইতিমধ্যে কার্যকর করা হয়েছে।
চেতনার পরিপন্থী বলে অভিযোগ
- বিন ইয়ামিন মোল্লার ভাষ্য অনুযায়ী, জুলাই অভ্যুত্থানের মূল আদর্শ ছিল সাম্য ও অধিকারের প্রতিষ্ঠা।
- এই কোটা ব্যবস্থা তিনি ওই আদর্শের বিরোধী বলে উল্লেখ করেছেন।
কোটার বাতিলের দাবি এবং আর্থিক ক্ষতিপূরণ
- সংবাদ সম্মেলনে কোটা বাতিলের দাবি তোলার পাশাপাশি, নিহতদের পরিবারকে এক কোটি টাকা এবং আহতদের পরিবারকে ৫০ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।
- তাঁর মতে, জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের পূর্ণাঙ্গ পুনর্বাসনের জন্য এই ক্ষতিপূরণ অপরিহার্য।
প্রথম কোটা ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নিয়ে মতামত
- অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা নিয়োগে প্রথম যে “ছাত্র কোটা” পদ্ধতি চালু হয়েছিল, সেটিকে সেসময় “বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধিত্ব” হিসেবে দেখানো হয়।
- পরে দেখা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নামে একাধিক ছাত্র সংগঠনের সম্মিলিত প্ল্যাটফর্ম থাকলেও, অংশগ্রহণকারী অনেক নেতা তাদের নিজ নিজ সংগঠন থেকে বহিষ্কৃত হন।
সমন্বয়ক কোটা ও নতুন সংগঠন প্রসঙ্গ
- সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করা হয়, পরে বিভিন্ন কমিশন বা সংস্কার বোর্ডে “সমন্বয়ক কোটা” পদ্ধতি চালু হয়।
- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠন নিষিদ্ধের ঘোষণা দেওয়া হলেও, যারা নিষিদ্ধ করেছিল, তারাই পরবর্তীতে নতুন ছাত্র সংগঠনের নেতৃত্বে যুক্ত হন বলে অভিযোগ উঠে আসে।
নেতৃত্ব ও অনিয়মের অভিযোগ
- সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়, “সমন্বয়ক কোটা” ব্যবহার করে বড় পদে যাওয়ার সুযোগ তৈরি হয়েছে।
- “মোংলা বন্দরের কর্মীও প্রধান উপদেষ্টা হতে পারেন, এমনকি চাঁদাবাজির অভিযোগও উঠছে”— এমন মন্তব্যও পাওয়া যায়।
সরকার ও কোটা পুনর্বহাল নিয়ে মন্তব্য
- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার শিক্ষার্থী অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক সানাউল্লাহ হক বলেন, “যারা একসময় কোটা পদ্ধতিকে সমাধিস্থ করেছিল, এখন তারাই কোটা পুনর্বহাল করছে।”
- তিনি আরো বলেন, “শেখ হাসিনা কোটা নিয়ে খেলতে গিয়ে ব্যর্থ হয়েছেন। আমরাও চাই না, আবার একই খেলায় আপনি ব্যর্থ হোন।”
সংক্ষেপ
এই সংবাদ সম্মেলনে মূলত সরকারঘোষিত ৫ শতাংশ কোটা নিয়ে আলোচনা হয়, যা জুলাই অভ্যুত্থানের চেতনার পরিপন্থী বলে অভিহিত করা হয়। পাশাপাশি নিহত ও আহতদের পরিবারকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ দেওয়ারও দাবি উঠে আসে। ছাত্ররাজনীতি, কোটা ব্যবস্থা এবং ক্ষমতার বিন্যাস সম্পর্কে নানা আলোচনা ও সমালোচনাও উত্থাপন করেন বাংলাদেশ শিক্ষার্থী অধিকার পরিষদের নেতারা।