সারাক্ষণ রিপোর্ট
নিউজিল্যান্ড ওপেনের ১০৪তম আসরে অস্ট্রেলিয়ান গলফার রায়ান পীক চমকপ্রদ এক সাফল্য অর্জন করেছেন। রোববার কুইন্সটাউনে মিলব্রুক রিসোর্টের কম্পোজিট কোর্সে তিনি চার রাউন্ড মিলিয়ে ২৩-আন্ডার ২৬১ স্কোর করে মাত্র এক স্ট্রোকের ব্যবধানে শিরোপা জিতে নেন। এটি পীক-এর পিজিএ ট্যুর অব অস্ট্রেলেশিয়ায় অভিষেক মৌসুমের প্রথম শিরোপা।
প্রাক্তন মোটরসাইকেল গ্যাং সদস্য থেকে গলফ তারকা
পীক একসময় অস্ট্রেলিয়ায় নিষিদ্ধ ঘোষিত একটি মোটরসাইকেল গ্যাংয়ের সদস্য ছিলেন। তার বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগে পাঁচ বছরের জেল হয়েছিল, যার মেয়াদ শেষ হয় ২০১৯ সালে। জেল থেকে মুক্তি পাওয়ার পর গলফে ফিরে এসে তিনি নজিরবিহীন সাফল্য অর্জন করলেন।
শেষ মুহূর্তে নাটকীয় সাফল্য
পীক শেষ রাউন্ডে পাঁচ আন্ডার-পার ৬৬ খেলেন। ১৭তম হোলে দুর্দান্ত একটি বার্ডি করে তিনি জ্যাক থম্পসন, ইয়ান স্নাইম্যান এবং জাপানের হিগা কাজুকির সঙ্গে থাকা চারজনের যৌথ লিড থেকে এগিয়ে যান। পরে ১৮তম হোলে প্রায় ছয় ফুট দূরত্বের পার-পাট সফলভাবে সম্পন্ন করেন, যা তাকে একচেটিয়া জয় নিশ্চিত করে।
বৃহৎ মঞ্চে টিকিট
জয়লাভের পর পীক বিশাল উল্লাসে ফেটে পড়েন। এই শিরোপা তার জীবনকে বদলে দিয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। নিউজিল্যান্ড ওপেন এই আসরটি এশিয়ান ট্যুরের সঙ্গে মিলিতভাবে অনুষ্ঠিত হওয়ায় মোট পুরস্কারের পরিমাণ ছিল ১.১২ মিলিয়ন ডলার। পাশাপাশি তিনি এ বছরের ব্রিটিশ ওপেনে খেলার সুযোগও পেয়েছেন, যা রয়্যাল পোর্টরাশে অনুষ্ঠিত হবে।
নতুন পথচলা এবং বিশ্বাস
পীক জানান, তার কোচ, পরিবার ও দল সর্বদাই তার ওপর আস্থা রেখেছে। নিজেও বিশ্বাস করতেন যে তিনি ভালো করবেন। আরও বড় পর্যায়ে খেলতে পারার আকাঙ্ক্ষার কথাও তিনি জানান। একসময় তরুণ বয়সে প্রতিশ্রুতিশীল গলফার ছিলেন পীক, তবে জীবন তাকে ভিন্ন পথে নিয়ে গিয়েছিল। জেল থেকে ফিরেই কোচ রিচি স্মিথের পরামর্শে গলফে ফেরেন তিনি।
ভিসা-জটিলতা ও সাময়িক বিলম্ব
অপরাধমূলক রেকর্ডের কারণে পীককে নিউজিল্যান্ডে ঢুকতে কিছু প্রশাসনিক বাধা পেরোতে হয়েছিল। এই প্রক্রিয়ার কারণে টুর্নামেন্টের আগে তিনি পর্যাপ্ত সময় হাতে পাননি। তবু শেষ পর্যন্ত তিনি কোর্সে নিজেকে দুর্দান্তভাবে মেলে ধরেন।
শীর্ষ প্রতিদ্বন্দ্বী এবং চূড়ান্ত ফলাফল
পীক ২৩-আন্ডারে জয়লাভের পর তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী থম্পসন, স্নাইম্যান ও হিগা কাজুকি ২২-আন্ডারে যৌথভাবে দ্বিতীয় হন। গত রাউন্ডের আগে চার শট এগিয়ে থাকা দক্ষিণ কোরিয়ার কোহ গুন-টায়েক শেষ পর্যন্ত ২১-আন্ডার স্কোর করে পঞ্চম স্থান অর্জন করেন।
এই বিজয়ে রায়ান পীকের জীবন পুরোদমে নতুন দিকে মোড় নিয়েছে। প্রতিভা, পরিশ্রম ও দৃঢ় মানসিকতা মিলিয়ে তিনি প্রমাণ করে দিয়েছেন যে ভাগ্য পরিবর্তন করা সম্ভব এবং বড় মঞ্চে সাফল্য পাওয়া যায় যদি নিজেকে সমর্পণ করে পরিশ্রম করা হয়।
Leave a Reply